1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
সোমবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০২:০০ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

সুনামগঞ্জের যুদ্ধাপরাধীদের সামনে দণ্ডাদেশ : যুদ্ধাপরাধের তদন্ত শুরু

  • আপডেট সময় শনিবার, ৪ জুন, ২০১৬

বিশেষ প্রতিনিধি ::
মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সুনামগঞ্জে সংঘটিত গণহত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগসহ নানা অপরাধে অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে মাঠপর্যায়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। গত ৫দিন ধরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বাংলাদেশের ৬ সদস্যের একটি দল সুনামগঞ্জের তিন উপজেলায় সরেজমিন অবস্থান করে বাদী এবং সাক্ষীসহ প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। সংশ্লিষ্টরা দিরাই, শাল্লা এবং দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন রাজাকার-আলবদর-আল শামছসহ স্বাধীনতাবিরোধীরা েেয ঘৃণ্য অপরাধ সংঘটিত করেছিল সেসবের আনুষ্ঠানিক মাঠপর্যায়ের তদন্ত শুরু করেন। শীঘ্রই সংশ্লিষ্টরা ট্রাইব্যুনালে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিবেন বলে জানা গেছে। এতে জীবিত অনেক যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসিসহ সর্বোচ্চ শাস্তি আসন্ন বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন।
উল্লেখ্য বিভিন্ন সময়ে এসব এলাকার যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেছিলেন। মামলা দায়েরের পর থেকেই অভিযোগকারীদের হুমকি দিয়ে আসছে রাজাকারদের সন্তান-সন্ততিরা।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বাংলাদেশ সূত্রে জানা যায়, ৫দিন আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত কর্মকর্তা মো. নূর হোসেনের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের একটি দল সুনামগঞ্জে আসেন। তদন্ত কর্মকর্তারা দিরাই উপজেলার আলোচিত গণহত্যাস্থল শ্যামারচর, শাল্লা উপজেলার দৌলতপুর, উজানগাঁও গ্রামে সরেজমিন গিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। মামলার বাদী, সাক্ষীসহ ওই সময়কার প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গেও কথা বলেন তারা। তাছাড়া মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক লেখক-গবেষক এবং বিভিন্ন প্রগতিশীল সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গেও কথা বলেন তাঁরা। জানা গেছে, ভুক্তভোগীরা পেরুয়া গণহত্যায় দৌলতপুর গ্রামের শীর্ষ রাজাকার ও সত্তরে পিডিপির পরাজিত প্রার্থী আব্দুল খালেক ও তার বাহিনীর নৃশংসতার বর্ণনা দেন। তারা ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের পক্ষের আইনজীবী শিশির মনিরের বাবা রাজাকার মুকিত মিয়ার লোমহর্ষক ঘটনারও বর্ণনা দেন। ১৯৭১ সনের ৬ ডিসেম্বর আব্দুল খালেক রাজাকারের নেতৃত্বে মুকিত মিয়াসহ স্থানীয় রাজাকার, আল-বদররা পেরুয়া গ্রামে নির্মম গণহত্যা চালায়। তারা ঘরে ঘরে ঢুকে নারীদের ধর্ষণ, সম্পদ লুণ্ঠন, জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করা, হত্যার ঘটনা ঘটায়। শ্যামারচর বাজারে নদী তীরে লাইন ধরিয়ে ২০জন নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করে। পরে পেরুয়া গ্রামে ঢুকে নির্বিচারে হত্যা, খুন, ধর্ষণ, লুণ্ঠন এবং অগ্নিসংযোগ করে। খালেক রাজাকার শ্যামারচর বাজারের তার আত্মীয় আমির উদ্দিনের রাইস মিলে পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্পে পেরুয়া গ্রাম থেকে নারীদের ধরে এনে সম্ভ্রমহানি করতো। একাত্তরের এসব ভয়াবহতার কথা তদন্ত দলকে বলেছেন ভুক্তভোগীরা।
এছাড়াও তদন্ত দল দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার শীর্ষ রাজাকার আব্দুস সাত্তারের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অভিযোগেরও তদন্ত করেন। তারা এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে সাত্তার রাজাকারের কুকীর্তির কথা লিপিবদ্ধ করেন। শীঘ্রই তারা ট্রাইব্যুনালে প্রতিবেদন জমা দিবেন বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, প্রথম দফা তদন্ত শেষে আজ শনিবার তদন্ত দল সুনামগঞ্জ ত্যাগ করবে। তারা হবিগঞ্জে গিয়ে সেখানকার যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার সরেজমিন তদন্ত করবে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত কর্মকর্তা মো. নূর হোসেন বলেন, শনিবার মাঠ পর্যায়ে প্রাথমিক তদন্তকাজ শেষ হয়েছে। আমরা দিরাই, শাল্লা এবং দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায় একাত্তরে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলার সরেজমিন তদন্ত করেছি। এলাকায় এসে বাদী, ভুক্তভোগী এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলেছি। যারা অভিযোগ করেননি তারা অভিযোগ না করলেও কেবল যুদ্ধাপরাধের ঘটনার সাক্ষী দিলেও তদন্ত করে সেটাকে নিয়মিত মামলার রূপান্তর করা যাবে। যারা যুদ্ধাপরাধে জড়িত তারা সর্বোচ্চ শাস্তি পাবে বলে তিনি জানান।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com