সুনামগঞ্জের দুঃস্থ মুক্তিযোদ্ধার পাঁচ কন্যাকে সেলাই মেশিন প্রদান করেছেন খায়রুল হুদা চপল। তিনি সুনামগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ও জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক।
দেশের মানুষকে যিনি স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন, তাঁর দুঃস্থ কন্যাকে একটি সেলাই মেশিন প্রদান নিতান্ত তুচ্ছ একটি বিষয়। কিন্তু এই তুচ্ছ বিষয়টি কোনও অর্থেই স্বাধীনতা আনার মহৎকর্মের প্রতিদান হতে পারে না কীছুতেই, এটা কাউকে যুক্তি দিয়ে বুঝাতে হয় না। তাহলে এরকম সেলাই মেশিন প্রদানের কী কোনও তাৎপর্য থাকতে পারে? অবশ্যই আছে। আর সেটা হলো, চপল জানিয়ে দিতে চান মুক্তিযোদ্ধাদেরকে আমরা ভুলে যাইনি, তাঁদের কাছে আমরা জাতিগতভাবে ঋণী এবং মুক্তিযোদ্ধার উত্তরসূরির প্রতি আমাদের জাতীয় কর্তব্য আছে, যে জাতীয় কর্তব্য পালন স্বাধীনতা অর্জনের দীর্ঘ সাড়ে চার দশক অতিবাহিত হওয়ার পরও অপূর্ণ রয়ে গেছে।
আমরা জানি, এই অপূর্ণ থাকার কারণ কী? জাতির জনক, রাষ্ট্রের স্থপতিকে একাত্তরের পরাজিত শত্রুরা সপরিবারে হত্যা করেছিল। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসন হওয়া ছিল স্বপ্নাতীত। তাঁরা ক্রমে নিঃস্ব হয়েছেন। স্বপ্নতিষ্ঠ রাষ্ট্রে হয়েছেন সুবিধাবঞ্চিত। সুনামগঞ্জ শহরেই কোনও কোনও মুক্তিযোদ্ধাকে রিকশা চালাতে দেখা যায়। বিপরীতে যদিও এই দেশসেবার নামে রাজাকাররা বাড়ি-গাড়ি, মন্ত্রী-রাষ্ট্রপতির পদ লাভ করেছে। তারপরও আমরা রাজাকার যুদ্ধাপরাধীর বিচার কাজ আরম্ভ করতে পেরেছি, কিন্তু অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদেরকে পুনর্বাসন করতে পারিনি। চপল সেটা অতি ক্ষুদ্রাকারে বলা যায় প্রতীকী অর্থে শুরু করতে চান। তাঁকে অভিনন্দন।
মনে রাখতে হবে, মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধার উত্তরসূরিদের সামাজিকভাবে অপ্রতিষ্ঠিত রেখে, দেশকে রাজাকারের কবলমুক্ত রাখার স্বপ্ন একটি আকাশকুসুম কল্পনা বৈ অন্য কীছু নয়।