বিশেষ প্রতিনিধি ::
সাহস নিয়ে সত্য প্রকাশ অব্যাহত রাখার দৃঢ় প্রত্যয়ের মধ্য দিয়ে উদ্যাপিত হলো সুনামকণ্ঠ’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ৭ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে শুক্রবার সকালে সুনামকণ্ঠ কনফারেন্স হলে এক আনন্দঘন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
দৈনিক সুনামকণ্ঠ’র সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. জিয়াউল হকের সভাপতিত্বে এবং সম্পাদক ও প্রকাশক বিজন সেন রায়ের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি নূরুল হুদা মুকুট, সিনিয়র আইনজীবী ও কলামিস্ট হোসেন তওফিক চৌধুরী, প্রফেসর পরিমল কান্তি দে, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. জসিম উদ্দিন, লেখক সুখেন্দু সেন, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান, দৈনিক সুনামগঞ্জের ডাক সম্পাদক ও প্রকাশক অধ্যক্ষ শেরগুল আহমেদ, তাহিরপুর উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক অমল কান্তি কর, সাংবাদিক খলিল রহমান প্রমুখ।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ তাঁর বক্তব্যে বলেন, সুনামগঞ্জে আমার ব্যতিক্রম অবস্থান তৈরি করার পেছনে যাদের অবদান তারা হচ্ছেন সাংবাদিক এবং সংবাদপত্র। সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে প্রতিটি পত্রিকা দেখে দিনের কার্যক্রম শুরু করতাম। রাতেও অনলাইন পত্রিকাগুলো দেখে নিতাম। সংবাদপত্র এবং সাংবাদিকবৃন্দ আমার কার্যক্রমে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন। আমি সুনামগঞ্জ থেকে চলে যাবো কিন্তু সাংবাদিকদের কথা ভুলতে পারবো না। করোনাকালে, ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে, বন্যার সময়, ধান কাটার সময় সাংবাদিকবৃন্দ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমার সাথে কাজ করেছেন। আমি তাদের ঋণ ভুলতে পারব না। সাংবাদিকবৃন্দ সরকারি কাজের সমালোচনা করলে আমি খুশি হতাম। আনন্দিত হতাম। কারণ এতে সংশোধনের পথরেখা খুঁজে পেতাম।
তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যম সমাজের দর্পণ। যার মাধ্যমে সাধারণের কথা উঠে আসে। উন্নয়ন, সমস্যা, সম্ভাবনাসহ নানা দিক তুলে ধরার একমাত্র উপায় গণমাধ্যম। সুনামকণ্ঠ সুনামগঞ্জের সাধারণ মানুষেরই কণ্ঠস্বর। জেলার সাধারণ মানুষের প্রত্যাশার প্রতিচ্ছবি। বিগত সময়ে হাওরের ফসল রক্ষাবাঁধের কাজে অনিয়ম-দুর্নীতি তুলে ধরে সুনামকণ্ঠ বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে। এ জেলায় সরকারের উন্নয়ন, কর্মসূচি বাস্তবায়নে সুনামকণ্ঠের বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রত্যক্ষ ভূমিকা রেখেছে। সুনামকণ্ঠের যাত্রাপথ আরও দীর্ঘ হোক।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নূরুল হুদা মুকুট বলেন, সমাজের বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি ও উন্নয়নের সংবাদ সাংবাদিকরাই সকলের সামনে তুলে ধরেন। সুনামগঞ্জে কয়েকজন নেতা মনোনয়ন বাণিজ্য ও তদবির বাণিজ্যে লিপ্ত
হয়েছেন। আপনারা সেগুলো তুলে ধরুন। আপনারা চাইলে আমি তথ্য প্রমাণ দিয়ে সহায়তা করবো। আপনারা সাংবাদিক সত্যকে সত্য বলবেন মিথ্যাকে মিথ্যা। সুনামকণ্ঠ বস্তুনিষ্ঠ সত্য প্রকাশের ধারা অব্যাহত রেখেছে। নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের পক্ষে সুনামকণ্ঠ লড়ে যাবে – এই প্রত্যাশা করি।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে সততা ও সাহসের সঙ্গে পথ চলেছে সুনামকণ্ঠ। সাহসিকতার বহু দৃষ্টান্ত রয়েছে সুনামকণ্ঠের। হাওরবাসীর আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটেছে পত্রিকাটির পাতায়। সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরার পাশাপাশি বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে সুনামকণ্ঠ সোচ্চার থেকেছে।
আলোচনা সভা শেষে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটেন অতিথিবৃন্দ। পরে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদের হাতে বিদায়ী সম্মাননা স্মারক তুলে দেন সুনামকণ্ঠ’র সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মো. জিয়াউল হকসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ।
সাংবাদিক, সুধীজনদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।