মুহাম্মদ হাবীবুল্লাহ হেলালী ::
দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের টেংরাটিলা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মজিদ বীরপ্রতীক অসুস্থ হয়ে সিলেট ডায়াবেটিস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ডায়বেটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ায় দুই দফা অপারেশন করে তাঁর বা পায়ের তিনটি আঙুল কর্তন করা হয়েছে। শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হতে থাকলে গত মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে তাঁকে সিলেট ডায়াবেটিস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওইদিনই অপারেশন করে তার বা পায়ের দুটি আঙুল কর্তন করা হয়। বর্তমানে ডায়াবেটিস হাসপাতালের ৫১০নং ওয়ার্ডের ২১নং সিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
তাঁর পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, আবদুল মজিদ বীরপ্রতীক শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ায় দিন দিন তাঁর শারীরিক অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি খেতাবপ্রাপ্ত একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হয়েও হাসপাতালের কেবিন পাননি। সাধারণ সিটে রেখেই তাঁর চিকিৎসা চালাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
আবদুল মজিদ বীরপ্রতীক ১৯৭১ সালে ৫নং সেক্টরের চেলা (বাঁশতলা) সাব-সেক্টরের বিস্তীর্ণ এলাকায় বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করেন। ১৯৭৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর সরকারি গেজেট নোটিফিকেশন অনুযায়ী বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অসীম বীরত্বের জন্য আব্দুল মজিদসহ ৪৪৪ জন রণবীরকে ‘বীরপ্রতীক’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ করে তিনি চেলা (বাঁশতলা) সাব-সেক্টরের অধীনে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের জাউয়া সেতু ধ্বংসের অভিযান এবং গোবিন্দগঞ্জ বুরকী গ্রামের যুদ্ধে দুঃসাহসী রণকৌশলের জন্য তাঁকে বীরপ্রতীক খেতাবে ভূষিত করা হয়। ১৯৯১ সালে তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর থেকে বীরপ্রতীক পদক গ্রহণ করেন এবং পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সহযোদ্ধাদের সঙ্গে একাধিকবার সাক্ষাৎ করেন। দেশ স্বাধীনের পর মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন পদক ও সম্মাননায় ভূষিত হন।