স্টাফ রিপোর্টার ::
জগন্নাথপুর উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. মজলুল হক হাইকোর্টে নির্বাচন স্থগিতাদেশে রিট করার পর গতকাল শুক্রবার একদিন আগে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। গতকাল শুক্রবার দুপুরে নিজ বাড়িতে সাংবাদিক সম্মেলন করে তিনি এ ঘোষণা দেন।
উল্লেখ্য, গত ২৮ মে রাণীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। নির্বাচনের দুইদিন আগে বর্তমান চেয়ারম্যান মজলুল হকের আবেদনের প্রেক্ষিতে তিন মাসের জন্য নির্বাচন স্থগিতাদেশ প্রদান করে উচ্চ আদালত। পরবর্তীতে গত ২৯ মে উচ্চ আদালতের এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে আদালত নির্বাচনের পক্ষে রায় দেন। ২ জুন নির্বাচন কমিশন ৪ জুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের নির্দেশনা প্রদান করে নির্দেশনা জারি করে। নির্বাচনের অন্তিম মুহূর্তে মজলুল হকের আবেদনের প্রেক্ষিতে নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন সকল প্রার্থী ও সাধারণ ভোটাররা। তারা এলাকায় তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ করেন।
জানা যায়, বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. মজলুল হক ইউনিয়নের সীমানা সংক্রান্ত বিষয়ে নিয়ে কিছুদিন আগে হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার আলোকে হাইকোর্ট গত ২৬ এপ্রিল রানীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের ২৮ তারিখের নির্বাচন স্থগিত করার নির্দেশনা দেয়। পরে অন্য প্রার্থীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে আদালত গত ২৯ মে নির্বাচনের পক্ষে রায় দেয়। এই রায়ের আলোকে নির্বাচন কমিশন বৃহস্পতিবার ৬ষ্ঠ দফা নির্বাচনের সঙ্গে রাণীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সম্পন্নের নির্দেশনা প্রদান করে। এই আদেশের পর বৃহস্পতিবারেই আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ভোটের সার্বিক সরঞ্জামাদি পাঠিয়ে দেয় এলাকায়। প্রশাসন নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে নির্বাচন স্থগিতের মামলা করেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচন আটকাতে না পারায় নির্বাচনের আগেরদিন সাংবাদিক সম্মেলন করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন উচ্চ আদালতে রিটকারী মজলুল হক।
সাংবাদিক সম্মেলনে মজলুল হক বলেন, সুপ্রিমকোর্ট পূর্ণাঙ্গ আদেশ না মেনেই নির্বাচন কমিশন হঠাৎ আইন ও বিধি লঙ্ঘন করে রানীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষে রায় দিয়েছে। এ কারণে আমি আমার আইনজীবীর পরামর্শে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তিনি আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধেও তাকে হুমকি ধমকি দেওয়ার অভিযোগ আনেন।
রাণীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শহীদুল ইসলাম রানা বলেন, সুপ্রিম কোর্ট এবং নির্বাচন কমিশন মানুষের ভোটাধিকারের পক্ষেই রায় দিয়েছেন। মজলুল হক পদ আঁকড়ে রাখতে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা করে নির্বাচন স্থগিত করেন। পরে সুপ্রিম কোর্টে আমরা আপিল করলে আদালত নির্বাচনের পক্ষেই রায় দিয়েছেন। দুই দিন আগে মজলুল হক নির্বাচন স্থগিত করায় সকল প্রার্থী এবং ভোটাররা হতাশ এবং ক্ষুব্ধ হয়ে তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন। এ কারণে শেষ মুহূর্তের প্রচারণা আমরা চালাতে না পারলেও মানুষের ভোটের অধিকার ফিরে পাওয়ায় খুশি হয়েছি।