প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি নিবন্ধন এমন একটি নাগরিকত্ব নিশ্চায়ক মৌলিক বিষয়, যেটির দ্বারা দেশের প্রতিটি নাগরিকের পরিচয়পত্র কিংবা নির্ভুল ভোটার তালিকা যথাযথভাবে নির্মাণ করার কর্মসূচি বাস্তবায়িত হতে পারে। এতে নাগরিকের জন্ম তারিখসহ আনুষাঙ্গিক সকল তথ্য যেমন নাম, পিতা-মাতার নাম, ঠিকানা, বয়স ইত্যাদি সংরক্ষণ করা থাকবে নিয়মানুযায়ী। কেবল একটি বিষয়ে শতভাগ নিশ্চিত সফলতা অর্জন করতে হবে, সেটি হলো কোনও শিশুই প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির প্রক্রিয়া থেকে বাদ যেতে পারবে না। অন্যথায় ভোটার তালিকা অসম্পূর্ণ থাকবে। জীবিতদের নামের আনুষাঙ্গিক বিষয়ের সঙ্গে এ কেবল তিনটি বাড়তি বিষয় পরবর্তীতে যোগ করতে হবে, সেগুলো হলো নাগরিকের বৈবাহিক অবস্থার ও পেশার প্রসঙ্গের সঙ্গে আইন অনুসারে শিশুকাল উত্তীর্ণ হওয়ার পরের ছবি সংযুক্তকরণ। অর্থাৎ পরিণতিতে জাতীয় পরিচয়পত্র।
তাছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শতভাগ ভর্তি নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে ছাত্রদের যে তালিকা প্রস্তুত হবে, তার দ্বারা একই বিদ্যালয়ে একই ছাত্রের দুইবার ভর্তি প্রতিরোধ সম্ভব হবে। এতে তালিকানুসারে অতিরিক্ত বই বিতরণের সমস্যাটি নিরসন হবে অনায়াসে। আর একটি বিষয়, সেটি বাংলাদেশে একটি বড় রকমের সামাজিক সমস্যা সৃষ্টি করে রেখেছে, যাকে বলে বাল্যবিবাহ, সেটিকে প্রতিরোধ করার চাবিকাঠি হয়ে উঠতে পারে এই ভর্তি নিবন্ধন। অর্থাৎ বিয়ের পাত্রপাত্রীর বয়স ইচ্ছেমতো বাড়ানোর সুযোগটি আর থাকবে না।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার শিক্ষা অফিসার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শতভাগ ভর্তি বিষয়ক একটি তালিকা প্রকাশ করেছেন। যেটা বাংলাদেশে এবংবিধ কাজের ক্ষেত্রে এই প্রথম। সংশ্লিষ্টরা কাজটিকে একটি মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। আমরা উক্ত কাজের প্রধান উদ্যোক্তা ও তাতে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সকলকে অভিনন্দন জানাই। কাজটি সত্যি সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। আশা করি এবংবিধ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে এটি একটি অনুসরণযোগ্য কর্মনীতি হয়ে উঠবে।