1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
শনিবার, ০৩ জুন ২০২৩, ০৮:৩৯ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

জগন্নাথপুরে ইউপি নির্বাচনে ‘চমক’ দেখাতে পারেন বিদ্রোহীরা

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৬ মে, ২০১৬

মো. শাহজাহান মিয়া ::
জগন্নাথপুর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউপি নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। ‘নদী ভাঙনের কারণে ভৌগোলিক অবস্থান পরিবর্তন হচ্ছে’ বলে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মজলুল হক। তাঁর এ রিট আমলে নিয়ে রাণীগঞ্জ ইউনিয়ন নির্বাচনে তিন মাসের জন্য স্থগিতাদেশ জারি করেন হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার বিকেলে আদালতের নির্বাচন স্থগিতাদেশের কপি সুনামগঞ্জ জেলা নির্বাচনী অফিসে এসে পৌঁছে। ফলে আগামী ২৮ মে রাণীগঞ্জ ইউপি বাদে বাকি ৬টি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার শেষমুহূর্তের প্রচারণায় ৬ ইউনিয়নে প্রার্থীরা ব্যস্ত সময় পার করেছেন। নির্বাচনী এলাকার সাধারণ লোকজন ও ভোটারদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, আসন্ন ইউপি নির্বাচনে জমজমাট লড়াইয়ের অপেক্ষায় রয়েছেন সবাই। চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রার্থীর চেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থীকে অনেকে এগিয়ে রাখছেন। অনেকেই জানিয়েছেন, দলীয় প্রার্থী থেকে বিদ্রোহী প্রার্থীরা জনপ্রিয়তায় এগিয়ে রয়েছেন।
এর কারণ হিসেবে জানাগেছে, বড় দুইটি রাজনৈতিক দলের একাধিক প্রার্থীর নামের তালিকা কেন্দ্রীয় হাইকমান্ডে পাঠানো হয়। এ সময় যে প্রার্থীদের দলীয় প্রতীক দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে অনেকে এলাকায় নানাভাবে বিতর্কিত ও দুর্বল প্রার্থী। যারা দলীয় প্রতীক পেলে অনায়াসে নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা ছিল তাদের মধ্যে অনেকেই বঞ্চিত হয়েছেন। তবে দলীয় প্রতীক না পেলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অনেক বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের ব্যাপক জনপ্রিয়তায় বেকায়দায় পড়েছেন দলীয় মনোনীত প্রার্থীরা। এক্ষেত্রে বিদ্রোহী প্রার্থীদের কাছে ধরাশায়ী হতে পারেন দলীয় প্রার্থীরা। তৃণমূলের কাক্সিক্ষত প্রার্থীরা দলীয় প্রতীক প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণে দলীয় নেতা-কর্মীসহ তাদের কর্মী-সর্মথকদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়। এর প্রভাব নির্বাচনী মাঠেও দেখা গেছে। এসব মিলিয়ে বিদ্রোহীরা এবার ‘চমক’ দেখাতে পারেন বলে অভিজ্ঞজনরা মন্তব্য করেছেন।
এবারের জগন্নাথপুর ইউপি নির্বাচনে ৬ ইউনিয়নের মোট ৩২ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে বড় দু’দল আ.লীগ ও বিএনপি’র বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন।
উপজেলার ১নং কলকলিয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী দ্বীপক কান্তি দে দিপাল, আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাশিম, বিএনপি’র একক প্রার্থী রফিক মিয়া, জাপা’র গয়াছ মিয়া ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাজিদুর রহমান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল হাসিম জনপ্রিয়তায় এগিয়ে রয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। তাঁর তুলনায় আ.লীগের প্রার্থী দ্বীপক কান্তি দে দিপাল অনেকটা পিছিয়ে রয়েছেন। এর কারণ হিসেবে স্থানীয়রা জানান, বিগত দিনে চেয়ারম্যান হিসেবে আব্দুল হাসিম স্বচ্ছতা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর বিশাল ভোট ব্যাংকও রয়েছে। এক্ষেত্রে নয়ামুখ দিপাল অনেকটাই দুর্বল প্রার্থী। তবে দিপাল নির্বাচনে জয়ী হতে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ইউনিয়নে বিএনপি’র প্রার্থী রফিক মিয়াও মূল লড়াইয়ে থাকবেন বলে স্থানীয় অভিজ্ঞজনরা জানিয়েছেন। তিনি বর্তমান চেয়ারম্যান সাজ্জাদুর রহমানের চাচাতো ভাই ও বিএনপি’র একক প্রার্থী। স্থানীয়রা জানান, এ ইউনিয়নে ব্যক্তি ইমেজে আব্দুল হাসিম, ব্যক্তি ও দলীয় ইমেজে ভোট পাবেন রফিক মিয়া। আর শুধু দলীয় প্রতীকের জোরে ভোট পাবেন দিপাল।
২নং পাটলি ইউনিয়নে আ.লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান আংগুর মিয়া, আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান সিরাজুল হক, জাপা’র দবির মিয়া, বিএনপি’র রফিকুর রহমান রফু ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আশিক মিয়া শিকদার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ব্যক্তি ও দলীয় ইমেজে আংগুর মিয়া এগিয়ে রয়েছেন। তবে আংগুর মিয়া ও সিরাজুল হকের মধ্যে মূল লড়াই হবে স্থানীয়রা জানান।
৫নং চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়ন নির্বাচনে আ.লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আরশ মিয়া, আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হারুনুর রশীদ, বিএনপি’র আব্দুর রব ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ফারুক মিয়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ব্যক্তি ইমেজে আরশ মিয়া এগিয়ে রয়েছেন। তবে হারুনুর রশীদ স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও এলাকায় আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে পরিচিত। হারুনুর রশীদ চিলাউড়া গ্রামবাসীর মনোনীত প্রার্থী হওয়ায় অনেকটা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন। এ ইউনিয়নে আরশ মিয়া ও হারুনুর রশীদের মধ্যে দ্বিমুখী লড়াই হবে বলে ধারণা করছেন সাধারণ ভোটাররা।
৭নং সৈয়দপুর-শাহারপাড়া ইউনিয়নে আ.লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল হাসান, বিদ্রোহী প্রার্থী তৈয়ব মিয়া কামালী, বিএনপি’র সৈয়দ মোছাব্বির আহমদ, জাপা’র আবুল কালাম কামালী, স্বতন্ত্র প্রার্থী বদরুল আলম খান ও সৈয়দ তোফায়েল আহমদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ইউনিয়নে নৌকার মাঝি আবুল হাসান সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন। তিনি ব্যক্তি ও দলীয় ইমেজে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন। এছাড়া বিদ্রোহী প্রার্থী তৈয়ব মিয়া কামালী বিএনপি’র মোছাব্বির আহমদও অনেকটা এগিয়ে রয়েছেন। এ ইউনিয়নে লড়াই হবে ত্রিমুখী। তবে নৌকার বিজয় হওয়ার সম্ভবনা বেশি রয়েছে।
৮নং আশারকান্দি ইউনিয়নে আ.লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহ্ আবু ইমানী, বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আইয়ূব খাঁন ও আব্দুল আহাদ মদরিছ, বিএনপি’র ফখরুল ইসলাম খাঁন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরা মিয়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে জনপ্রিয়তায় ও ব্যক্তি ইমেজে আইয়ূব খাঁন এগিয়ে রয়েছেন। নানা বিতর্কের মধ্যে রয়েছেন নৌকার মাঝি শাহ আবু ঈমানী। এরপরও এ ইউনিয়নে লড়াই হবে ত্রিমুখী। আইয়ূব খাঁন, শাহ-আবু ঈমানী, আব্দুল আহাদ মদরিছের মধ্যে মূল লড়াই হতে পারে বলে জানিয়েছেন ভোটাররা। তবে বিদ্রোহী প্রার্থী আইয়ূব খাঁন বিজয় হওয়ার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে।
৯ নং পাইলগাঁও ইউনিয়নে আ.লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আপ্তাব উদ্দিন, বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলী আফজল, বিএনপি’র জালাল উদ্দিন, বিদ্রোহীপ্রার্থী মাওলানা দবিরুল ইসলাম, শামীম হোসাইন ও আবুল কাশেম, স্বতন্ত্র প্রার্থী হাজী মখলুছ মিয়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে আপ্তাব উদ্দিন এবং মঞ্জুর আলী আফজল এগিয়ে রয়েছেন। এ ইউনিয়ন লড়াই হবে দ্বিমুখী। এক্ষেত্রে বিদ্রোহী প্রার্থী চমক দেখাতে পারেন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com