সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
মোবাইল ফোন নম্বর অপরিবর্তিত রেখে নাগরিকদের অপারেটর বদলের সুযোগ দিতে ‘মোবাইল নাম্বার পোর্টেবিলিটি’ (এমএনপি) নীতিমালার সংশোধিত খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী বুধবার গণমাধ্যমকে বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ায় এখন এমএনপি সেবা চালু করতে এই নীতিমালা নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসিতে পাঠানো হবে। এরপর বিটিআরসি এমএনপি সেবার কাজ দিতে নিলামের প্রস্তুতি নেবে।”
মোবাইল ফোন নম্বর অপরিবর্তিত রেখে অপারেটর বদলের কাজ কারা পাবে, সেই প্রক্রিয়া ‘স্বচ্ছ’ করতে কয়েকটি মূল্যায়ন মানদন্ড যুক্ত করে গত জানুয়ারিতে এমএনপি নীতিমালার সংশোধিত খসড়া চূড়ান্ত করে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। এরপর তা পাঠানো হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, “নীতিমালার সংশোধিত খসড়া কোনো পরিবর্তন ছাড়াই অনুমোদন করেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।”
গুরুত্বপূর্ণ এই কাজের লাইসেন্স দেওয়ার নিলাম পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় যোগ্যতার নতুন শর্ত যোগ করার উদ্যোগ নেয় টেলিযোগাযোগ বিভাগ।
এর ধারাবাহিকতায় খসড়া সংশোধন করে কয়েকটি বিষয় নীতিমালার অন্তর্ভুক্ত করে বিটিআরসির লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সিং বিভাগ।
নিলাম প্রক্রিয়ায় আগ্রহী প্রতিষ্ঠানের যোগ্যতা মূল্যায়ন করতে আগে নীতমালায় সুনির্দিষ্ট কোনো মানদন্ডের উল্লেখ ছিল না। সংশোধনের পর সেখানে নয়টি মানদন্ডের ভিত্তিতে মূল্যায়নের কথা বলা হয়।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, এমএনপি পরিচালনার অভিজ্ঞতা, টেকনিক্যাল ও সিস্টেম ডিজাইনের অভিজ্ঞতা, গ্লোবাল ফুট প্রিন্ট (কয়টি দেশে অপারেশনে রয়েছে), টেকনিক্যাল ক্যাপাসিটি, ফিনানশিয়াল অ্যানালাইসিস (আর্থিক বিশ্লেষণ), রোল আউট ম্যানেজমেন্ট, রিস্ক ম্যানেজমেন্টসহ নয়টি মানদন্ডে ১০০ নম্বরের ভিত্তিতে আগ্রহী দরদাতাদের যোগ্যতা মূল্যায়ন করা হবে।
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হওয়ার পর আগ্রহীদের আবেদনের সঙ্গে দেওয়া তথ্যর ভিত্তিতে মূল্যায়ন কমিটি যোগ্যতা নিরূপণ করে নম্বর দেবে। এরপর যোগ্য প্রার্থীদের একটি তালিকা প্রকাশ করবে বিটিআরসি। সেই ‘যোগ্য’ প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়েই নিলামের আয়োজন করা হবে।
এমএনপি সুবিধা দিতে অপারেটরা গ্রাহকদের কাছ থেকে ৩০ টাকা নিতে পারবে। অর্থ মন্ত্রণালয় আগেই বিষয়টি অনুমোদন করেছে। একবার এমএনপি সুবিধা নেওয়ার পর গ্রাহক আবার নতুন কোনো অপারেটরে যেতে চাইলে তাকে ৪৫ দিন অপেক্ষা করতে হবে। বর্তমানে ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন দেশ ছাড়াও প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানে মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি বা এমএনপি পরিষেবা চালু রয়েছে। অপারেটরের সেবায় সন্তুষ্ট না হলেও এখন অনেকে নম্বর পরিবর্তনের ঝক্কিতে যেতে চান না। এমএনপি চালু হলে তারা নম্বর ঠিক রেখেই অন্য অপারেটরে যাওয়ার সুযোগ পাবেন। বহু প্রতীক্ষিত এই সুযোগ তৈরির জন্য গত ২ ডিসেম্বর এমএনপি নীতিমালায় অনুমোদন দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়।