সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যা কিলিং মিশনে মোট ৪ জন অংশ নেয়। এদের মধ্যে ৩ জন অধ্যাপক রেজাউল করিমকে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। অন্যজন মোটরসাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল।
ওই চারজনের মধ্যে গ্রেপ্তার জেএমবি সদস্য মাসকাওয়াদ হাসান সাকিব ওরফে মাসুদ ওরফে আবদুল্লাহ একজন। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পরে সে শিক্ষক কিলিং মিশনের বর্ণনা দেয়।
মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গ্রেপ্তারকৃত কিলার আবদুল্লাহের বরাত দিয়ে মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. শামসুদ্দিন এসব তথ্য জানান।
কিলার আবদুল্লাহ পুলিশকে জানান, তারা সবাই জেএমবির সদস্য। কাদের হত্যা করা হবে, কী জন্য হত্যা করা হবে এ বিষয়গুলো তারা কিছুই জানেন না। জেএমবির উচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশ আসলেই তারা শুধু কার্য স¤পন্ন করে। কোথায় থেকে নির্দেশ আসে বা কারা নির্দেশ দেয় এ বিষয়ে তারা কিছুই বলতে পারবে না।
অধ্যাপক রেজাউল করিমকে হত্যার নির্দেশ আসলে তারা ৪ জন মিলে তা বাস্তবায়ন করার জন্য মাঠে নেমে পড়েন। কিলিং মিশন চালানোর জন্য তারা ১৬ এপ্রিল (শনিবার) ঠিক করে। কিন্তু ওই দিন তারা কোনো কারণে ব্যর্থ হয়। সেজন্য পরের শনিবার ২৩ এপ্রিল আবার দিন ঠিক করে এবং সেই দিনই খুন করে।
দিন হিসেবে তারা সপ্তাহের শনিবারকেই বেছে নেয় এজন্য যে, ওইদিন অফিস-আদালত বন্ধ থাকে। রাস্তায় সকালে খুব একটা ভিড় থাকে না। কিলিং মিশন স¤পন্ন করে তারা যেনো দ্রুত পালিয়ে যেতে পারে।
হত্যার দিন কিলিং মিশনে ৪ জন অংশ নেয়। এদের মধ্যে তিনজন শিক্ষক রেজাউল করিমকে কোপায় ও একজন মোটরসাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। কোপানোর পরে মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে গেলে দুইজন মোটরসাইকেলে পালিয়ে যায়। অন্য দুই জন অটোরিকশা নিয়ে স্থান ত্যাগ করে। যে তিনজন শিক্ষক রেজাউল করিমকে কুপিয়েছে তাদের মধ্যে গ্রেপ্তারকৃত আবদুল্লাহও চাপাতি দিয়ে কোপায়।
পুলিশ কমিশনার মো. শামসুদ্দিন জানান, এ হত্যাকান্ড সরাসরি অংশগ্রহণকারী মাসকাওয়াত হাসান সাকিব ওরফে আবদুল্লাহকে ১৫ মে রাতে গাইবান্ধা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন ১৬ মে সোমবার আদালতের মাধ্যমে হাজির করা হলে আসামি আবদুল্লাহ হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে।
এদিকে, পুলিশ কমিশনার মো. শামসুদ্দিন আরো জানান, আবদুল্লাহর দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার রাতে এ ঘটনায় আরো তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। হত্যাকান্ডের ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া আটককৃতদের বাড়ি থেকে ১টি চাপাতি ও ১টি ছোরা উদ্ধার করা হয়েছে।
তবে আসামি আবদুল্লাহর দাবি, উদ্ধার হওয়া চাপাতি ও ছোরা হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত হয়নি। সেদিন অন্য চাপাতি ব্যবহার করা হয়েছিল।
এদিকে অধ্যাপক রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যা মামলায় আটক তিনজনকে পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আটক ব্যক্তিরা হলেন- রাবি ছাত্র রহমত উল্লাহ ওরফে শাহীন (২৪), আবদুস সাত্তার (৬৫) ও তার ছেলে রিপন আলী (৩৮)।