ধর্মপাশা প্রতিনিধি ::
ঐতিহাসিক কৃষক আন্দোলনের নেতা কমরেড লাল মোহন রায় (১০৪) আর বেঁচে নেই। শুক্রবার বিকেল ৪টায় ধর্মপাশা উপজেলার মধ্যনগর ইউনিয়নের ইটাউরি নিজ গ্রামে বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। মৃত্যুকালে লাল মোহন রায় স্ত্রী, দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে গেছেন। শুক্রবার রাতেই তাঁর শেষকৃত্য স¤পন্ন হয়।
লাল মোহন রায় খাজনা প্রথা আর রাজা-জমিদারদের শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের কৃষক সমাজকে সংগঠিত করেছিলেন। নেতৃত্ব দিয়েছেন নানকার বিদ্রোহ, টংক আন্দোলন, হুল, উলগুলান ও তেভাগা আন্দোলনে। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযদ্ধের সময় তিনি উত্তর-পূর্ব ভারতের মেঘালয়ের তুরা অঞ্চলের ওয়ারেংকা শিবিরের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বিপ্লবী কমরেড লাল মোহন রায় ১৯১২ সালে ধর্মপাশা উপজেলার মধ্যনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা প্যারী মোহন দাস, মা হেমলতা রায়। এন্ট্রাস পাসের পর মধ্যনগর বিশ্বেশ্বরী এমই স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন তিনি। এ সময় ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন শুরু হয় এবং ছাত্রদের তিনি আন্দোলনের পক্ষে অনুপ্রাণিত করেন। স্বদেশি আন্দোলন, অসহযোগ আন্দোলন, বিদেশি পণ্যবর্জন, দেশি পণ্য ব্যবহার ইত্যাদি বিষয়ে ছাত্রদের সচেতন করার দায়িত্ব পালন করেন তিনি। বিশিষ্ট সাহিত্যিক অধ্যাপক শাহেদ আলীও তার ছাত্র ছিলেন। কিছু দিন শিক্ষকতা করার পর তার দল কমিউনিস্ট পার্টির নির্দেশে চাকরি ছেড়ে দলের সার্বক্ষণিক কর্মী হন তিনি। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তিনি সংগঠকের দায়িত্ব পালন করেন।
তাঁর মৃত্যুতে ধর্মপাশা উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি চয়নকান্তি দাস, সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক এনি, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজিদুল হক সাজু, আমরা ধর্মপাশাবাসীর আহ্বায়ক এনামুল হকসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে গভীর শোক ও সমবেদনা জানানো হয়েছে।