স্টাফ রিপোর্টার ::
‘স্কুলে বিদ্যা অর্জন, মঞ্চে গান, মাঠে খেলাধূলা, জমিতে ধান’। সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলামের এই স্লোগানটি জেলাজুড়ে সমাদৃত। সুনামগঞ্জের সার্বিক উন্নয়নে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। বিশেষ করে শিক্ষাক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া সুনামগঞ্জকে এগিয়ে নিতে তাঁর নিরলস প্রচেষ্টা সর্বমহলে ইতোমধ্যে প্রশংসিত হয়েছে। জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম প্রশাসনিক কাজে যেখানেই যান, সেখানকার বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন তিনি। বিভিন্ন বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে নিজেই শিক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। গতকাল বৃহস্পতিবার জামালগঞ্জ উপজেলার ভীমখালি উচ্চ বিদ্যালয়েও তাঁকে দেখা গেল শিক্ষকের ভূমিকায়। তিনি ওই বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজি ক্লাস নেন। শিক্ষার্থীরাও ভিন্ন এক অনুভূতি নিয়ে ক্লাস করেছেন। জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে পাঠগ্রহণ করতে পেরে শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে মুখে।
শিক্ষার্থীদের অনেকেই বলেন, আমরা ভেবেছিলাম অন্যান্য অফিসারের মতো জেলা প্রশাসক শুধু আমাদের ক্লাস পরিদর্শন করেই চলে যাবেন। কিন্তু ইংরেজি বিষয়ে তিনি আমাদের পাঠদান করে চমকে দিয়েছেন। তাঁর প্রাণবন্ত উপস্থাপনা আমাদের অনেক ভালো লেগেছে। আমাদের মনে হয়েছিল জেলা প্রশাসক নয়, আমরা একজন আদর্শ শিক্ষকের কাছ থেকে পাঠ নিচ্ছি। তাঁর পাঠদানের আঙ্গিক ভিন্ন। তিনি আমাদের পাঠদানের পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষা দিয়েছেন। দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করার কথা বলেছেন। প্রকৃত মানুষ হওয়ার উপদেশ দিয়েছেন। আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন। তাঁর প্রেরণামূলক বক্তব্য আমাদের অনেক কাজে লাগবে।
জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের বড় স্বপ্ন নিয়ে লেখাপড়া করতে হবে। শিক্ষায় নারীরা অনেক দূর এগিয়েছে। এবার বিসিএস পরীক্ষায় সর্বোচ্চ দশ জনের মধ্যে নারী ৬ জন। নারীদেরকে শিক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে। পাঠগ্রহণকালে মোবাইল, ফেসবুক ব্যবহার করা যাবে না। স্কুলে নিয়মিত আসতে হবে, ভাল করে পড়াশোনা কতে হবে। বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখতে হবে।
পাঠদানকালে জেলা প্রশাসক শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার খোঁজ-খবর নেন এবং মনোযোগ দিয়ে পড়ালেখা করার পরামর্শ দেন। জেলা প্রশাসকের এমন উদ্যোগকে প্রশংসা করেছেন স্কুলের শিক্ষক ও অভিভাবকগণ।
অনেক অভিভাবক জানান, জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম যেভাবে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে মিশেছেন, যেভাবে পাঠদান করেছেন, তা অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তাদের মাঝে লক্ষ্য করা যায় না। তাঁর এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে পাঠ নিয়ে শিক্ষার্থীরা উৎসাহ ও প্রেরণা পেয়েছে।