জামালগঞ্জ প্রতিনিধি ::
জামালগঞ্জে হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজে অনিয়ম থামছেই না। এতে হুমকির মুখে রয়েছে উপজেলার ২৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল।
এদিকে, বাঁধের কাজ সম্পন্নে নির্দিষ্ট সময়সীমার আর মাত্র ১৪ দিন থাকলেও উপজেলার সকল হাওরের বাঁধের কাজ এখনো সিংহভাগ বাকি রয়েছে। অধিকাংশ ক্লোজারগুলোতে এখনো মাটিই ফেলা হয়নি, পোতা হয়নি বাঁশ ও বস্তা। এ অবস্থায় উপজেলার কৃষকরা তাদের ফসল রক্ষা করতে পারবেন কিনা – এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
উপজেলার পাগনার হাওর এখনো রয়েছে অরক্ষিত। জামালগঞ্জে পাগনার হাওরের দিরাই উপজেলাধীন ১১২নং পিআইসি ফুলিয়াটানা ক্লোজারে এখনো কোনো মাটি পড়েনি। সেই সাথে একই উপজেলার হাজী বাড়ি ও মুইশা ভাঙার খালের অন্তর্ভুক্ত ১১১ নং পিআইসি’র কাজও এখনো শুরু হয়নি। প্রকল্প দুটি বাস্তবায়ন না হলে জামালগঞ্জ উপজেলাধীন পাগনার হাওরের প্রায় ১০ হাজার হেক্টর বোরো ফসল আগাম বন্যায় থাকবে হুমকির মুখে।
এদিকে জামালগঞ্জ উপজেলাধীন হাওর রক্ষা বাঁধের সুরমার তীরবর্তী ৫ ও ৬ নং পিআইসির বিচ্ছিন্ন ক্লোজারগুলো এখনো রয়েছে ফাঁকা। এই পিআইসি দুটি সারেন্ডার করায় উপজেলা কাবিটা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও পাউবো’র উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী পিআইসি এলাকার স্থানীয় জনপ্রতিনিধির (ইউপি সদস্য)কে দায়িত্ব দিলেও এখনো কাজ শুরু করা হয়নি।
৭, ৮ ও ৯নং পিআইসির কাজ চলছে কচ্ছপ গতিতে। ১১নং পিআইসির গুরুত্বপূর্ণ ক্লোজারের কাজ এখনো শেষ হয়নি। ১০, ১২ ও ১৩ নম্বর পিআইসির কাজ এক তৃতীয়াংশের উপরে চলমান আছে। ১৩ নং পিআইসির উড়ারবন্দ ক্লোজারে বাঁশ পোতার কাজ চলছে। ক্লোজারবিহীন ১৪নং পিআইসি’র প্রয়োজনীয় বাঁধের দৃশ্যমান অনুযায়ী অধিক বরাদ্দ দিয়ে সরকারের অর্থ অপচয় করা হচ্ছে বলে স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ।
এছাড়া পাগনার হাওরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্লোজার (বগলা খালি পিআইসি নং ১১) পিআইসিতে ২২ লক্ষ ১৯ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও তার চেয়ে বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ক্লোজারবিহীন ১৪নং পিআইসিতে। যার বরাদ্দের পরিমাণ ২৩ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা। ১৫নং পিআইসিতেও প্রয়োজনের তুলনায় বরাদ্দের পরিমাণ বেশি বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় কৃষকরা।
দিরাই পাউবো’র উপসহকারী প্রকৌশলী রিপন আলী বলেন, হাওর থেকে পানি নামছে না। এ জন্য ফুলিয়াটানা ক্লোজারের কাজ বিলম্ব হচ্ছে।
জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ দেব বলেন, কাজের গতি বাড়ানোর জন্য প্রত্যেক পিআইসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ১৪ নং পিআইসির বরাদ্দ বেশি কিনা তা যাচাই করার জন্য সার্ভে টিম পাঠানো হবে। ৫ ও ৬ নম্বর পিআইসি সারেন্ডার করায় নতুন পিআইসির সভাপতি শীঘ্রই কাজ শুরু করবেন।