শাল্লা প্রতিনিধি ::
মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার স্বরূপ ভূমিহীন ও গৃহহীনদের ঘর নিয়ে দরিদ্র উপজেলা শাল্লায় চলছে নানা অনিয়ম। এরমধ্যেই উপজেলার শতাধিক ঘর বাতিলের খবর পান আটগাঁও ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডবাসী ভূমিহীন-গৃহহীনরা। পরে মঙ্গলবার সকালে উপজেলা পরিষদের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে এমন বিক্ষোভ খবর পেয়ে ছুটে আসেন নির্বাহী কর্মকর্তা আল মুক্তাদির হোসেন। বিক্ষোভকারীরা এসময় জানতে চান কেনো তাদের ঘর তালিকা থেকে বাদ পড়লো? এসময় ‘জেলা প্রশাসক বাদ দিয়েছেন’ বলে তাদেরকে বুঝানোর চেষ্টা করেন নির্বাহী কর্মকর্তা। তবে এবিষয়ে জেলা প্রশাসককে ঘর বাতিল না করার অনুরোধ করবেন এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করেন বলে জানান বিক্ষোভকারীরা। কিন্তু ক্ষুব্ধ মানুষ এই সান্ত¦নায় খুশি না হয়ে ‘প্রধানমন্ত্রীর ঘর চাই, দিতে হবে’ বলে বিক্ষোভ মিছিল করতে করতে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের বাসভবনে যান। খবর পেয়ে বাসভবন থেকে বেরিয়ে এসে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানও সাধারণ মানুষকে শান্ত করার চেষ্টা করেন।
সেখান থেকে তারা শাল্লা প্রেসক্লাবের অস্থায়ী কার্যালয়ে এসে সাংবাদিকদের জয়নাল মিয়াসহ অন্যান্যরা বলেন, আটগাঁও ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডে ৬৬টা ঘর পাইছে। অনেকে ইটের বহন খরচ দিছে, বাকিও রইছে। এখন মেম্বারে জানাইছে তোমরা ঘর পাইতায় না। এর লাইগ্যা সবারে লইয়া ইউএনও’র কাছে আইছি। আমরা একেকজনের ১৫ হাজার টাকা খরচ হইছে ইট নিতে।
চাচতু মিয়া বলেন, আমি গরু বেচছি ঘরের লাইগ্যা, মাটি ভরাট করছি। এখন এই মাল যদি ফেরত যায়, তাহলে আমাদের লাশের উপর দিয়া মাল নিত অইব।
আব্দুল আহাদ বলেন, আমি ৩ কেয়ার রোয়া জমি বন্ধক দিছি। ঘরটা পাইলে পোলাপান শান্তিমত ঘুমাইত পারবো। এসময় শতাধিক লোক তাদের ১৫-২০ হাজার টাকা মালামল নিতে খরচ হয়েছে বলে জানান।
অন্যদিকে দেখা যায়, উপজেলার অনেক দরিদ্রদের প্রধানমন্ত্রীর এই মানবিক সাহায্য থেকে বঞ্চিতও করা হয়েছে। অর্থ লেনদেনের বিষয়ও অভিযোগ রয়েছে। এখানেই সীমাবদ্ধ না থেকে উপজেলার রঘুনাথপুর, সুখলাইন, মৌরাপুর, বিষ্ণুপুরসহ আটগাঁও ইউপির বিভিন্ন গ্রামে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের বহু ঘরের নকশা পরিবর্তন করা হয়েছে। যা কোনোভাবেই সরকারি ডিজাইন চেঞ্জ করা যাবে না বলেছিলেন জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।