দিরাই প্রতিনিধি ::
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি বলেছেন, আওয়ামী লীগ মানেই উন্নয়ন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ভাটি অঞ্চলের উন্নয়নে খুবই আন্তরিক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতায় আমরা সুনামগঞ্জে মেডিকেল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের কাজ এগিয়ে চলছে। শিক্ষা, যোগাযোগ, স্যানিটেশনসহ ভাটি অঞ্চলের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে এবং অনেক উন্নয়নকাজ চলছে। সিলেট-ঢাকা সড়ক ৬ লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প একনেকে পাস হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সারা সিলেটে ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে। আমি শুধুমাত্র মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ পালন করছি।
শনিবার বিকেলে দিরাই উপজেলার জগদল ইউনিয়নের জগদল বাজার এলাকায় প্রতিষ্ঠিত ২০ শয্যার হাসপাতালের কার্যক্রমের উদ্বোধন শেষে জগদল ইউনিয়নবাসীর ব্যানারে আয়োজিত জগদল হাইস্কুল মাঠে বিশাল জনসভার প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান আরও বলেন, সবাইকে সাথে নিয়ে ভাটি অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়ন করতে চাই। উন্নয়ন নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র সহ্য করা হবে না। তিনি প্রয়াত জাতীয় নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে স্মরণ করে বলেন, তিনি ছিলেন আমাদের ভাটি অঞ্চলের গৌরব। তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, মন্ত্রী এবং এমপি ছিলেন। তাঁর স্মৃতি ধরে রাখতে আমরা সবাই কাজ করবো।
পরিকল্পনামন্ত্রী সরকারের উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরে বলেন, হাওরের কৃষকদের একমাত্র ফসল নিরাপদে ঘরে তুলতে হাওর রক্ষা বাঁধ মেরামতের জন্য সরকার প্রচুর অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে। বাঁধের কাজে কোনো অনিয়ম হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্ত্রী এমএ মান্নান দুঃখ করে বলেন, আমি যখন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সুনামগঞ্জের উন্নয়ন করছি ঠিক সে সময়ে একটি সুবিধাবাদী মহল আমাকে বিষোদগার করছেন। আমি মনে করি রাজনীতি মানে জনগণের সেবা করা, রাজনীতি মানে উন্নয়ন। আমি ভাটির সন্তান। তাদের দুঃখ-কষ্টের কথা আমি অনুভব করি। তাই সবার সহযোগিতায় আমি ভাটি অঞ্চলের উন্নয়নকাজ করে যাব। আমাদের টাকার কোনো অভাব নেই, অভাব শুধু সহযোগিতার।
জগদল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা নানু মিয়ার সভাপতিত্বে ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রঞ্জন কুমার রায় ও দিরাই ছাত্রকল্যাণ পরিষদের সভাপতি ইমরুল হাসান সজলের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূরুল হুদা মুকুট, দিরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম চৌধুরী, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক খায়রুল হুদা চপল, দিরাই পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ মোশাররফ মিয়া, দৈনিক সুনামকণ্ঠের স¤পাদকমণ্ডলীর সভাপতি ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. জিয়াউল হক।
বক্তব্য রাখেন জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, যুবলীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এর আগে দুপুরে মন্ত্রী এমএ মান্নান উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ মেরামত কাজের অগ্রগতি নিয়ে ব্রিফিং এবং আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বক্তব্য রাখেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান মামুন, উপজেলা প্রকৌশলী ইফতেখার হেসেন, শিক্ষা কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান, দিরাই প্রেসক্লাব সভাপতি সামছুল ইসলাম সরদার খেজুর, দিরাই অনলাইন প্রেসক্লাব সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সর্দারসহ জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক, সরকারী কর্মকর্তা, শিক্ষক, সাংবাদিকসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান এমপি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার কৃষিতে বিনিয়োগ করার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দারিদ্র্যকে কমিয়ে আনা। সম্পূর্ণ নির্মূল করা হয়তো সম্ভব না। সরকার বোরো ফসল রক্ষাবাঁধের জন্য প্রতি বছর প্রচুর অর্থ দিচ্ছে। বাঁধের কাজ সঠিক ভাবে সম্পন্ন করতে হবে ।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, দিরাই-শাল্লার উন্নয়ন করতে হলে এখানকার সংসদ সদস্যের সহযোগিতার দরকার। আমি এখানে আসার আগে এমপি ড. জয়া সেনগুপ্তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টাও করি, কিন্তু তাকে পাইনি। আমার বাড়ি যেখানেই থাকুক আমি সুনামগঞ্জের সন্তান আমি সারা জেলার উন্নয়ন করব। দেশের জন্য কাজ করবো প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে। আমাদের মাথায় অনেক বড় বড় পরিকল্পনা ঘুরছে। পদ্মা সেতু, সুনামগঞ্জের রানীগঞ্জ সেতুর নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে। দিরাই-শাল্লা-আজমিরিগঞ্জ বানিয়াচং হয়ে হবিগঞ্জ গিয়ে সড়ক সংযুক্ত হবে। সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। হাওরের উড়াল সেতু, ছাতক থেকে সুনামগঞ্জ রেললাইন নির্মাণ হবে। সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল কাজ ঠিক সময়েই হবে। অযথা সমালোচনার দরকার নেই।