সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
‘সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল আইন, ২০১৬’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সংক্রামক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে চিকিৎসার জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করালে খসড়া আইন অনুযায়ী শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
সচিবালয়ে সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভা বৈঠকে আইনটি অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম প্রেস ব্রিফিংয়ে এ অনুমোদনের কথা জানান।
ম্যালেরিয়া নিয়ে ১৯৭৭, ১৯৭৮ সালের দুটি আইন ছিল জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এ দুটি আইন একত্রিত করে নতুন আইন করা হয়েছে। সব ধরনের সংক্রামক রোগ এ আইনের আওতায় আনা হয়েছে।’
জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি ও জনস্বাস্থ্য-সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা মোকাবেলা করাসহ স্বাস্থ্যসংক্রান্ত ঝুঁকি কমাতে সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল এবং জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরির জন্য নতুন এ আইনটি করা হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘নতুন আইনে সংক্রামক রোগের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, জীবাণুঘটিত রোগ কালাজ্বর, ফাইলেরিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা, অ্যানথ্রাক্স, ফ্লু, এভিয়ান ফ্লু, নিপাহ, জলাতঙ্ক, শ্বাসনালির সংক্রমণ, এইচআইভি, ভাইরাল হেপাটাইটিস, টাইফয়েড, মেননিজাইটস; এ ছাড়া নতুনভাবে যেসব সংক্রমক আবিষ্কৃত হবে সেগুলো।’
সংক্রামক রোগে আক্রান্তদের জন্য কোয়ারেনটাইন (সঙ্গরোধ), পৃথকীকরণসহ বিভিন্ন ব্যবস্থার কথাও আইনে রয়েছে বলে জানান তিনি।
আইনের ধারা লঙ্ঘনে শাস্তির বিধান রয়েছে জানিয়ে শফিউল আলম বলেন, ‘আইনে সংক্রামক রোগে আক্রান্ত সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট স্থানে শারীরিক ও ল্যাবরেটরি পরীক্ষা করার কথা বলা হয়েছে। এটা কেউ না মানলে বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে তাকে বছরের কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা জরিমানা দিতে হবে প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী। তবে শাস্তির বিষয়গুলো আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ের (পরীক্ষা-নিরীক্ষা) সময় চূড়ান্ত করা হবে।’
আইন অনুযায়ী সংক্রামক রোগে আক্রান্ত কেউ অন্য দেশ থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে চাইলে এয়ারপোর্টেই তাদের চিহ্নিত করা হবে জানিয়ে শফিউল আলম বলেন, ‘চিহ্নিত সংক্রামক রোগে আক্রান্তদের আলাদা করে রাখা হবে। বন্দরগুলোতে এ ধরনের নিয়ন্ত্রণ আরোপের কথা খসড়া আইনে রয়েছে।’
এ ছাড়া বৈঠকে ‘ক্যাডেট কলেজ আইন, ২০১৬’-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘১৯৬৪ সালের অর্ডিন্যান্সের (অধ্যাদেশ) অধীনে ক্যাডেট কলেজগুলো চলছিল। ওই অধ্যাদেশটি পাকিস্তান শাসনামলের, এ ছাড়া আইনগুলো ইংরেজি থেকে বাংলা করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অধ্যাদেশটি মূলত বাংলায় রূপান্তরে করে নতুন আইনটি করা হয়েছে।’
দেশে ১২টি ক্যাডেট কলেজ রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘কলেজগুলো পরিচালনায় দুটি কমিটি কাজ করে। একটি কেন্দ্রীয় পরিষদ, আরেকটি কলেজ পরিচালনা পরিষদ। এ সব কিছুই প্রায় পুরোনো আইনের মতো রয়েছে।’