মো. আমিনুল ইসলাম ::
সুনামগঞ্জ শহরের আবাসিক হোটেলগুলোতে সিসি (ক্লোজ সার্কিট) ক্যামেরা স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ। হোটেলে আগন্তুক ব্যক্তিদের ছবি, ভোটার আইডি কার্ড নম্বর ও তাদের পূর্ণাঙ্গ পরিচয় রেজিস্ট্রারে সংরক্ষণের ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে সদর থানাধীন এলাকার আবাসিক হোটেলগুলোতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হোটেল মালিকদেরকে এ নির্দেশ দিয়েছে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানা।
সম্প্রতি শহরের পুরাতন বাসস্টেশন এলাকার আবাসিক হোটেলে খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তার স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, নির্দেশনায় প্রত্যেক আবাসিক হোটেলে কক্ষ ভাড়া নিতে আসা লোকদের আলাদা আলাদা ছবি তোলে রাখার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি যে কক্ষ ভাড়া দেয়া হচ্ছে সে কক্ষ নম্বর, ওই কক্ষ ভাড়া নেয়া বর্ডারের ছবির নম্বর, ভোটার আইডি কার্ডের নম্বর, বর্ডারের ব্যক্তিগত পেশা ও তার সার্বিক পরিচিতি, মুঠোফোন নম্বর, কক্ষ ভাড়া নেয়ার ও শহরে আগমনের উদ্দেশ্যসহ যাবতীয় সকল তথ্য হোটেল রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে হোটেলে আগন্তুকদের গতিবিধির উপর নজর রাখতে ও প্রত্যেকদিন হোটেলে আগতদের নাম পরিচয় সংবলিত রেজিস্ট্রার বহি সদর মডেল থানাকে দেখানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সন্দেহভাজনদের কক্ষ ভাড়া দেয়ার পূর্বে তাদের ব্যাপারে প্রয়োজন অনুযায়ী আরো তথ্য সংগ্রহ করার কথা বলা হয়েছে। এ নির্দেশনার পাশাপাশি রাতের বেলা শহরের আবাসিক হোটেলগুলোর উপর নজরদারি বাড়িয়েছে পুলিশ। কোন কোন ক্ষেত্রে এসব হোটেলে অভিযানও পরিচালিত হচ্ছে বলে জানা গেছে। খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে কক্ষ ভাড়া নেয়া আগন্তুকদের সম্পর্কে।
শহরে আবাসিক হোটেলগুলোর কোন নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান না থাকলেও গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে হোটেল নুরানী, হোটেল প্যালেস, হোটেল হক, হোটেল মিজান, হোটেল সারপিনিয়া, হোটেল রেজিয়া, হোটেল জালালাবাদ, হোটেল আল হেলাল ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল হাতেম, হোটেল গুলবাগ, হোটেল ওমর, হোটেল আয়েশা আজাদ। এছাড়াও রয়েছে কবিকুঞ্জ গেস্ট হাউজ, লতিফা গেস্ট হাউজ, স্বপ্ন ছায়া গেস্ট হাউজ, নেহা গেস্ট হাউজ, হাওর বিলাস গেস্ট হাউজ ও সুরমা ভ্যালিসহ বেশ কয়েকটি রেস্টহাউজ। এসব হোটেল রেস্টহাউজে আগতদের পরিচয় ও তাদের ছবি নিয়ে কক্ষ ভাড়া দেয়ার জন্য নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সদর মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হারুনুর রশীদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা সদর থানাধীন এলাকার সকল আবাসিক হোটেলগুলোতে সিসি ক্যামেরা লাগানোর নির্দেশ দিয়েছি। পাশাপাশি হোটেল রেস্টহাউজে আগত বর্ডারদের প্রত্যেকের ছবি তোলে রাখার নির্দেশনা দিয়েছি। এখন থেকে কোন বর্ডারের ছবি না তোলে ও তাদের পূর্ণাঙ্গ পরিচয় এবং ভাড়া নেয়ার উদ্দেশ্য সম্পর্কে অবগত না হয়ে কাউকে কক্ষ ভাড়া না দিতে বলা হয়েছে। নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনা করে সিসি ক্যামেরায় আগতদের গতিবিধি নজরে রাখা জরুরি। আমরা নিয়মিত হোটেলে আগতদের ব্যাপারে লিপিবদ্ধ রেজিস্ট্রার বহি থানায় দেখিয়ে নিতে বলেছি। হোটেল রেস্টহাউজগুলোর উপর পুলিশের নজরদারি আরো বাড়ানো হয়েছে। কোন কোন ক্ষেত্রে আমরা বিভিন্ন হোটেলে রাতের বেলা অভিযান পরিচালনা করছি।’
উল্লেখ্য, গত ১৩ মে শুক্রবার শহরের পুরাতন বাসস্টেশন এলাকার হোটেল আল হেলাল ইন্টারন্যাশনাল থেকে চুমকি আক্তার নামের এক তরুণীর লাশ উদ্ধারের ঘটনার পর আবাসিক হোটেলগুলোর উপর নজরদারি আরো বাড়িয়েছে পুলিশ।
এর ধারাবাহিকতায় এসব হোটেলে সিসি ক্যামেরা লাগানোর নির্দেশনা দেয় পুলিশ।