1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৩:৩৭ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

নোট-গাইডের আদলে যেকোন বইও নিষিদ্ধ হচ্ছে

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
নোট-গাইডের আদলে যেকোনো বই বাজারে আনা নিষিদ্ধ রেখে শিক্ষা আইনের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। শিক্ষকরা নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়াতে পারবেন না, তবে ফ্রিল্যান্সিং কোচিং চালাতে কোনো বাধা নেই। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাদের স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় চলাকালে কোচিংয়ে যেতে পারবে না। শিক্ষকরা কোনোভাবেই নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কোচিংও করাতে পারবেন না। এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সব ধরনের শারীরিক ও মানসিক শাস্তিও নিষিদ্ধ করা হচ্ছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, দীর্ঘ বৈঠকের পর অবশেষে শিক্ষা আইন-২০২০-এর খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। ছোটখাটো বানান সংশোধন ছাড়া আর কোনো পরিবর্তন করা হয়নি। শিগগিরই এটি মন্ত্রিপরিষদ সভায় পাঠানো হবে। এরপর ভাষাগত সংশোধনের জন্য আইন মন্ত্রণালয় হয়ে জাতীয় সংসদে উত্থাপন হবে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে এটি কার্যকর করা হবে।
খসড়া থেকে জানা গেছে, নোট-গাইড বই অর্থে বোঝানো হয়েছে, ‘সরকার কর্তৃক অনুমোদিত সহায়ক পুস্তক ব্যতীত যে পুস্তকসমূহে পাঠ্যপুস্তকের বিষয়বস্তু ও এর আলোকে বিভিন্ন পরীক্ষার সম্ভাব্য প্রশ্নাবলির উত্তর লিপিবদ্ধ থাকে, যাহা বাণিজ্যিকভাবে বিক্রয় হয়।’ এ আইনটি চূড়ান্ত হলে এ ধরনের যেকোনো বই চূড়ান্তভাবে নিষিদ্ধ হবে। প্রস্তাবিত শিক্ষা আইনের খসড়ার ১৬ ধারার ১ ও ২ উপধারায় বলা হয়েছে, কোনো ধরনের নোট বই বা গাইড বই মুদ্রণ, বাঁধাই, প্রকাশ বা বাজারজাত করা যাবে না। এ বিধান লঙ্ঘন করলে অনূর্ধ্ব তিন বছর কারাদণ্ড বা অনূর্ধ্ব পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। উপধারা ৫-এ বলা হয়েছে, সরকার কর্তৃক অনুমোদন ব্যতীত পাঠ্যপুস্তকের বিষয়বস্তু ও এর আলোকে বিভিন্ন পরীক্ষার সম্ভাব্য প্রশ্নাবলির উত্তর দৈনিক পত্রিকায় মুদ্রণ বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে প্রকাশ করা যাবে না। আইনের খসড়ার ১৬ ধারার ৪ ও ৫ উপধারা দুটি নতুন সংযোজন করা হয়েছে।
প্রাইভেট টিউশন অর্থ, ‘কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্তৃক অর্থের বিনিময়ে নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থীকে যেকোনো স্থানে পাঠদান করা।’ আইনের খসড়ায় কোচিং অর্থ বলতে বোঝানো হয়েছে, ‘সরকারি অথবা স্বীকৃত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রমের বাইরে কোনো ব্যক্তি বা শিক্ষক কর্তৃক এক বা একাধিক শিক্ষার্থীকে কোনো প্রতিষ্ঠানে বা কোনো নির্দিষ্ট স্থানে অর্থের বিনিময়ে যেকোনো মাধ্যমে পাঠদান কার্যক্রম।’
খসড়ার ১৮ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো শিক্ষক সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থীকে কোনো প্রকার শারীরিক শাস্তি বা মানসিক নিপীড়ন করতে পারবেন না। এর ব্যত্যয় ঘটলে তা অসদাচরণ হিসেবে গণ্য হবে এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে। তবে শিক্ষার্থীদের মঙ্গল বিবেচনায় অথবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা বিধানের জন্য শিক্ষক কর্তৃক শিক্ষার্থীকে যৌক্তিকভাবে শাসন করা যাবে।
খসড়ার ২১ ধারায় বলা হয়েছে, বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগের জন্য শিক্ষক নির্বাচন বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক স¤পন্ন হবে এবং পদভিত্তিক সব শিক্ষক নিয়োগ পদ্ধতি ও যোগ্যতা আইন বা বিধি দ্বারা নির্ধারিত ও নিয়ন্ত্রিত হবে।
প্রস্তাবিত আইনের ৩০ ধারার ১ উপধারায় বলা হয়েছে, কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষক নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট টিউশনের মাধ্যমে পাঠদান করতে পারবেন না। তবে শর্ত থাকে যে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের শনাক্ত করে সংশ্লিষ্ট অভিভাবকদের লিখিত সম্মতি সাপেক্ষে স্কুল সময়ের আগে বা পরে সরকার কর্তৃক প্রণীত বিধি বা নীতিমালা অথবা জারি করা পরিপত্র বা নির্বাহী আদেশ অনুসরণপূর্বক অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।
উপধারা ২-তে বলা হয়েছে, কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষক নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থীকে অর্থের বিনিময়ে ইলেকট্রনিক বা অনলাইন পদ্ধতিতেও টিউশন বা কোচিংয়ের মাধ্যমে পাঠদান করতে পারবেন না এবং করলে তা অসদাচরণ হিসেবে শাস্তিযোগ্য হবে।
উপধারা ৩-তে বলা হয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট টিউশনের মাধ্যমে পাঠদানের উদ্দেশ্যে কোচিং সেন্টার পরিচালনা করা বা কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করা এ আইনের অধীনে নিষিদ্ধ হবে না। তবে শর্ত থাকে যে, কোচিংয়ের শিক্ষক বা শিক্ষার্থী নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলাকালে কোচিং কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না এবং তা করলে ওই শিক্ষক বা শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে এবং ওই কোচিংয়ের নিবন্ধন বা অনুমোদন বাতিলযোগ্য হবে। আরও শর্ত থাকে কোচিং সেন্টারের কোনো শিক্ষক তার নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থীকে কোচিং করাতে পারবেন না এবং তা করলে অসদাচরণ গণ্যে শাস্তিযোগ্য হবে।
উপধারা ৪-এ বলা হয়েছে, ৩০ ধারায় বর্ণিত উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য উদ্দেশ্যে যেকোনো স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে ভর্তির বিধান থাকার ক্ষেত্রে ভর্তিচ্ছু প্রার্থীদের জন্য, চাকরিপ্রত্যাশী প্রার্থীদের জন্য, বিদেশি কারিকুলামের শিক্ষার্থীদের এ-লেভেল, ও-লেভেল, আইএলটিএস, জিআরই বা অনুরূপ কোনো উদ্দেশ্যে কোচিং সেন্টার পরিচালনা বা কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করা বা পাঠদান করা এ আইন বা এই ধারার অধীনে নিষিদ্ধ বা দণ্ডনীয় বলে গণ্য হবে না। তবে এখানে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান চলার সময়ে বা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কোচিং করালে তা অসদাচরণ গণ্যে শাস্তিযোগ্য হবে।
উপধারা ৫-এ বলা হয়েছে, ৩০ ধারার অধীন কোনো কোচিং সেন্টার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষ নির্ধারিত আইন দ্বারা নিবন্ধন ব্যতিরেকে পরিচালনা করা যাবে না। একই কোচিং সেন্টারে দেশি শিক্ষাক্রম ও বিদেশি শিক্ষাক্রমের পাঠদান পরিচালনা করা যাবে না। এ ধারা লঙ্ঘন করলে অনূর্ধ্ব তিন বছর কারাদণ্ড বা অনূর্ধ্ব ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
আইনের ৩১ ধারায় বলা হয়েছে, সরকার কর্তৃক অনুমোদিত বাংলা মাধ্যম বা ইংরেজি ভার্সনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের বেতন, টিউশন বা অন্যান্য ফি সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হবে।
জানা যায়, ২০১১ সাল থেকেই শিক্ষা আইন নিয়ে কাজ শুরু করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর আগে একাধিকবার মতামত নেওয়ার পর খসড়া তৈরি হয় এবং একবার মন্ত্রিসভায়ও উপস্থাপন করা হয়েছিল, কিন্তু নানা অসংগতির কারণে তা ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তবে এবারের খসড়াটি অধিকতর গ্রহণযোগ্য বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com