বিশ্বম্ভরপুর প্রতিনিধি ::
সেচ সংকটের কারণে অনাবাদী থাকতে পারে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নের ৪০ একর জমি – এমন আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকরা ।
জানাযায়, ধনপুর ইউনিয়নের মমিন বাজার থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার উত্তরে, মধ্যনগর নয়াপাড়া এলাকায় আমন, বোরোসহ বিভিন্ন রকম ফসল উৎপাদনের উপযোগী প্রায় ৮০ একর জমি রয়েছে। জমির পূর্বাংশকে ভাগ করে রেখেছে সিঙ্গের খাল ছড়া, পশ্চিমাংশের মাঝখানে রয়েছে মমিন বাজার গামাইরতলা সড়ক, পশ্চিমের শেষ সীমানা ঘেঁষে রয়েছে কাউয়ারবন হাওর এলাকার তাহিরপুর অংশ।
বিএডিসি সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে শাসপুর সেচস্কীম সমবায় সমিতির পক্ষে আয়েত আলীর ছেলে শাহপরান ধনপুর ইউপির শাসপুর মৌজার ছাতারকোণা এলাকায় গত ২৩ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জ বিএডিসি’র সহকারী প্রকৌশলী হুসাইন মুহাম্মদ খালিদুজ্জামান স্বাক্ষরিত পত্রে অগভীর নলকূপ, লাইসেন্স নং ৭৬ গ্রহণ করে, তাই অনাবাদী জমি চাষের আওতায় আসছে। অন্যদিকে নতুন করে আরেকটি লাইসেন্স পাওয়ার জন্য ছাতারকোণা গ্রামের কৃষক জালাল উদ্দিন ১১ জানুয়ারি উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে ২২৩৩ দাগে অগভীর নলকূপ অনুমোদন ও বিদ্যুতায়নের জন্য আবেদন দাখিল করেছেন।
মধ্যনগর নয়াপড়া গ্রামের আব্দুল হেকিমের ছেলে কৃষক জালাল উদ্দিন বলেন, আমার বাড়ির পাশে যে, সেচ স্কিমটি আছে এখান থেকে পানি সরবরাহ হলে সড়কের পশ্চিম পাড়ের কৃষকরা তাদের জমিতে ধান চাষ করতে পারবে। অন্যথায় খালের ধারে বসানো সেচস্কিম দিয়ে আশপাশের এলাকার প্রায় ৩শ বিঘা জমি চাষ করা সম্ভব নয়।
সুরুজ আলীর ছেলে ফখর উদ্দিন বলেন, আমাদের কৃষকদের স্বার্থে আরেকটি সেচস্কিম বসানো প্রয়োজন। কারণ একটি মাত্র সেচস্কিম দিয়ে মাঝখানে সড়ক, দুই ধারে খাল কি করে সব জমিতে পানি সরবরাহ হবে?
ছাতারকোণা গ্রামের আব্দুল হাইয়ের ছেলে জজ মিয়া বলেন, ওই পক্ষের লোকজন চায় একটি সেচস্কিম থাকলে তাদের ব্যবসার সুবিধা হবে।
সফর আলীর ছেলে কৃষক আব্দুল মান্নান বলেন, একটি সেচস্কিমের মাধ্যমে পানি সরবরাহ হলে এক জমিতে পানি দিতে গিয়ে সিরিয়ালের জন্য অন্য জমি শুকিয়ে যাবে। কৃষকদের হয়রানি মুক্ত করতে নতুন সেচস্কিম অনুমোদন দেওয়া হোক।
ছাতারকোণার সামসুদ্দিনের ছেলে তারামিয়া বলেন, আমার ৩ হাল জমি আছে। কিন্তু সেচস্কিমের আওতায় না থাকার কারণে পতিত থাকতে পারে। পাশের যে, সেচ স্কিম আছে সেটি এতো জমিতে পানি সরবরাহ করতে পারবে না।
সেচস্কিম লাইসেন্স নং ৭৬ গ্রহণকারী শাহপরান জানায়, ৩০০ বিঘা জমিই এক সেচ স্কিমের মাধ্যমে চাষ সম্ভব।
জালাল উদ্দিন জানান, লেয়ার না পাওয়ায় দু’টি সেচস্কিম পাশা-পাশি রয়েছে। যদিও বিএডিসির নিয়ম অনুযায়ী পাশাপাশি সেচস্কিম অনুমোদন সম্ভব নয়। কৃষকদের স্বার্থে নতুন সেচস্কিম অনুমোদন দেওয়ার জন্য আমি অনুরোধ করছি।
ইউপি চেয়ারম্যান হযরত আলী কালাচান বলেন, বর্ণিত ফসলের মাঠের জায়গা যেহেতু খাল, সড়কের কারণে ২/৩ ভাগে বিভক্ত এবং সড়কের পশ্চিম দিকে মাটির নিচে পাথরের স্তর থাকার জন্য লেয়ার না পাওয়ায় নতুন করে অগভীর নলকূপ স্থাপন সম্ভব নয়। তাই দু’টি সেচস্কিম পাশাপাশি হলেও অনুমোদন যুক্তিযুক্ত হবে বলে মনে করি। সেহেতু নতুন করে একটি সেচস্কিম হলে কৃষকরা উপকৃত হবে।
বিএডিসি’র মাঠ কর্মকর্তা জানান, সরেজমিন পরিদর্শন করা হয়েছে বিধি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।