রহমত, মাগফিরাত ও নাজাত লাভের মাস মাহে রমাজান। বছর ঘুরে মুসলমানদের দুয়ারে আবারও উপস্থিত হয়েছে পবিত্র রমজান। মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার মধ্য দিয়ে ইবাদত-বন্দেগি করে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণের প্রশান্তি লাভ করবে মুসলমানরা। সারা বছর মুসলিমরা জানা-অজানা যতো পাপ করেছে তা থেকে ক্ষমা পাওয়ার মাস হল পবিত্র এই মাহে রমজান। সিয়াম সাধনার দ্বারা আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে মুসলমানরা নাজাতের পথ খুঁজবেন। হাজার রজনীর মধ্যে শ্রেষ্ঠ রজনী লাইলাতুল কদর রমজান মাসকে করেছে বিশেষভাবে মহিমান্বিত। এ রাতেই রাব্বুল আলামিন তাঁর প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদের (সা.) ওপর সর্বশেষ ঐশী গ্রন্থ পবিত্র কোরআন নাজিল করেছেন। কোরআনের শিক্ষা হল বিশ্বাসী মানুষকে ইহলৌকিক ও পারলৌকিক জীবনে অশেষ কল্যাণ দান করা। এ মাসে আল্লাহর প্রদর্শিত পথে চলার ওয়াদা করে মানুষ, সবরকম গুনাহ মাফ করে দেয়ার জন্য আকুল প্রার্থনা জানায়। এ মাসে আল্লাহ তাঁর বান্দাদের কঠোর ত্যাগ, ধৈর্য, উদারতা ও সততা প্রদর্শনের নির্দেশ দিয়েছেন। পরিতাপের বিষয়, এ মাসেই দেশের একশ্রেণির ব্যবসায়ী সততা আর ন্যায়-নীতি ভুলে অতিমুনাফা লাভের প্রতিযোগিতায় নামে। তারা রমজান মাসকে মুনাফা লাভের সুবর্ণ সুযোগ মনে করে। ফলে নেকী থেকে বঞ্চিত হয়ে গুনাহর দিকে ধাবিত হয়। রমজানে বিশেষ কিছু খাদ্যদ্রব্যের চাহিদা বেড়ে যায়। পাইকারি ব্যবসায়ী ও খুচরা দোকানিরা বাড়তি চাহিদাকে মুনাফা লাভের সুযোগ হিসেবে দেখে। অসাধু ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেও দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে দেয়।
রমজানে দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে বাজার মনিটরিং আরও জোরদার করা দরকার। সর্বসাধারণের কথা বিবেচনা করে সরকারকে রমজানে চাল-ডাল-চিনি-ভোজ্যতেল-ছোলা-বুটসহ প্রধান খাদ্যশস্যের দামের দিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি রাখতে হবে। নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে আনতে সরকার ইতিমধ্যে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, বাজারে এর প্রতিফলন আমরা দেখতে চাই। রমজানে পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে হবে। বর্তমানে লোডশেডিংয়ের মাত্রা অনেক বেড়ে গেছে। এ বার যে তীব্র গরম পড়েছে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকলে জনজীবনের কষ্টের সীমা থাকবে না। তাই সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি। এবং পবিত্র মাহে রমজান সকলের নাজাতের উসিলা হোক এই প্রত্যাশা করি।