সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
বায়োমেট্রিক (আঙ্গুলের ছাপ) পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনে সময় আর বাড়ছে না, ৩১ মে-ই শেষ হচ্ছে। শনিবার পর্যন্ত ১০ কোটি ৯ লাখ সিম পুনঃনিবন্ধন হয়েছে। সচিবালয়ে রোববার বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম-রিম নিবন্ধন কার্যক্রমের সার্বিক বিষয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম এ সব তথ্য জানান।
বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে শনিবার পর্যন্ত ১০ কোটি ৯ লাখ সিম নিবন্ধিত হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের টার্গেট ছিল নিবন্ধিত সিমের সংখ্যা ১০ কোটি হলেই আমরা সন্তুষ্ট থাকব। আশা করি নিবন্ধিত সিমের সংখ্যা আরও বাড়বে।’
গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর দেশে আঙ্গুলের ছাপ পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন শুরু হয়। তখন নিবন্ধনের শেষ সময় নির্ধারণ করা হয় ৩০ এপ্রিল। পরে এ সময় ৩১ মে পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়।
বর্তমানে দেশে রাষ্ট্রায়ত্ত একটিসহ মোট ছয়টি মোবাইল ফোন অপারেটর রয়েছে। বিটিআরসির এপ্রিল মাসের তথ্য অনুযায়ী, দেশে মোট মোবাইল ফোন গ্রাহক ১৩ কোটি ১৯ লাখ ৪৯ হাজার।
তারানা হালিম বলেন, ‘শেষ মুহূর্তে জনগণের কষ্টের জন্য সিম পুনঃনিবন্ধনে বিগত দিনে আমরা সময় কিছুটা বৃদ্ধি করেছিলাম। আগের ঘোষণা অনুযায়ী বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনের শেষ দিন। আমরা আশা করছি যারা বাদ আছেন তারা এ সময়ের মধ্যে তারা রি-ভেরিফিকেশন (পুনঃনিবন্ধন) করে নেবেন। এ সময়ের মধ্যে সিম নিবন্ধন করবে না তা বন্ধ হয়ে যাবে।’
সিম নিবন্ধনে দেশের জনগণ, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি), জাতীয় পরিচয়পত্র প্রকল্পসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে তারানা হালিম বলেন, ‘অনেক সিম আছে যা দিয়ে চাঁদাবাজি করা হয়, অবৈধ ভিওআইপি করা হয়। এগুলো কিন্তু পুনঃনিবন্ধন হবে না।’
‘জনগণ যেমন সিম-রিম রি-ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে তার দায়িত্ব পালনে করেছে, সেভাবে আমাদেরও দায়বদ্ধতা আছে। আমাদের দায়বদ্ধতার একটি অংশ হচ্ছে, জনগণকে জানানো তার জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) বিপরীতে কয়টি সিম পুনঃনিবন্ধন হয়েছে। এটি আমরা জুনের শেষে বা জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে ভেরিফাইড সিমে এসএমএসের মাধ্যমে প্রত্যেক গ্রাহককে জানিয়ে দেব’ বলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘এটি করার কারণ হচ্ছে কেউ যদি মনে করেন অন্য কেউ তার এনআইডি ব্যবহার করে সিম পুনঃনিবন্ধন করেছে, তবে সে বিটিআরসির কাছে অভিযোগ জানাতে পারবেন। অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা অতিরিক্ত সিমগুলো বন্ধ করে দেব।’
অনিবন্ধিত সিম বন্ধ হওয়ার পর ১৮ মাস পর্যন্ত সিমের মালিক এটি কিনে নিতে পারবেন। ১৮ মাসের মধ্যে তিনি না কিনলে মোবাইল ফোন অপারেটররা অন্য কারো কাছে বিক্রি করে দেবে। তবে যে সিমগুলো প্রবাসী ও বিদেশি নাগরিকরা ব্যবহার করছেন সেগুলো ১৮ মাস পর্যন্ত পুনঃনিবন্ধনের সুযোগ থাকছে বলেও জানান তারানা।
সিম পুনঃনিবন্ধন উদ্যোগের জন্য অনেক সিম বন্ধ হয়ে যাবে- এতে সরকারের রাজস্ব কমে যাবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের উদ্বেগের বিষয়ে জানতে চাইলে তারানা হালিম বলেন, ‘প্রথম যে কোন ভাল কাজের ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবে ধাক্কা আসে। আমরা জানতাম সিম সংখ্যা কমে যাবে, এতে রাজস্বও কমবে। আমরা অন্যান্য বিষয়গুলোও কাজ করছি। আমাদের ডাটার চাহিদা বাড়ছে। আমাদের সামনে এমএনপি (মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি) আসছে, ফোরজি আসছে, সেখান থেকে আমরা রাজস্ব পাব। এখন আমাদের যে ক্ষতিটুকু হবে তা অন্য বিষয়গুলো দিয়ে পুষিয়ে নিতে পারব।’
অনিবন্ধিত সিমগুলো ১ জুন থেকে বন্ধ করার ক্ষেত্রে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো প্রস্তুত কি-না, এ বিষয়ে সাংবাদিকরা জানাতে চাইলে সভায় উপস্থিত মোবাইল ফোন অপারেটরদের একজন প্রতিনিধি বলেন, ‘স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনিবন্ধিত সিমগুলো চিহ্নিত করে বন্ধ করে দেওয়া হবে। আমরা এ বিষয়ে নিশ্চয়তা দিতে পারি।’