1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০২:০২ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

নিজামীর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ, যেকোনো সময় ফাঁসি

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১০ মে, ২০১৬

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
একাত্তরে বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর রিভিউ খারিজের রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। সোমবার সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রারের দপ্তর থেকে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়। রায় প্রকাশের পর সেটি ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। সেখান থেকে রায়ের কপি যাবে কারাগারে। যদি রাষ্ট্রপতির কাছে নিজামী ক্ষমা না চান, তবে যেকোনো দিন ফাঁসি কার্যকর হতে পারে।
সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার সাব্বির ফয়েজ বাংলামেইলকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিজামীর দল জামায়াতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, নিজামী তার স্বজনদের জানিয়েছেন, তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষা চাইবেন না। আল্লাহ ছাড়া আর কারও কাছে ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই আসে না। রাষ্ট্রপতির প্রাণভিক্ষার আবেদন না করলে নিজামীকে ফাঁসির রশিতে ঝুলাতে আইনত আর কোনো বাধা থাকবে না।
গত বৃহ¯পতিবার (৫ মে) মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত মতিউর রহমান নিজামীর রিভিউ খারিজ করে দেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এক শব্দের এই রায় ঘোষণা করেন। বেলা সাড়ে ১১টায় এজলাসে এসে প্রধান বিচারপতি শুধু বলেন, ‘ডিসমিসড’।
বেঞ্চের অপর তিন সদস্য হলেন : বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
রিভিউ আবেদন খারিজের পর পুরোজাতি এখন নিজামীর ফাঁসির রজনীর জন্য অপেক্ষায় আছে।
রিভিউ আবেদন খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর এবার শুরু হবে নিজামীর মৃত্যুদন্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া। নিয়ম অনুযায়ী রিভিউ খারিজের রায়ের অনুলিপি কারাগারে যাবে। তবে রিভিউ আবেদনে রায় বহাল থাকায় কারাবিধি অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির কাছে অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা চাইতে পারবেন নিজামী।
রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনার পর রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করা না করার উপর সিদ্ধান্ত হবে। তবে রাষ্ট্রপতি ক্ষমা নাকচ করলে আসামির দন্ড কার্যকরে আর কোনো বাধা থাকবে না। অর্থাৎ মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদন্ডের রায় কার্যকরে এখনো এই একটি ধাপ অনুসরণ করতে হবে।
রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকতা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, নিজামীর মামলায় সব নিয়ম অনুসরণ করা হবে। রিভিউ খারিজ হওয়ায় এখন মৃত্যুদন্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু হবে। তবে তিনি যদি রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন এ ক্ষেত্রে তাকে সে সুযোগ দেয়া হবে।
এদিকে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত নিজামীকে রোববার (০৮মে) রাতে কাশিমপুর-২ কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের আনা হয়েছে। গাজীপুরের কাশিমপুর-২ কারাগারের ৪০ নম্বর কনডেম সেলে বন্দি নিজামীকে নিয়ে রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কড়া নিরাপত্তায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
কারা কর্তৃপক্ষের একটি সূত্র জানিয়েছে, মৃত্যুদন্ড কার্যকরের আইনি পদক্ষেপসমূহ দ্রুত স¤পন্ন করার উদ্দেশেই জামায়াতের আমিরকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে।
কারা কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এরই মধ্যে কেরানীগঞ্জে নবনির্মিত কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসির মঞ্চ প্রস্তুত করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নিজামীর রায় কার্যকরই হতে পারে নতুন কারাগারের প্রথম ফাঁসি। তবে কোনো কারণে সেখানে ফাঁসির মঞ্চের স¤পূর্ণ কাজ স¤পন্ন না হলে বেছে নেওয়া হতে পারে নাজিমুদ্দিন রোডের পুরনো কারাগারের ফাঁসির মঞ্চেই তার দন্ড কার্যকর করা হবে। তবে কাশিমপুর কারাগার থেকে কেরানীগঞ্জে না নিয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়ায় সেখানেই ফাঁসি কার্যকরের সম্ভাবনা জোরালো হয়ে ওঠেছে।
নিজামীকে ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদন্ড বহাল রেখে চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি চূড়ান্ত রায় দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।১৫ মার্চ পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি প্রকাশ করেন দেশের এই সর্বোচ্চ আদালত। ওইদিনই আপিল বিভাগের এই রায়ের কপি পেয়ে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
লাল সালুতে মুড়ে এই মৃত্যু পরোয়ানা ওইদিন রাত সাড়ে ৯টার পর ট্রাইব্যুনাল থেকে পাঠানো হয় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। সেখান থেকে পরদিন সকালে পরোয়ানা যায় গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে।
নিয়ম অনুযায়ী রায়ের প্রত্যায়িত অনুলিপি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও পাঠানো হয়েছে। মৃত্যু পরোয়ানা হাতে পেয়ে নিজামীকে তা পড়ে শোনানো হয়। ওই পরোয়ানার ভিত্তিতেই শুরু হয় সাজা কার্যকরের প্রস্তুতি।
আইন অনুযায়ী রায় প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে আপিলের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করার সুযোগ পান নিজামী। ১৫ দিন শেষ হওয়ার একদিন বাকি থাকতে গত ২৯ মার্চ সকালে সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় নিজামীর আইনজীবীরা রিভিউ আবেদন জমা দেন। ৭০ পৃষ্ঠার মূল রিভিউর আবেদনের সঙ্গে মোট ২২৯ পৃষ্ঠার নথিপত্রে তার দন্ড থেকে খালাস চেয়ে ৪৬টি (গ্রাউন্ড) যুক্তি তুলে ধরা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর নিজামীকে মৃত্যুদন্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ এ রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক।
ট্রাইব্যুনালে নিজামীর বিরুদ্ধে আনা মানবতাবিরোধী অপরাধের ১৬টি অভিযোগের মধ্যে বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ডে সংশ্লিষ্টতাসহ আটটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এর মধ্যে ১, ৩, ৭ ও ৮ নম্বর অভিযোগে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হয়। ২, ৪, ৬ ও ১৬ নম্বর অভিযোগে নিজামীকে মৃত্যুদন্ড দেন ট্রাইব্যুনাল। প্রমাণিত না হওয়ায় বাকি আটটি অভিযোগ থেকে তাঁকে খালাস দেওয়া হয়।
২০১০ সালের ২৯ জুন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের একটি মামলায় মতিউর রহমান নিজামীকে গ্রেপ্তার করার পর একই বছরের ২ আগস্ট তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী হলেন পঞ্চম যুদ্ধাপরাধী, যার সর্বোচ্চ সাজার রায় কার্যকরের পর্যায়ে এসেছে। এটি দ্বিতীয় মামলা, যেখানে বুদ্ধিজীবী হত্যায় দায়ে শেষ বিচারেও আসামির মৃত্যুদন্ড বহাল রাখা হয়েছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com