1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৫৭ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

মাথাগোঁজার ঠাঁই নেই : কষ্টে আছে অসহায় ইদ্রিছ আলীর পরিবার

  • আপডেট সময় সোমবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০২১

আশিস রহমান ::
ঘরের চালের টিনের ফুটো দিয়ে বৃষ্টির দিনে মেঝেতে পানি পড়ে। বাঁশ-বেতের মাটির বেড়া ভেঙে হেলে পড়েছে। বেড়ার ফাঁক-ফোকর দিয়ে এখন প্রতিনিয়তই কনকনে শীতের ঠাণ্ডা বাতাস আসা-যাওয়া করে ঘরের ভেতরে। ঘরটিও বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোনো সময় ধসে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। এই ভাঙা ঘরটিতে স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের ৫ জন সদস্য বসবাস করে আসছে। মাটিতে হাঁস-মুরগি গবাদিপশুসহ কোনোরকমে গাদাগাদি করে থাকছেন দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের পেকপাড়া গ্রামের বাসিন্দা অসহায় ইদ্রিছ আলীর ও তার পরিবারের সদস্যরা।
ইদ্রিছ আলীর নিজস্ব কোনো ভিটেমাটি নেই। পারিবারিক সমস্যায় মামলা করে সব খুইয়েছেন তিনি। আত্মীয়-স্বজনও নেই। প্রায় ১৫ বছর ধরে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে থাকছেন শ্বশুর বাড়ির উঠোনের এক চালার একটা ভাঙা ঘরে। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে মাথাগোঁজার ঠাঁই একমাত্র এই ঘরটি মেরামত করতে পারছেন না তিনি। নতুন ঘর নির্মাণের সামর্থ্যও নেই তার। নিরুপায় হয়েই ভাঙা ঘরে রোদ বৃষ্টি ঠাণ্ডায় কষ্টে দিন কাটছে এই পরিবারটির। দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ায় কোনো ধরনের কাজ করতে পারেন না ইদ্রিছ আলী।
টাকার অভাবে চিকিৎসাও করাতে পারেননি। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে এখনোব্দি অসুস্থতা নিয়ে ভাঙা ঘরে বসেই বেকার সময় কাটছে তার। তিন সন্তানের পড়াশোনার খরচসহ সাংসারিক খরচ চালানো ও নিজের চিকিৎসা খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি।
ইদ্রিছ আলী জানান, নিজেই খেতে পারিনা। সন্তানদেরকেও খাওয়াতে পারিনা। চিকিৎসা খরচ চালাবো কিভাবে আর ভাঙা ঘর মেরামতইবা করব কিভাবে? আল্লাহ ছাড়া আমার আর কেউ নাই। ভাগ্যে যা আছে তাই হবে।
তার স্ত্রী রহিমা বেগম জানান, সারাদিন পরের বাড়িতে কাজ করে যা পাই তা দিয়ে কোনো রকমে খেয়ে না খেয়ে আছি। সবসময় সন্তানদের মুখে খাবার দিতে পারিনা। ঘরে থাকার জায়গা নেই। ভাঙা ঘর মেরামত করাও সম্ভব হচ্ছে না। অন্তত মাথাগোঁজার ঠাঁই টুকু পেলে খেয়ে না খেয়ে অসুস্থ স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে বাকিদিনগুলো কাটিয়ে দিতে পারতাম।
ইদ্রিছ আলীর শ্বশুর বয়োবৃদ্ধ দুলাল মিয়া জানান, মেয়ে তো আর ফেলে দিতে পারিনা। আমার বাড়িতেই ১৫ বছর ধরে আছে। আমার সামর্থ্যের যতটুকু আছে তা দিয়ে তাদের দেখাশোনা করে আসছি। নিজের আর্থিক অবস্থাও ভালোনা, বাজারে পানের ব্যবসা করে যা পাই তা দিয়ে নিজেই চলতে পারিনা। চোখের সামনে মেয়েটার পরিবারের দুরাবস্থা দেখে কষ্ট পাই।
প্রতিবেশী মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন জানান, ইদ্রিছ আলী ও তার পরিবার একদম অসহায় অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছে। সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ইদ্রিছ আলীর পরিবারকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে দিতে পারলে অসহায় এই পরিবারটি অন্তত মাথাগোঁজার ঠাঁই পেতো। প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিসহ সমাজের সকল সুহৃদয়বান ব্যক্তিদেরকে এই পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানাই।
স্থানীয় ইউপি সদস্য খোরশেদ আলাম জানান, পরিবারটির একদম গরিব ও অসহায়। আমি তাদেরকে দুই বছর মেয়াদী একটা ভিজিডি কার্ড ও একটা ফেয়ার প্রাইজের কার্ড করে দিয়েছি। এছাড়াও তাদের খোঁজখবর নিচ্ছি। সরকারিভাবে এই অসহায় পরিবারটিকে একটি ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার দাবি জানাই।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com