স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের সুরমা মার্কেটের সুফিয়া এম্পোরিয়ামে সেফটিক ট্যাংকির বিস্ফোরণে দুর্ঘটনার কারণে বুধবার বিকেলে থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টা পর্যন্ত প্রায় ২২ ঘণ্টা শহরের পশ্চিমাঞ্চলের কয়েক শ গ্রাহকের গ্যাস সংযোগ বন্ধ রাখে জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ। এই দুর্ঘটনার পর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত প্রকৌশলী, ফায়ার সার্ভিসের সংশ্লিষ্টরা সুফিয়া এম্পোরিয়াম থেকে মধ্যবাজার পর্যন্ত বিশেষজ্ঞদের দিয়ে চেক করেও গ্যাস লাইনে ত্রুটি না পাওয়ায় অবশেষে গ্যাস সংযোগ সচল করেন।
এর আগে সুফিয়া এম্পোরিয়ামের স্বত্তাধিকারী শাহীন আলমের ওই প্রতিষ্ঠানের পাশে বিশাল দুটি গর্ত করে আগুন দিয়ে লাইন চেক করেও গ্যাস লাইনে কোন ত্রুটি খুঁজে পাননি সংশ্লিষ্টরা। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন শাহীন আলমের অভিযোগের কারণেই দুর্ঘটনার আশঙ্কায় তারা গ্রাহকদের সংযোগ বন্ধ রাখেন।
জানা যায়, সুফিয়া এম্পোরিয়ামের নিচের সেফটিক ট্যাংকি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় চাপ বাড়ছিল। বুধবার সেই চাপের কারণে বিস্ফোরণে উড়ে যায় ওই প্রতিষ্ঠানের মেঝে। এরপর থেকেই মালিক কৌশলে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে গ্যাস লাইনের ফাটলে তার প্রতিষ্ঠানে দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রচার দিতে থাকেন। দুর্ঘটনার মূল কারণ আড়াল করতে তিনি এই কৌশল নেন বলে অনেক ক্ষুব্ধ গ্রাহক অভিযোগ করেন। জানা গেছে, শাহীন আলম এই মিথ্যা প্রচারণার পাশাপাশি গ্যাস লাইনে ত্রুটির কারণে তার দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেন। তার এই অভিযোগে প্রেক্ষিতে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় শহরের আরপিননগরসহ পশ্চিমাঞ্চলের কয়েক ’শ গ্রাহকের সংযোগ বন্ধ রাখে জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ।
পরে তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে বুধবার দুপুর থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত প্রকৌশলী ও সংযোগকর্মীরা মধ্যবাজার এসে প্রতিটি পয়েন্টে পর্যবেক্ষণ করে কোথাও ত্রুটি খুঁজে পাননি। পরে তারা সুফিয়া এম্পোরিয়ামের পাশে দুটি গর্ত করে কোথাও গ্যাস লিক করছে কি-না তা কাঠিতে আগুন দিয়ে পরীক্ষা করেন। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এই পরীক্ষা করেন। এভাবে নানা পরীক্ষা-পর্যবেক্ষণের পরও ত্রুটি খুঁজে না পাওয়ায় জালালাবাদ গ্যাসের সুনামগঞ্জ অফিসের ব্যবস্থাপক মো. সুরুজ্জামান ঘটনাস্থল থেকে সংযোগ প্রদানের জন্য কর্মীদের নির্দেশ দেন।
আরপিননগর এলাকার বাসিন্দা ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আক্তারুজ্জামান সেলিম বলেন, কোন ঘোষণা ছাড়াই বুধবার রাত থেকে আমাদের এলাকার সবার গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরেও আমরা অফিসে যোগাযোগ করেও গ্যাস সংযোগ বন্ধ রাখার কারণ জানতে পারিনি। প্রায় ২২ ঘণ্টা গ্যাস সংযোগ বন্ধ থাকায় মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
জালালাবাদ গ্যাসের ব্যবস্থাপক মো. সুরুজ্জামান বলেন, সুফিয়া এম্পোরিয়ামের সত্তাধিকারীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় আমরা কিছু গ্রাহকের সংযোগ বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত বন্ধ রেখেছিলাম। ওইদিন থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত আমাদের কর্মীরা কোথাও লাইনে দ্রুটি খুঁজে না পাওয়ায় ফের সংযোগ চালু করি। তিনি বলেন, অভিযোগকারীর দোকানের সামনে গর্ত করে আগুন দিয়ে লাইন চেক করেও আমরা ত্রুটি পাইনি।