1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৯:৩৪ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

জয়িতা জান্নাতুনের জীবন জয়ের গল্প

  • আপডেট সময় শনিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০১৬

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
জয়িতা মানে বিজয়ী। শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও যে সব নারী নিজেদের মেধা, শ্রম ও যোগ্যতা দিয়ে নিজেকে এবং দেশকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এগিয়ে নিয়ে গেছেন তাঁদের সংবর্ধনা দেয়া হয়। গত মঙ্গলবার সকালে সিলেট নগরীর কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে জয়িতাদের সম্মাননা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার অফিস। সিলেট বিভাগের ৪টি জেলা থেকে ২০ জন জয়িতাকে সম্মাননা দেয়া হয়। এদের মধ্যে ৫ ক্যাটাগরিতে ৫জনকে বিভাগীয় পর্যায়ে নির্বাচিত করা হয়। ‘নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে নতুন জীবন শুরু করেছেন যে নারী’ ক্যাটাগরিতে এবার প্রথম হন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার জান্নাতুন নাহার।
জয়িতা জান্নাতুন জানিয়েছেন জীবন জয়ের গল্প। মাত্র ১৪/১৫ বছর বয়সে বিয়ে হয়েছিল সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার বেলাবরহাটি গ্রামের জান্নাতুন নাহারের (২৭)। অভাবের কারণে অল্প বয়সেই তার কাঁধে চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল সংসারের জোয়াল। বাধ্য হয়ে জীবনের ঘানি টানতে শুরু করেন কিশোরী জান্নাতুন। কিন্তু স্বামীর সংসারে সুখের নাগাল পাওয়া হয়নি তাঁর। বিয়ের কিছু দিন পর বুঝতে পারেন তাঁর স্বামী মাদকাসক্ত।
তাঁর স্বামী রিকশার গ্যারেজ চালিয়ে যা আয় করত তার বেশির ভাগই চলে যেত মদ-গাঁজার পেছনে। কিছু বলতে গেলে তার ওপর নেমে আসত নির্যাতন। বিয়ের বছর খানেক পর থেকে যৌতুকের জন্য জান্নাতুনের ওপর শুরু হয় নির্যাতন। স্বামীর পরিবারের লোকজন নানাভাবে তাঁকে নির্যাতন করতেন। অনেক সময় অত্যাচারের মাত্রা বর্বরতাকেও ছাড়িয়ে যেত। তাঁর ওপর নিয়মিতই চলত অত্যাচারের স্ট্রিমরোলার।
ইতিমধ্যে দুই সন্তানের জননী হন জান্নানতুন। কিন্তু স্বামীকে সুপথে ফেরাতে পারলেন না। মুখ বুজে সব নির্যাতন সয়ে যাচ্ছিলেন। বেশ কয়েকবার দরিদ্র পিতার কাছ থেকে স্বামীর চাহিদা মতো টাকা এনেও দিয়েছিলেন। কিন্তু এর মধ্যেই শুনলেন স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। এ কথা জানার পর তাঁর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল। কী করবেন বুঝতে পারছিলেন না। গত বছরের মাঝামাঝিতে দুই সন্তান নিয়ে ফিরে এলেন বাবার বাড়ি। সামান্য পতিত জমিতে শাক-সবজির আবাদের সাথে সাথে সেলাই কাজ শিখলেন অনেক কষ্ট করে। এবার ভাগ্যের চাকা ঘুরতে শুরু করে জান্নাতুনের। সেলাই কাজ আর সবজি চাষের পাশাপশি এখন তিনি একটি এনজিওতে স্বাস্থ্য সেবিকার কাজও করছেন। দুই সন্তান নিয়ে বাবার পরিবারে ভালোই কাটছে তাঁর দিন। তিনি এখন স্বাবলম্বী।
স্বামী ও তার পরিবারের নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু ও স্বাবলম্বী হওয়ার স্বীকৃতি স্বরূপ এ বছর তিনি সরকারের ‘জয়িতা’ সম্মাননা পেয়েছেন। এ বছর সিলেট বিভাগ থেকে মোট পাঁচজন নারীকে এ সম্মাননা প্রদান করা হয়।
জান্নাতুন নাহার বলেন, অনেক কষ্ট কইরাও, অনেকবার যৌতুক দিয়াও স্বামী ও তার পরিবারের কারো মন পাইনাই। উল্টো আমার ঘাড়ে সতীন চাপাইয়া দেয়া অয়। এখন আমি ভালাই আছি। নিজে কষ্ট কইরা রোজগার করি। দুই ছেলে-মেয়েসহ আল্লা আমারে ভালাই রাখছেন।
জান্নাতুন নাহার জানান তিনি যৌতুকের বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করে তোলার জন্য পল্লীসমাজ নামে আরেকটি এনজিওতে কাজ করছেন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com