বিশেষ প্রতিনিধি ::
সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে দীর্ঘদিন ধরেই ফিটনেসবিহীন, মেয়াদোত্তীর্ণ বাস চলাচল করছে। গাড়িতে চলাচল করতে গিয়ে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। এক ঘণ্টার পথ যাতায়াত করতে যাত্রী সাধারণকে ব্যয় করতে হচ্ছে দ্বিগুণ সময়। এমন অবস্থায় ‘সুনামগঞ্জ যুব সমাজের’ ব্যানারে কিছু তরুণ মাঠে নেমেছেন যাত্রী সেবা উন্নত করার দাবিতে। তাদের সাথে যোগ দিয়েছেন শহরের নানা পেশা-শ্রেণি মানুষ। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও একই দাবিতে রাজপথে আন্দোলন করছেন।
এদিকে সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে ‘বিলাস বহুল’ বাস নামাতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন বেশ কিছু উদ্যোক্তা। তাঁরা সেবার মাধ্যমে সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে যাত্রী চলাচলের ধারণাকে বদলে দিতে চান। এজন্য তাঁরা বাস মালিক সমিতিগুলো ও প্রশাসনের সহায়তা চেয়েছেন।
আব্দুল্লাহ আল নোমান নামের এক উদ্যোক্তা বলেন, সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের ব্রিজগুলো নতুন করে নির্মাণ হয়েছে। সড়কের প্রস্থ বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কিন্তু সড়কে চলাচলকারী বাসগুলো সেই আগের মতই আছে। বাসে যাত্রী সেবার মান খুব খারাপ। এসব বাসে যাত্রীরা বাধ্য হয়ে চরম ভোগান্তি নিয়ে চলাচল করেন। এ রকম দুর্ভোগের অবস্থা আমরা বদলে দিতে চাই। সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে ভাল মানের বাস নামাতে চাই। এসি বাস থাকবে সেই তালিকায়। ব্যবসায়িক মুনাফা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, মানুষ সহজেই উন্নত সেবা পেয়ে কম সময়ে এ সড়কে চলাচল করতে পারবে সেই ব্যবস্থা করতে চাই। এজন্য আমরা প্রশাসন ও মালিক সমিতিগুলোর সহযোগিতা চাই।
ব্যবসায়ী তারেক আহমদ বলেন, মালিক সমিতিগুলো যদি আমাদের বাধা না দেয় তাহলে যেকোন সময় আমরা নতুন ও আধুনিক বাস নামাবো। সিলেট-হবিগঞ্জ, সিলেট-মৌলভীবাজার সড়কে চলাচলকারী বাসের মত আমরাও যাত্রীদের সর্বোচ্চ ভালো সেবা দিতে পারবো।
‘সুনামগঞ্জ যুব সমাজের’ অন্যতম উদ্যোক্তা আবু তালহা বলেন, বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় পুরাতন, লক্কর-ঝক্কর বাসে সাধারণ যাত্রীরা চলাচল করতে বাধ্য হন। বাস মালিকরা উন্নত সেবা দিতে ন্যূনতম আগ্রহী নয়। উল্টো চলাচল করা যাত্রীরা নানা হয়রানির শিকার হন প্রতিদিন। উদ্যোক্তারা আগ্রহী হচ্ছেন, বিষয়টি আমাদের জন্য সুখবর। মালিক সমিতিগুলোকে তাদের সহায়তা করা উচিত।
সুনামগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ আব্দুল মুকিত মুকুল বলেন, ‘সমিতির সদস্য হয়ে যে কেউ উন্নত বাস নামাতে চাইলে আমরা তাকে স্বাগত জানাবো। আমরা চাই এ সড়কে উন্নত বাস চলাচল শুরু হোক। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আমাদের সমিতির সদস্য হতে মাত্র ৫হাজার টাকা লাগে। যাত্রীসেবার মান উন্নত করতে যদি কেউ ভালো বাস নামানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেন তাহলে আমরা তাকে স্বাগত জানাই।’
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে উন্নত বাস নামানোর জন্য যিনি উদ্যোগ নেবেন তাকেই আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো। মালিক সমিতির কেউ যাতে কোন প্রকার বাধা সৃষ্টি করতে না পারে এ ব্যাপারে আমরা উদ্যোক্তার পাশে আছি। এ সড়কে প্রয়োজনে এসি বাস চালু করা হোক। সাধারণ মানুষ এখন আরামদায়ক ভ্রমণ চায়। টাকা বেশি দিয়ে হলেও সাধারণ যাত্রীরা আরাম নিয়ে নিরাপদে চলাচল করতে রাজি আছেন। আর জনগণ যা চায় তাদের সুযোগ-সুবিধা ও অধিকার নিশ্চিত করার জন্যই জন্যই প্রশাসন কাজ করছে। আমরা এ সড়কে উন্নত বাস চলাচলে যারা উদ্যোগ নেবেন তাদের সাথেই আছি।’