স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জে করোনার টিকা নেয়া মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। শুরুর দিকে যারা টিকার ব্যাপারে অনাগ্রহ দেখাতেন তারাও কীভাবে কোথায় টিকা নেয়া যায় এর খোঁজ নিচ্ছেন। পরিসংখ্যানও বলছে, কার্যক্রম শুরুর তৃতীয় দিনে প্রথম দিনের চেয়ে ১ হাজার ৩৩২ জন টিকা নিয়েছেন।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, সুনামগঞ্জ জেলায় প্রথমদিন করোনা রোধী ভ্যাকসিন নেন ৬৭৯ জন, দ্বিতীয় দিনে ৭৯১ জন এবং তৃতীয় দিন মঙ্গলবার ২ হাজার ১১ জন করোনার ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে ১ হাজার ৫৫৭ জন পুরুষ ও ৪৫৪ জন নারী টিকা গ্রহণ করেছেন। টিকা নেয়ার পর সবাই সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ শামস উদ্দিন।
তবে টিকা নিতে অনলাইন নিবন্ধনের ‘সুরক্ষা অ্যাপে’র সার্ভারে সমস্যার কারণে অনেকে রেজিস্ট্রেশন করতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অন্যদিকে নানা আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেও টিকা নিতে মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। করোনার সংক্রমণের হারও কমতে শুরু করেছে। তারপরও স্বাস্থ্যবিভাগ সবাইকে টিকা নেয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দিয়েছে।
তৃতীয় দিন মঙ্গলবার সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের টিকাদান কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায় উৎসাহ-উদ্দীপনার পাশাপাশি সুশৃঙ্খলভাবে মানুষ টিকা গ্রহণ করছেন। অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি, ডায়াবেটিস রোগী টিকা নেয়ায় মানুষের মাঝে ভয় ও জড়তা কেটে গেছে। রেজিস্ট্রেশনের জন্য আলাদা বুথ আছে। স্বেচ্ছাসেবকরা শৃঙ্খলা বজায় রাখছেন। ভ্যাকসিন নেয়ার পর বিশ্রামের ব্যবস্থাও আছে।
সুনামগঞ্জ শহরের কালীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা গীতশ্রী রায় বলেন, সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে টিকাদান কেন্দ্রে গিয়ে টিকা গ্রহণ করেছি। আমার ডায়াবেটিস থাকলেও কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনুভব করছি না। আমি টিকা নিয়ে সুস্থই আছি, ভালোও লাগছে। তিনি বলেন, সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের টিকাদানকেন্দ্রে সুশৃঙ্খল পরিবেশ দেখে আমার খুবই ভালো লেগেছে। সেখানে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবক, টিকাদানকারী এবং স্বাস্থ্যবিভাগের সংশ্লিষ্টরা হেল্পফুল। টিকাদানকেন্দ্রে ভিড় থাকলেও অব্যবস্থাপনা ছিল না। আমি মনে করি কোনো দ্বিধা-ভয় না রেখে আমাদের প্রত্যেককেই ভ্যাকসিন গ্রহণ করা উচিত। দ্রুততম সময়ে দেশবাসীর জন্য ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করায় আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ এবং আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই।
কবি হীরক তালুকদার বলেন, মহামারি করোনা থেকে মুক্তি পেতে সুরক্ষার জন্য সারাবিশ্বেই এই ভ্যাকসিন নিচ্ছে মানুষ। কিন্তু আমাদের দেশের একটি গোষ্ঠী এ নিয়ে অপপ্রচার করছে। তবে এখন সমাজের সব শ্রেণির মানুষের ভীতি দূর হচ্ছে। তারা গুজবে কান না দিয়ে ভ্যাকসিন নিচ্ছেন।
ব্যাংক কর্মকর্তা রতন কুমার রায় বলেন, টিকা নেয়ার পর আমি স¤পূর্ণ সুস্থ আছি। আমি জনগণকে ভ্যাকসিন নেয়ার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি। অপপ্রচারকারীরা যেন নেতিবাচক অপপ্রচার চালাতে না পারে এজন্যই আগে টিকা গ্রহণ করেছি। জনগণকে বলতে চাই, আমি আগে টিকা নিলাম এবং ভালো আছি। আপনারা সবাই টিকা নিন।
সিভিল সার্জন ডা. মো. শামস উদ্দিন বলেন, করোনার টিকা নিতে মানুষজন আগ্রহ দেখাচ্ছেন। দিনে দিনে টিকা গ্রহণকারীর সংখ্যাও বেড়েছে। ৪০ বছরের উপরে যে কেউ জাতীয় পরিচয়পত্র সাথে নিয়ে আসলেই করোনার ভ্যাকসিন পাবেন। সবাইকে টিকা নেয়ার পরামর্শ দিয়ে সিভিল সার্জন ডা. শামস উদ্দিন আরও বলেন, করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষার জন্য টিকার বিকল্প নেই। টিকা নিতে হবে আমাদের সবাইকে। উদ্বোধনের তৃতীয় দিন জেলায় তিনগুণ মানুষ ভ্যাকসিন নিয়েছেন।