স্টাফ রিপোর্টার ::
উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উদ্যোগে অটিজম সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে সদর উপজেলা প্রশাসন মিলনায়তনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কর্মশালাটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন।
‘অটিজম ¯œায়ুবিকাশজনিত সমস্যাভুক্ত যুবদের প্রতি দায়িত্ববোধ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ কর্মশালা’ নামে এ কর্মসূচির প্রারম্ভিক মুহূর্তের আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. মামুন খন্দকার।
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মোহাম্মদ পেয়ার আহমেদের পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বদরুল কাদির শিহাব, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নিগার সুলতানা কেয়া, দৈনিক সুনামকণ্ঠ সম্পাদক বিজন সেন রায়, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. হারুনুর রশীদ খান, ডা. গৌতম রায়।
কর্মশালায় বক্তারা বলেন, ‘অটিজম কোন রোগ নয়, এটি শিশুর শারীরিক ও মস্তিষ্ক বিকাশের একটি সমস্যা। এ সমস্যাগ্রস্ত শিশুকে বিশেষ ধরনের শিক্ষার মাধ্যমে গড়ে তোলতে হবে। পাশাপাশি অটিজম সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে হবে। অটিজম শিশুদেরকে বিশেষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্বাভাবিক মানুষের মতো চলাফেলায় ফিরিয়ে আনতে হবে। এক্ষেত্রে যুব সমাজের ভূমিকা পালন করতে হবে।
বক্তারা আরও বলেন, অটিজম বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর আগে আমাদেরকে মানুষের মধ্যে যে ভুল ধারণাগুলো রয়েছে সেগুলো বদলাতে হবে। ভুল ধারণার উদাহরণ টেনে বক্তারা বলেন, আমাদের অনেক মায়েরাই তার বাচ্চা তিন বছরে কথা বলতে না পারলে শঙ্কিত বোধ করেন। এটাই স্বাভাবিক। তবে এ সময় অনেকে বলে থাকেন, ও কিছু না, আমার চাচাতো বোনের মেয়েও তো পাঁচ বছর বয়সে কথা বলতে শিখেছে। এটাই ভুল। এ ভুল ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আধুনিক গবেষণায় দেখা গেছে শিশুরা ১৮ মাস থেকেই কথা বলতে শুরু করে। শিশুরা সাধারণত ৭ মাস থেকে বুঝতে শেখে, ১৮ মাস থেকে তাদের ব্রেন বিভিন্ন বিষয়ে ফোকাস করে কাজ করতে শুরু করে। এ জন্য কানে শোনা বা কথা বলার ক্ষেত্রে দেরি হলে যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। এ জন্য কোনো ওষুধ নেই। এ ধরনের শিশুদের পিতা-মাতার কাউন্সিলিং শিশুর জন্য থেরাপি জরুরি। এ জন্য মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে হবে। ভুল ধারণা বদলাতে যুবসমাজকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। প্রতিবন্ধিতা দূরীকরণে যথাসম্ভব কম বয়স থেকেই তার যতœ নেওয়া প্রয়োজন। আগে মনে করা হতো শিশু যেমন ব্রেন নিয়ে জন্মেছে তেমনই থাকে। আধুনিক গবেষণায় দেখা গেছে, একটি শিশুর ৭ বছর পর্যন্ত মস্তিষ্কের বৃদ্ধি হয়। মস্তিষ্কের স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে কোনো সমস্যা হলে প্রতিবন্ধিতা সৃষ্টি হয়। সময়মতো প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পেলে প্রতিবন্ধিতা অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। এ বিষয়ে বাবা-মাকে সচেতন থাকতে হবে। প্রতিবন্ধী শিশুদেরকে সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করে মানবস¤পদে পরিণত করতে হবে।
কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন আরডিএসএস-এর নির্বাহী পরিচালক মো. মিজানুল হক সরকার। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলার বিভিন্ন এলাকার যুব সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ।