স্টাফ রিপোর্টার ::
নির্বাচনী প্রচারণায় মাইক ব্যবহার করছেন না আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র নাদের বখত। তবে তার প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থী প্রচারণায় মাইক ব্যবহার অব্যাহত রেখেছেন। তারা প্যারোডি গানের মাধ্যমে ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণের পাশাপাশি উচ্চ শব্দে রেকর্ডকৃত নানা স্লোগানও দিচ্ছেন। এদিকে আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী মাইকিং প্রচারণা সম্পূর্ণ বন্ধ রাখায় নাগরিকরা স্বস্তি প্রকাশ করে তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। করোনায় বিপর্যস্ত মানুষকে স্বস্তি দিতে ও ‘শব্দসন্ত্রাস’ রোধে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মাইকিং প্রচারণা বন্ধ রেখেছেন বলে জানিয়েছেন।
সুনামগঞ্জ নির্বাচনী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জ পৌর নির্বাচনে তিনজন মেয়র, ৪৯ জন কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ১৩ জন কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আগামী ১৬ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। প্রতীক পাবার পর বিধি মতে প্রার্থীরা মাইকিংসহ সবধরণের প্রচারণা চালাতে পারেন। দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মাইকিং প্রচারণা চালানোর নিয়ম করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
নাগরিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতীক পাবার পরই মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রার্থী মোরশেদ আলম ও ইসলামিক আন্দোলনের প্রার্থী রহমত উল্লাহ ওই সময়ের মধ্যে বিরামহীন মাইকিং প্রচারণা চালাচ্ছেন। তাদের মাইকিং প্রচারণায় প্রার্থীদের স্তূতি, ভোটারদের আকর্ষণ করে প্যারোডি গান ও চিত্তাকর্ষক স্লোগান বাজছে। সাধারণ মাত্রার চেয়ে উচ্চ শব্দে এই মাইকিংয়ে অনেক নাগরিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ নানাভাবে বিরূপ মন্তব্য করছেন। তবে প্রতীক পাওয়ার পরও মাইক ছাড়াই প্রচারণা চালাচ্ছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী নাদের বখত। তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণায় মাইক বর্জন করে প্রচারণা চালাচ্ছেন। সমর্থকদেরও কড়াভাবে মাইক না বাজানোর জন্য বারণ করে দিয়েছেন। তাই তাঁর পক্ষে শহরে মাইক বাজছে না।
এদিকে মেয়রের পাশাপাশি ৫নং ওয়ার্ডের ৫জন কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে কাউন্সিলর প্রার্থী বিমান রায়, গোলাম সাবেরিন সাবু, মো. শাহিন মিয়া, আনাস সিদ্দিকী ও দিলু দাস মাইক বাজানো থেকে বিরত রয়েছে। তাই বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তাদের পক্ষে পৌর শহরে মাইকিং প্রচারণা লক্ষ্য করা যায়নি। তবে এ ওয়ার্ডের অন্যান্য প্রার্থীদের মাইক বাজাতে দেখা গেছে।
মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের ‘শব্দসন্ত্রাস’ প্রতিরোধে এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন নাগরিকরা। তাদের দেখানো পথে অন্যরাও এগিয়ে এসে নাগরিকদের স্বস্তি দিবেন বলে মনে করছেন তারা।
বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী মুরশেদ আলম বলেন, আমি স্বাভাবিক প্রচারণাই চালাচ্ছি। নির্বাচন কমিশনের প্রচারণার যে বিধি রয়েছে সেটা মাথায় রেখেই প্রচার চলছে। নির্ধারিত সময়ের বাইরে মাইকিং প্রচারও চালাচ্ছি না।
আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী নাদের বখত বলেন, করোনার কারণে এমনিতেই মানুষ বিপর্যস্ত। বিশেষ করে বয়স্করা গৃহবন্ধী থাকার কারণে মানসিকভাবে আরো বিপর্যস্ত। তাদের কথা ও সাধারণ নাগরিকদের শব্দদূষণ থেকে রক্ষা করতে আমি মাইকিং প্রচারণা থেকে বিরত রয়েছি।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার উত্তম কুমার দাস বলেন, দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মাইকিং প্রচারণা চালানো যাবে। এর বাইরে মাইক বাজানোর সুযোগ নেই। আমরা সকল প্রার্থীকেই বিধি মেনে প্রচারণা চালানোর আহ্বান জানিয়েছি।