1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৪৭ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

‘ফসলরক্ষায় আসন্ন বাজেটে নদী-খাল খননে বরাদ্দ চাই’ বিষয়ক মতবিনিময় : বোরো ফসলহানির ঘটনায় সংসদীয় কমিটি গঠনের দাবি

  • আপডেট সময় বুধবার, ১৮ মে, ২০১৬

বিশেষ প্রতিনিধি ::
চলতি বোরো মওসুমে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও পিআইসি নির্মিত হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ ভেঙে জেলার একমাত্র বোরো ফসলহানির ঘটনায় সংসদীয় কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন সুধীজন। মঙ্গলবার সকালে সুনামগঞ্জের সামাজিক সংগঠন সুজন, রানার এইড, হাউসসহ ৫টি সংগঠনের উদ্যোগে জেলা শিল্পকলা একাডেমির পুরাতন হলরুমে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় এ দাবি জানান সুধীজন। গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলন অনুষ্ঠানে সহায়তা করে। মতবিনিময় সভায় সুধীজন আগামী বাজেটে হাওরের ফসলরক্ষায় নদ-নদী খননে বরাদ্দ রাখার দাবি জানান। পাশাপাশি বক্তারা আগামীতে ফসলরক্ষা বাঁধে সাংসদ ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কোটা বাতিলের দাবিও জানান।
সুজনের সাবেক সভাপতি শিক্ষাবিদ ধূর্জটি কুমার বসু’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ-মৌলভীবাজার সংরক্ষিত আসনের সাংসদ অ্যাডভোকেট শামছুন নাহার বেগম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন দোয়ারাবাজার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ইদ্রিস আলী বীরপ্রতীক।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রফেসর পরিমল কান্তি দে, কমরেড শীলা রায়, দৈনিক সুনামকণ্ঠের সম্পাদক বিজন সেন রায়, মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান, শিক্ষাবিদ চিত্তরঞ্জন তালুকদার, সুজনের নির্বাহী পরিচালক নির্মল ভট্টাচার্য্য, প্রকৌশলী ফরিদ পাঠান, ডাচ বাংলা মোবাইল ব্যাংক ম্যানেজার আশরাফ হোসেন লিটন, স্বপ্নডানার নির্বাহী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম, হাউসের নির্বাহী পরিচালক সালেহীন চৌধুরী শুভ, রানার এইডের নির্বাহী পরিচালক শামস শামীম, সুনামগঞ্জ গ্রামীণ উন্নয়ন সংসদের নির্বাহী পরিচালক রমজান আলী, সুরমা’র নির্বাহী পরিচালক মাহতাব উদ্দিন তালুকদার, কৃষক নেতা আব্দুল আউয়াল, এনামুল হক প্রমুখ।
সুধীজনের বক্তব্যে মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান বলেন, এবার আমার গোলাশূন্য। একমুঠো ধানও তোলতে পারিনি। কৃষকের একমাত্র বোরো ফসলহানি নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড, কৃষি বিভাগ লুকোচুরি খেলছে। হাওরের কৃষকের বোরোফসল ডুবির ঘটনায় তিনি সংসদীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে ফসলহারা কৃষকদের সহযোগিতার দাবি জানান। তিনি বলেন, ৩ লক্ষ মানুষের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় হতে পারলে হাওরের ২ কোটি মানুষের জন্য হাওর মন্ত্রণালয় গঠন করতে হবে।
কৃষক নেতা আব্দুল আউয়াল বলেন, প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা খরচ করে ভুল পরিকল্পনা নিয়ে হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মিত হয়। তিনি বলেন, প্রকৃতি দিনদিন বদলাচ্ছে। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিকল্পনার বদল হচ্ছে না। তারা ভুল পরিকল্পনায় ফসলরক্ষা বাঁধ দেওয়ায় প্রতি বছরই বাঁধ ভেঙে ফসলডুবির ঘটনা ঘটছে। এতে সর্বস্বান্ত হচ্ছে হাওরের লাখ লাখ কৃষক। তিনি হাওরের ফসলরক্ষার জন্য সীমান্ত, সমতল এবং নিচু এলাকায় পৃথক প্রকল্প নেওয়ার দাবি জানান।
শিক্ষাবিদ ধূর্জটি কুমার বসু বলেন, ১৯৫৪ সনে আমরা হাওরাঞ্চলের নদ-নদী খননের দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু ৬২ বছরেও আমাদের সেই দাবি পূরণ হয়নি। নদ-নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় পাহাড়ি ঢলের পানি সরাসরি হাওরে এসে প্রতি বছর হাওরের ফসল তলিয়ে নিচ্ছে। নদ-নদী খনন না করলে জীববৈচিত্র সমৃদ্ধ হাওর রক্ষা করা সম্ভব হবে না।
দোয়ারাবাজার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ইদ্রিস আলী বীরপ্রতীক বলেন, প্রতি বছর ফসলরক্ষা বাঁধের বরাদ্দ বাড়ে। কিন্তু কৃষকের ফসলের লাভ হয় না। প্রতিবছরই ফসল হারিয়ে তারা নিঃস্ব হয়। বাঁধগুলো টেকসই হয় না। ১৯৭৪ সনে দেখার হাওর রক্ষায় পান্ডারখালে বাঁধ নির্মাণের পর আজ পর্যন্ত কোন সরকারেই একমুঠো মাটি দেওয়া লাগেনি। কারণ কৃষক নেতাদের তত্ত্বাবধানে আন্তরিকতা ও সততার সঙ্গে ওই বাঁধটি নির্মিত হয়েছিল। কিন্তু এখন পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ ৩ মাসও টিকেনা। তিনি ডোবরার পানি নিষ্কাশনের জন্য প্রতি মওসুমে বিএডিসিকে সেচযন্ত্র বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানান।
প্রধান অতিথি মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জ সংরক্ষিত আসনের সাংসদ অ্যাডভোকেট শামছুন নাহার রব্বানী বলেন, হাওরের বোরো ফসলহানির চিত্র তোলে ধরতে পয়েন্ট অব অর্ডারে আমি সংসদে কথা বলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু স্বল্পসময়ের কারণে কথা বলতে পারিনি। তবে আগামীতে প্রকৃত চিত্র তোলে ধরে বক্তব্য দেব। তিনি বলেন, হাওরের ফসলরক্ষায় বরাদ্দ লোপাটের ধান্দায় যেসব প্রকৌশলী ভুল পরিকল্পনায় বাঁধ নির্মাণে ঠিকাদারদের সঙ্গে আতাত করে ফসলরক্ষা বাঁধের কাজে অনিয়ম করে, তাদের সার্টিফিকেট ও লাইসেন্স বাতিল করতে হবে। তিনি তাঁর অভিজ্ঞতা তোলে ধরে বলেন, দেখার হাওরে আমার জমি বর্গাচাষ করে স্থানীয় কৃষকরা। কিন্তু ফসল তলিয়ে যাওয়ায় তাঁরা আমাকে কোন ধান দিতে পারেননি। তিনি ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণে সাংসদের প্রতিনিধি কোটা বাতিল করে সুবিধাভোগী কৃষকদের রাখার দাবি জানান।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com