জয়ন্ত সেন, শাল্লা ::
ফসলরক্ষা বাঁধ ভেঙে হাওর তলিয়ে যাওয়ার ধারা অব্যাহত রয়েছে। এবার তলিয়ে গেল শাল্লা উপজেলার ছায়ার হাওর। কৃষকের চোখের সামনেই ডুবে গেছে সোনালী বোরোধান। এই দৃশ্য দেখে কৃষকরা চোখের জল ফেলছেন, অনেককে আহাজারি করতেও দেখা গেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গতকাল মঙ্গলবার উপজেলার ৩নং বাহাড়া ইউনিয়নের অন্তর্গত ভেড়াডহরের টেইংয়া বাঁধ ভেঙে যায়। ফলে শাল্লা উপজেলার সমস্ত হাওরের ফসল একে একে তলিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।
এলাকাবাসী জানান, বাঁধ ভেঙে কুশিয়ারা নদীর পানি প্রবল বেগে ছায়ার হাওরে প্রবেশ করে। এতে বাহাড়ার হাওরসহ নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জেরও অনেক হাওরের ফসল তলিয়ে যেতে পারে।
বাহাড়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার নরেশ বৈষ্ণব বলেন, বাঁধের কোন বরাদ্দ নেই। তাই এখন আর বাঁধ রক্ষা করার উপায় নেই।
অন্যদিকে আনন্দপুর ও নেয়ামতপুরের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত বাগরাধরা বাঁধও ভেঙে গেছে।
এ ব্যাপারে হবিবপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার মিহির কান্তি রায় বলেন, ওই বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় চোখের পলকে ছায়ার হাওরের সোনালী ফসল তলিয়ে যাচ্ছে।
অন্যদিকে জয়পুরস্থ ভেলানগর বাঁধ দিয়েও পানি ঢুকছে। তাছাড়া ঘিলটিয়া, সুলতানপুরের মাইতি, মাদারিয়াসহ সমস্ত বাঁধ চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এদিকে দারাইন নদীর পানি ক্রমাগত বাড়ছে। কোন কোন বাঁধ দিয়ে উপচে পানি হাওরে ঢুকছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কে.এম বদরুল হক বলেন, শাল্লা উপজেলায় ২২ হাজার হেক্টর বোরো জমি রয়েছে। উক্ত জমির ৬৫ ভাগ ফসল কাটা হয়েছে। এরমধ্যে ছায়ার হাওরে ৪ হাজার ৭শ’ হেক্টর বোরো জমি রয়েছে। তিনি আরও বলেন, টাকার হিসেব করলে সরকারিভাবে বর্তমান ধানের দরে ১২ কোটি টাকার চেয়েও বেশি ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। দুঃখের বিষয় চারিদিকে বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় হাওরের ফসল রক্ষা করা যায়নি।
তবে স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন বেশিরভাগ ফসলই তাঁরা কাটতে পারেননি। আনন্দপুর গ্রামের কৃষক বাবলু রায় জানান, আমি ২৭ কেয়ার জমি করেছি। কেটেছি মাত্র ৩ কেয়ার। শ্রমিকের অভাবে অনেক কৃষকই অর্ধেক ফসলও কাটতে পারেননি।