1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:১৭ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

বেতার ভবনে একদিন

  • আপডেট সময় সোমবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০২১

:: মো. শাহাদত হোসেন ::
রেডিওর সাথে স¤পর্ক সেই কিশোর বয়স থেকেই; ১৯৮২ সালে আমি যখন দশম শ্রেণির ছাত্র, সেই সময় থেকে। মূলত আন্তর্জাতিক বেতারের মাধ্যমে আমার রেডিওর সাথে পরিচয়। সেসময় একটি ডিএক্স ক্লাব থেকে বেতার স¤পর্কিত কিছু উপহার সামগ্রী ও অনুষ্ঠানসূচি পেয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বেতার কেন্দ্রের অনুষ্ঠান শোনা, রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো, মনিটর হিসেবে দায়িত্ব পালন, শ্রোতা-ক্লাব কার্যক্রম পরিচালনা- শখের এ শাখাগুলোতে প্রচুর সময় দেই। ছাত্রজীবন পার হয়ে পেশাজীবনে প্রবেশ করেও এ শখের ব্যাঘাত ঘটেনি।
ডিএক্সইং করতে গিয়েই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বেতার কেন্দ্রের সাথে ঘনিষ্ঠতা হয়েছে। এসব আন্তর্জাতিক বেতার কেন্দ্র কর্তৃক প্রায়ই বাংলাদেশে শ্রোতা সম্মেলনের আয়োজন করা হত। বেতারের টানে, শখের বশে কখনো কখনো এসব শ্রোতা সম্মেলনে যোগ দিতাম। ভয়েস অব আমেরিকা, ডয়চে ভেলে, চীন আন্তর্জাতিক বেতার, রেডিও জাপান প্রভৃতি বেতার কেন্দ্রগুলো তাদের অনুষ্ঠানে প্রায়ই বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালককে প্রধান অতিথি হিসেবে নিয়ে আসতো। আর সুযোগ বুঝে আমরা ডিএক্সরাগণ তখন তার কাছে বাংলাদেশ বেতার কর্তৃক ক্লাব গঠন, রেজিস্ট্রেশন ও শ্রোতা সম্মেলন আয়োজনের দাবি করতাম। বর্তমানে বাংলাদেশ বেতার যেভাবে ক্লাব ও শ্রোতা কার্যক্রম পরিচালনা করছে, এটি তারই ফসল।

গত ২১/০১/২০২১ খ্রি. তারিখ বুধবারে এই বেতারের টানে, বেতারের ভালোবাসায় গিয়েছিলাম শের-ই-বাংলা নগরে বেতার ভবনে। দেখা করেছি বেতারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন জনের সাথে; বেতার নিয়ে আলোচনা করেছি, বলেছি ও শুনেছি, স্মৃতি রোমন্থন করেছি, ভাগাভাগি করেছি আনন্দ-বেদনা। শুধু বাংলাদেশ বেতার নয়, প্রসঙ্গক্রমে কথা হয়েছে রেডিও জাপান, রেডিও তেহরান ও ভয়েস আব আমেরিকা স¤পর্কেও। তাঁদেরকে উপহার দিয়েছি ‘কিশোরগঞ্জ কেন্দ্রীয় বেতার শ্রোতা সংঘ’র ২০২১ সালের ক্যালেন্ডার। বেতার আড্ডার মধুর সে কথাই আজ বলতে চাই।
উল্লেখ্য যে, বেতার আড্ডায় সেদিন আমার সাথে ছিলেন বেতারের একনিষ্ঠ শ্রোতা কিশোরগঞ্জের মো. সাগর মিয়া এবং একাউন্টস এন্ড অডিট বিভাগে কর্মরত ভাগ্না সুনামগঞ্জের মো. জাহাঙ্গীর আলম।
বাংলাদেশ বেতারের কর্ণধার হলেন অর্থাৎ প্রধান ব্যক্তি হলেন এর মহাপরিচালক। বর্তমান মহাপরিচালকের নাম জনাব আহম্মদ কামরুজ্জামান। ভীষণ ব্যস্ততার মাঝেও স্যার আমাদেরকে সময় দিলেন, আলোচনা করলেন বেতার বিষয়ে। শর্টওয়েভ, মিডিয়ামওয়েভ ও এফএম ব্যান্ডে অনুষ্ঠান প্রচার নিয়ে কথা হয়েছে স্যারের সাথে। কথা হয়েছে অ্যাপসের বিষয়েও। এছাড়া নতুন নতুন কেন্দ্র স্থাপন, উপহারের মান ও ধরন প্রভৃতি বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। আন্তরিকতাপূর্ণ আলোচনা ভালো লেগেছে আমাদের সবার।
উল্লেখ্য, মো. সাগর মিয়ার এক প্রশ্নের জবাবে কিশোরগঞ্জে কেন ঢাকা বা ময়মনসিংহ বেতারের এফএম অনুষ্ঠান শোনা যায়না, তা তিনি সুন্দর করে বুঝিয়ে দিলেন। পরামর্শ দিলেন অ্যাপ ব্যবহারের। আবার মো. জাহাঙ্গীর আলমের কৌতুহল মেটাতে গিয়ে জানালেন যে, সুনামগঞ্জে একটি উপকেন্দ্র/স্টেশন করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে।

বাংলাদেশ বেতার, ঢাকা কেন্দ্রের প্রধান হলেন এর আঞ্চলিক পরিচালক। আমরা সাক্ষাৎ করেছি বাংলাদেশ বেতার, ঢাকা কেন্দ্রের আঞ্চলিক পরিচালক সৈয়দ মোস্তফা কামাল স্যারের সাথেও। শ্রোতা-বান্ধব ব্যক্তি হিসেবে তিনি সবার কাছে পরিচিত। ‘কিশোরগঞ্জ কেন্দ্রীয় বেতার শ্রোতা সংঘ’ গঠনের কথা জেনে তিনি খুব খুশি হলেন, দিলেন বিভিন্ন পরামর্শ।
বাংলাদেশ বেতারের প্রকৌশল বিভাগের উপপরিচালক হিসেবে কর্মরত আছেন জনাব তাপস কান্তি তালুকদার। তিনি সুনামগঞ্জ জেলার মানুষ। মূলত তাঁকে উদ্দেশ্য করেই আজ বেতার ভবনে যাওয়া। আর বেতার বিষয়ক আড্ডাও হয়েছে তাঁর রুমেই। চা-বিস্কুট খেতে খেতে গল্প হয়েছে অনেক বিষয়েই। তিনি বেতার বিষয়ক একটি প্রতিবেদন তৈরি করছেন। তাই শ্রোতাদের কাছে পেয়ে খুশি হলেন; বেতার ও শ্রোতা বিষয়ে নানা কথা বললেন। আমাদের কিছু কাজে তিনি সহযোগিতাও করলেন। ধন্যবাদ জানাই জনাব তাপস কান্তি তালুকদার মহোদয়কে তাঁর অতিথিপরায়ণতা ও অকৃত্রিম আন্তরিকতার জন্য।
বাংলাদেশ বেতারের বার্তা বিভাগে আমার দু’জন প্রাচীন সুহৃদ আছেন। একজন জনাব রেফাত আলী ও অপরজন জনাব তানিয়া নাজনীন। তাঁরা দু’জনই একসময় রেডিও জাপানে কাজ করেছেন, লিয়েনে ছিলেন। সে সুবাদেই তাঁদের সাথে আমার পরিচয়। দু’জনই আমার বেশ উপকার করেছেন। মজার ব্যাপার হল, রেফাত আলী ভাইয়ের সাথে একাধিকবার দেখা হলেও, তানিয়া নাজনীন আপার সাথে আমার এর আগে কখনো দেখা হয়নি। বেতার ভবনে এসেছি, তাই তাঁদের সাথে দেখা করার লোভ সামলাতে পারলাম না। কিন্তু তারা কে কোথায় বসেন, তা আমার জানা নেই। তাই ফোন দিলাম। রেফাত আলী ভাই জানালেন, তিনি এখন উপসচিব হিসেবে প্রশাসন ক্যাডারে আছেন।

আর তানিয়া নাজনীন আপা জানালেন, তিনি অল্পক্ষণের মধ্যেই বেতার ভবনে আসছেন। জনাব তাপস কান্তি তালুকদারের সাথে আলাপচারিতা চলা অবস্থাতেই তানিয়া নাজনীন আপা চলে এলেন। দারুণ ভালো লাগল তাঁকে দেখে। তিনি আসায় রেডিও জাপান নিয়ে অনেক আলোচনা হল। বাংলা বিভাগের তখনকার প্রধান কাজুহিরো ওয়াতানাবে, শ্রোতাদের চিঠিপত্রের অনুষ্ঠান কথা ও সুর, হাতে লেখা চিঠি ইত্যাদি নানা প্রসঙ্গই এল। আর আন্তর্জাতিক বেতারের প্রসঙ্গ আসাতে রেডিও তেহরান ও ভয়েস অব আমেরিকা নিয়েও কথা হল। আমার মেয়ে শাইরা হোসেন ম’র কথাও উঠল। কেননা তানিয়া নাজনীন আপা ও রেফাত আলী ভাই রেডিও জাপানে কর্মরত থাকাকালীন সময়েই এনএইচকে ওয়ার্ল্ড কর্তৃক ‘ডব খড়াব We Love Japanese Songs’ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠত হয়েছিল এবং ম সে প্রতিযোগিতায় দর্শক-শ্রোতা ভোটে অর্ধশতাধিক দেশের দেড় শতাধিক প্রতিযোগীকে পিছনে ফেলে সারা বিশ্বের মধ্যে প্রথম হয়েছিল।
বাংলাদেশ বেতারে গিয়ে শ্রোতা-ক্লাব সংশ্লিষ্ট কারো সাথে দেখা করব না, তা কি হয়? এ দায়িত্বে আছেন সহকারী পরিচালক তনুজা মন্ডল। বেশ কিছুক্ষণ কথা হল তার সঙ্গে। ক্লাব রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত অনেক তথ্যই জানতে পারলাম তার কাছ থেকে। তবে ‘কিশোরগঞ্জ কেন্দ্রীয় বেতার শ্রোতা সংঘ’ গঠনের কথা শুনে তিনি অবাকই হলেন। একটি জেলার সকল ক্লাবকে নিয়ে কোন জেলায় কেন্দ্রীয় সংগঠন আর কেউ করেননি। তার কাছে এটি নতুন অভিজ্ঞতা। তিনি এ সংঘের রেজিস্ট্রেশনের বিষয়ে উপপরিচালক ও আঞ্চলিক পরিচালকের সাথে কথা বলবেন। আবার ঢাকা গেলে, আমরাও তাদের সাথে কথা বলব। এটির রেজিস্ট্রেশন পেলে, আরো অনেক জেলাতেই এমন কেন্দ্রীয় বেতার শ্রোতা ক্লাব গড়ে উঠবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
[লেখক- মোঃ শাহাদত হোসেন, সহকারী অধ্যাপক, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ, গুরুদয়াল সরকারি কলেজ, কিশোরগঞ্জ।]

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com