দ.সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি ::
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের আবাসিক এলাকায় চায়না অটো ড্রায়ার রাইস মিল স্থাপন করা হচ্ছে। এনিয়ে মিলের আশপাশের প্রায় ১৫০টি পরিবারের লোকজনদের জীবনযাপন ও পরিবেশ হুমকির মুখে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সরকারি নীতিমালা অনুসারে অটো রাইস মিল করতে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, ট্রেড লাইসেন্স, শিল্প সনদ, ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স, ফুড লাইসেন্স এবং চকিদারি খাজনা রশিদ প্রদান করে অটোরাইস মিল স্থাপন করার কথা এবং আবাসিক এলাকা, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জনগুরুত্বপূর্ণ এলাকা ব্যতিরেকে অটো রাইস মিল স্থাপন করার নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু মুরাদপুর গ্রামের মৃত সোয়াব আলীর ছেলে মিয়াফর আলী সরকারি কোন নিয়ম-নীতি ছাড়াই চায়না অটো ড্রায়ার রাইস মিল স্থাপন করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে মুরাদপুর গ্রামের লোকজনদের মধ্যে চরম অসন্তোষ ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। মিল স্থাপনের কার্যক্রম বন্ধের দাবিতে মুরাদপুর গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, মুরাদপুর গ্রামের মিয়াফর আলীর মূল বসত ভিটায় গ্রামের হাটির মধ্যখানে একটি বিশাল আকারের চায়না ড্রায়ার অটো রাইস মিল স্থাপনের কাজ শুরু করেছেন এবং কাজটি বর্তমানে শেষ পর্যায়ে রয়েছে। রাইস মিলের পূর্ব পাশে প্রায় ৭০টি পরিবারের বসবাস এবং পশ্চিম পাশে প্রায় আরো ৪০টি পরিবারের বসবাস রয়েছে। চায়না ড্রায়ার অটো রাইস মিল স্থাপন করে উৎপাদন শুরু হলে উক্ত মিলের ছাই, ধুলা-বালির কারণে আশপাশের বসতবাড়িতে থাকা গাছ-গাছালি ও বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে। মিলের পানি এবং মিলের শব্দের কারণে আশপাশের পরিবারের লোকজনদের বসবাস অনুপযোগী হয়ে পড়বে। তাছাড়া গ্রামের হাটিতে বসবাসকারী বৃদ্ধ ও শিশু ছেলে মেয়েরা মিলের ছাই, ধুলা-বালির কারণে শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হবে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। পাশাপাশি মিলটি চালু করতে প্রায় ১৫ কেভির ৩টি ট্রান্সফরমারের সমন্বয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার কারণে যেকোন সময় বিদ্যুতের মাধ্যমে অগ্নিকাণ্ডের মতো ঘটনা ঘটে গ্রামের হাটিতে আগুন লেগে বসত ঘর সহ জান মাল সহ ব্যাপক ক্ষতি সাধনের শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।
মিয়াফর আলীর চাচাতো ভাই নবী হোসেন জানান, মিলটি স্থাপনের আগেই আমরা দুই পাশের পরিবারকে সরিয়ে নেব এবং পরিবেশের যাহাতে ক্ষতি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবো। তবে আশাকরি কারো ক্ষতি হবে না। আমার বড় ভাই মিয়াফর আলী আমাদের আশপাশের পরিবারের লোকজনদের সম্মতিতেই মিলটি চালু করতে চাচ্ছেন।
মুরাদপুর গ্রামে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তি জানান, মিয়াফর আলী একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। তিনি টাকার বিনিময়ে সবকিছু করতে পারেন। তাই আমরা বাধা দিয়ে পারবো না। তবে বিদ্যুৎ চালিত চায়না অটো ড্রায়ার মিলটি চালু হলে আমাদের গ্রামের পরিবেশ, নিজের ছেলে-মেয়েসহ পরিবারের লোকজন নানান অসুখে ভোগবে। এটা নিশ্চিত। বিষয়টি পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখা জরুরি হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে অটোড্রায়ার রাইস মিল স্থাপনকারী ও মালিক মিয়াফর আলী জানান, আমি নিয়ম মেনেই রাইস মিলটি চালু করবো।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেবুন নাহার শাম্মী জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। পরিবেশ অধিপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া কোনভাবেই মিলটি চালু করা যাবে না। তবে আমি মিলটি স্থাপনের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছি।