জগন্নাথপুর প্রতিনিধি ::
জগন্নাথপুর-সুনামগঞ্জ সড়কের ভাতগাঁও এলাকায় কোন্দানালা খালের উপর নির্মাণাধীন সেতুটি ভেঙে পড়েছে। ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে হঠাৎ সেতুর মূল ৫টি পাটাতন ভেঙে যায়। এতে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
সোমবার সরেজমিনে দেখা যায়, ভেঙে পড়া সেতুটি পরিদর্শন করছেন সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। ক্ষুব্ধ স্থানীয় জনতাও সেখানে উপস্থিত রয়েছেন। এ সময় সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এমএম বিল্ডার্স লিমিটেডের প্রকল্প ব্যবস্থাপক হারুন রশীদ বলেন, গার্ডার ফেল করে সেতুটি ভেঙে পড়েছে। এতে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কাজে কোন ত্রুটি হয়নি। এটি নিছক একটি দুর্ঘটনা। এখানে পুনরায় সেতু নির্মাণ করা হবে।
জানাযায়, রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সুনামগঞ্জের দূরত্ব কমাতে সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের ডাবর পয়েন্ট থেকে পাগলা-জগন্নাথপুর-আউশকান্দি আঞ্চলিক সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের অংশ হিসেবে এই সেতু তৈরি করা হচ্ছিলো। দুটি প্যাকেজে ওই সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে মোট ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে সাতটি ব্রিজের নির্মাণকাজ পেয়েছে এম এম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার লিমিটেড। সড়কের প্রশস্তকরণ এবং পুরনো সেতু ভেঙে নতুন সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয় ছয় মাস আগে। কোন্দানালা খালের ওপর সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ কোটি টাকা। সেতুটি ৫০ ফুট ১২ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ১০ ফুট ২৫ মিটার প্রস্থের। রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে নির্মাণাধীন সেতুতে গার্ডার লাগানোর সময় হাইড্রোলিক জ্যাকের তার ফেটে প্রথমে একটি গার্ডার ধসে যায়। পরে সেতুতে থাকা সবগুলো গার্ডার বিকট শব্দ করে খালে দেবে যায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের কাজ করায় এমনটি হয়েছে। ভাতগাঁও গ্রামের শিব্বির আহমেদ বলেন, রাতে আমরা সেতু এলাকায় বিকট শব্দ শুনতে পাই। তখন গ্রামের সবাই মিলে গিয়ে দেখি পুরো সেতু ভেঙে খালে পড়ে গেছে। এর মাত্র আধ ঘণ্টা আগে সেতুর কর্মরত শ্রমিকরা সাইট ছেড়ে চলে যান। না হলে অনেক হতাহতের ঘটনা ঘটতো।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, পুরো সেতুর মধ্যভাগে কোনও পিলার নেই। তাই ভেঙে পড়েছে বলে তাদের ধারণা। এছাড়া সেতুতে ছোট ছোট রড ব্যবহার করা হয়েছে। নির্মাণ শেষ হওয়ার আগেই সেতু ভেঙে পড়ায় এর পুরো কাজ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত চাই।
এম এম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার লিমিটেডের প্রজেক্ট ম্যানেজার হারুন অর রশীদ জানান, হাইড্রোলিক জ্যাকের তার ফেটে গিয়ে এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে। কাজে কোনও ধরনের অনিয়ম হয়নি। পুরো সেতু আবার মেরামত করে দেওয়া হবে। এমএম বিল্ডার্স সেতুর কোনও বিল তোলেনি। সেতু নির্মাণে ব্যবহৃত সামগ্রী সওজ ও বুয়েট পরীক্ষা করে দিয়েছে। অনিয়ময়ের কোনো সুযোগ নেই।
তবে প্রকল্প তদারককারি কর্মকর্তা সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,সেতুটি ভেঙে যাওয়ার দায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের। এতে সরকারের কোন ক্ষতি হয়নি। এ সেতুর কোন বিলও দেয়া হয়নি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পুনরায় সেতু নির্মাণ করে দিতে হবে।