মোসাইদ রাহাত ::
সুনামগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন ঘিরে প্রার্থীদের জোরালো প্রচারণা চলছে। ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাওয়া, লিফলেট বিতরণ, গণসংযোগ থেকে শুরু মাইকিং সবই করছেন প্রার্থীরা। তবে এবার কিছুটা বতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন সুনামগঞ্জ পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীরা। সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে ভোটের প্রচারণায় শব্দ দূষণ না করতে মাইকিং না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, সুনামগঞ্জ পৌরসভায় আওয়ামী লীগ-বিএনপি মনোনীত প্রার্থীসহ মেয়র পদে ভোটের মাঠে রয়েছেন ৩ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর রয়েছেন ৪৯ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর রয়েছেন ১৩ জন। যার মধ্যে সুনামগঞ্জ পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডে রয়েছেন ৯ জন কাউন্সিলর প্রার্থী। তারা হলেন বর্তমান কাউন্সিলর গোলাম সাবেরীন (টেবিল ল্যাম্প প্রতীক), অ্যাড. বিমান কান্তি রায় (পানির বোতল প্রতীক), আবু বক্কর সিদ্দিক (ব্রিজ প্রতীক), আলী আছহাব আহমদ (পাঞ্জাবি প্রতীক), এমদাদুল হক (ডালিম প্রতীক), গণেশ রায় (ব্ল্যাকবোর্ড পতীক), নিহার রঞ্জন দাস (গাজর প্রতীক), সামছুল ইসলাম পারভেজ ( উটপাখি প্রতীক) এবং সাহিন মিয়া (টিউব লাইট প্রতীক)। সুনামগঞ্জ পৌরসভায় নির্বাচনে ৯নং ওয়ার্ডে ১১ জন প্রার্থী দাঁড়ালেও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রার্থী সুনামগঞ্জ পৌরসভার এই ৫নং ওয়ার্ডে।
এদিকে, অপেক্ষাকৃত নির্বাচনী এলাকা ছোট হওয়ায় এবং প্রার্থী সংখ্যা বেশি হওয়ায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তি ও শব্দ দূষণের কথা চিন্তা করে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কাউন্সিলর প্রার্থীরা। তারা বলেন, সাধারণ মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে আমরা ভোট চাইবো। প্রয়োজন হলে গণসংযোগ বা সভা করা যায় কিন্তু একটু পর পর এক এক করে ৯ প্রার্থীর মাইকিং প্রচারণা বিষয়টি সবার জন্য খারাপ হবে। অন্যদিকে শব্দ দূষণ থেকে বাঁচতে সুনামঞ্জ পৌরসভার সকল প্রার্থীদের মাইকিং ছাড়া প্রচারণা চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন সুধীজন।
সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান তারেক বলেন, প্রার্থীরা যদি বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের প্রচারণা চালান তাহলে সবার জন্য ভালো হয়। সুনামগঞ্জ শহর অপেক্ষাকৃত ছোট শহর কিন্তু প্রার্থীর সংখ্যা অনেক। তাই পরিবেশ ও শব্দ দূষণ রোধে অন্তত মাইকিং ছাড়া প্রচারণা চালানো প্রয়োজন। এতে নির্বাচনের ব্যয় অনেকটা কমে যাবে এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের প্রতিশ্রুতির বিষয়টি জানালে ভোটারও সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
সুনামগঞ্জ পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর গোলাম সাবেরীন বলেন, সুনামগঞ্জ পৌরসভার মধ্যে ৫নং ওয়ার্ডটি ছোট। কিন্তু এবারের নির্বাচনে একই ওয়ার্ড থেকে ৯ জন কাউন্সিলর প্রার্থী দাঁড়িয়েছেন। ছোট একটি এলাকায় এতো কাউন্সিলর এবং তারা যদি মাইকিং দিয়ে প্রচারণা চালান বিষয়টি সকলের জন্য খারাপ হবে। এছাড়া শুধু কাউন্সিলর না মেয়র ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরাও যদি একসাথে মাইকিং করেন তাহলে পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতি হবে এবং ভোটারদেরও অসুবিধা হবে। তাই আমরা ৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা মিলে মাইকিং না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
কাউন্সিলর প্রার্থী অ্যাডভোকেট বিমান কান্তি রায় বলেন, সাধারণ মানুষ যাতে শব্দ দূষণের শিকার না হয় সে জন্য আমরা মাইকিং করবো না। আমরা জনসাধারণের সেবা করতে চাই, কারো ভোগান্তির কারণ হতে চাই না। আমরা ভোটারদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ভোট চাইবো। প্রচারণা চালানোর জন্য মাইকিং করাই লাগবে এমনটা কোথাও নেই।
সুনামগঞ্জ জেলা নির্বাচনী কর্মকর্তা মুরাদ উদ্দিন হাওলাদার বলেন, সব প্রার্থীর ক্ষেত্রে একই আচরণ বিধি পালন করা হবে। যারা আচরণবিধি ভঙ্গ করবেন তাদের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।