বিশেষ প্রতিনিধি ::
ধর্মপাশা ও তাহিরপুর উপজেলায় আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে একাধিক প্রার্থী নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করলেও দলের বিদ্রোহী হিসেবেই নির্বাচন করতে যাচ্ছেন তাঁরা। এদিকে বিদ্রোহীদের কারণে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্তরা।
ধর্মপাশা উপজেলায় চামরদানি ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন বর্তমান চেয়ারম্যান জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি প্রভাকর চৌধুরী পান্না। তৃণমূল ও জেলা থেকে নাম প্রস্তাব না করায় কেন্দ্র তাঁকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি। তাঁর বদলে মনোনয়ন পেয়েছেন আলমগীর খসরু। দলীয় মনোনয়ন না পেলেও নির্বাচন করবেন বলে জানিয়েছেন প্রভাকর চৌধুরী পান্না।
তিনি বলেন, স্থানীয় এমপি ও থানা আ.লীগের সভাপতিকে তোয়াজ করিনি, টাকা দিতে পারিনি, এজন্য দলীয় মনোনয়ন পাইনি। আমি বর্তমান চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। অনেক কাজ অসমাপ্ত রয়েছে। সেই কাজগুলো সমাপ্ত করতে দলীয় নেতাকর্মীরা ছাড়াও সাধারণ মানুষের চাপ রয়েছে। এ জন্য আমি আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো।
তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নে মনোনয়ন চেয়েছিলেন জেলা যুবলীগের সাবেক সদস্য মুর্শেদ আলম। এই ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েছেন। দলীয় প্রার্থীর বিরোধিতা করে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুর্শেদ আলম। বর্তমান চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন ও মুর্শেদ আলম আপন চাচাতো ভাই।
মুর্শেদ আলম বলেন, সোমবার মনোনয়নপত্র দাখিল করবো। আমি এলাকার সর্বস্তরের মানুষ, দলীয় নেতাকর্মীদের সুখে-দুখের সাথী। নির্বাচনে দাঁড়ানোর জন্য তাঁরা বার বার আমাকে অনুরোধ করছেন। আশা করছি সকলের দোয়া ও সমর্থনে নির্বাচনে জয়ী হতে পারবো।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি রণজিত চৌধুরী রাজন চূড়ান্তভাবে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এজন্য গত দুই দিন ধরে এলাকাবাসী ও দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছেন তিনি।
রণজিত চৌধুরী রাজন বলেন, ফতেহপুর ইউনিয়ন আ.লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। আমি দলীয় মনোনয়ন না পেলেও নেতাকর্মীরা আমার মাঝে আ.লীগের ছায়া দেখতে পেয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, দলীয় প্রতীক না পেলেও আ.লীগের রাজনকে পেয়েছি। আমরা তাঁর সঙ্গেই আছি। আশা করছি এলাকার জনগণ ছাড়াও আ.লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা আমার সঙ্গেই থাকবে।
তাহিরপুর সদর উপজেলায় দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করার চিন্তা-ভাবনা করছেন উপজেলা আ.লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক স্বপন কুমার রায়। তিনি জানিয়েছেন, চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য তিনি দলীয় নেতাকর্মী ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে কথা বলবেন।
স্বপন কুমার রায় বলেন, তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মতামতকে গুরুত্ব না দিয়ে আমার ইউনিয়নে প্রার্থী মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। সাধারণ নেতাকর্মীরা তা মেনে নেন নি। নেতাকর্মী ও ভোটাররা চাচ্ছেন আমি যেন নির্বাচন করি।
জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন জানিয়েছেন, আশা করছি সকল ভেদাভেদ ভুলে সবাই দলীয় মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবেন।