সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
সমাপনী পরীক্ষা তুলে দিয়ে কোন পদ্ধতিতে পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়া হবে তা নিয়ে ধন্দে পড়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতি-নির্ধারকরা। এ বছরই প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা তুলে দেওয়া হবে কি না- এখনও সেই সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি মন্ত্রণালয়; যদিও এই পরীক্ষা তুলে দিতে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “সমাপনী পরীক্ষার এখনও অনেক দেরি আছে। আমরা চেষ্টা করছি, বন্ধ করতে তো আর সময় লাগবে না।
“আমরা যদি অক্টোবরে বলে দেই পরীক্ষা হবে না, তাহলেই তো হল। এতে যদি বাচ্চাদের মঙ্গল হয়, আমাদের তো অসুবিধা নেই।”
আগে পঞ্চম শ্রেণিতে আলাদা করে বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়া হলেও প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী সমাপনী চালুর পর থেকে এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য থেকেই বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে।
গত কয়েক বছর ধরে নভেম্বর মাসের শেষ দিকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সমাপনী পরীক্ষা নিচ্ছে সরকার।
প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা উঠে গেলে পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের কীভাবে বৃত্তি দেওয়া হবে এমন প্রশ্নে ফিজার বলেন, “পরীক্ষা উঠে গেলে বৃত্তির কী হবে অনেকেই জানতে চায়। আমি বলি- পরীক্ষাই নেই, সেখানে বৃত্তির কী আছে?”
প্রাথমিক সমাপনী উঠে গেলে কীভাবে বৃত্তি দেওয়া যায় সে বিষয়ে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান মন্ত্রী।
তবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব মো. হুমায়ুন খালিদের আশঙ্কা, প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা উঠে গেলে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়া নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হবে।
গণশিক্ষা মন্ত্রীর পাশে বসেই তিনি বলেন, “এবার পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা উঠে গেলে বাচ্চাদের মঙ্গল হবে না, কারণ বৃত্তির বিষয় আছে। পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা উঠে গেলে বৃত্তি দেওয়া নিয়ে নতুন সমস্যা সৃষ্টি হবে।”
এ বছরের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তুতি আছে জানিয়ে সচিব বলেন, “সরকার বন্ধ করে দিলে নেব না। তবে এবার পরীক্ষা নেওয়া না হলে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির বৃত্তি দেওয়া হবে কীভাবে?”
প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীত হওয়ায় পঞ্চম শ্রেণিতে সমাপনী পরীক্ষা না নেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে গত ৩১ মে সাংবাদিকদের জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী।
মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা চালু হওয়ায় তা বিলুপ্তের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তও মন্ত্রিসভা থেকেই নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
জাতীয় শিক্ষানীতির আলোকে প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত উন্নীত করে গত ১৮ মে তা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ন্যস্ত করে সরকার।
মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তে ২০০৯ সালে পঞ্চম শ্রেণিতে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা শুরু হয়। অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজন করা হয় জেএসসি পরীক্ষা। ২০০৯ সালে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা চালুর পরের বছর থেকে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের জন্য নেওয়া হচ্ছে ইবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষা।