অতিবৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে সুনামগঞ্জের বোরো ফসল প্রায় সম্পূর্ণ বিনাশপ্রাপ্ত হয়েছে। সুনামগঞ্জ এক ফসলি এলাকা। কৃষক এখানে বোরো ফসল ফলিয়ে সারা বছরের খোরাকি ঘরে তোলেন। কিন্তু এবার বৈশাখ থেকে আগামী বৈশাখ পর্যন্ত ১২টি মাস কৃষককে চাল কিনে খেতে হবে। এক অর্থে বলা যায় সুনামগঞ্জের কৃষক এবার একেবারে কপর্দকহীন ভিখারিতে পরিণত হয়েছেন। অভিজ্ঞমহলের ধারণা দুর্ভিক্ষ অচিরেই সুনামগঞ্জকে গ্রাস করবে। তাছাড়া আগামী বছরে কৃষক বোরো ফসল চাষ করার অর্থ সংকটে ভোগবেন।
ইতোমধ্যে ভবিষ্যৎ বিপর্যয় নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে জল্পনাকল্পনা শুরু হয়ে গেছে কেবল তাই নয়, সুনামগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অকাল বন্যায় ফসলহানিতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদেরকে আর্থিক সহযোগিতা দানের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন ও মানববন্ধন হয়েছে। এসব কর্মসূচিতে বক্তারা ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির জন্য দায়ীদের আইনের আওতায় নিয়ে এসে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও সুনামগঞ্জকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করে সরকারি সহযোগিতা প্রদানের দাবি করেছেন।
গত ২২ এপ্রিল (শুক্রবার) কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন শনির হাওর পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। তিনি সবকিছু দেখেশুনে বলেছেনÑ “আমি ডুবে যাওয়া শনির হাওর ঘুরে দেখেছি। এলাকার কৃষকদের দুরবস্থা ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে আমি অবগত হয়েছি। যথাসম্ভব আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার চেষ্টা করবো।”
এবার প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগের কবলে পড়ে অসহায় বিপন্ন নিঃস্ব সুনামগঞ্জবাসী এই “যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের” প্রত্যাশায় দিনযাপন করছেন। সুনামগঞ্জকে অচিরেই দুর্গত এলাকা ঘোষণা করা হোক। এবার পর্যাপ্ত আর্থিক সহায়তা কৃষকের ঘরে পৌঁছে না দিতে পারলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের জীবনরক্ষা কঠিন হয়ে পড়বে। কৃষককে বাঁচানোর জন্য এটুকু যে করেই হোক করতেই হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। অন্যথায় আসন্ন ‘নিদান’কে কিছুতেই ঠেকানো যাবে না।