স্টাফ রিপোর্টার ::
দোয়ারাবাজার উপজেলায় সারা বছর ধরে সংস্কারহীন অবস্থায় পড়ে থাকা শহীদ মিনারগুলো বিজয় দিবসেও ছিল অবহেলিত। খোদ উপজেলা সদরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ প্রত্যন্ত এলাকার বেশ কয়েকটি শহীদ মিনারে সংস্কারের অভাবে নোংরা পরিবেশ লক্ষ করা গেছে। সামান্য রঙ পর্যন্ত করা হয়নি এসব শহীদ মিনারে। দীর্ঘদিন ধরে শ্যাওলায় ভরপুর থাকায় স্যাঁতস্যাতে কালচে রঙের আকার ধারণ করেছিল শহীদ মিনারের প্রতিটি বেদী। এসব শহীদ মিনারে বিজয় দিবসে ফুল দিতে এসে হতাশ হয়েছেন অনেকেই। অনেকে আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
শহীদ মিনার সংস্কার না করায় অনেক জায়গায় বিজয় দিবসের রাতেই স্বেচ্ছায় শহীদ মিনার সংস্কার করে দিয়েছেন স্থানীয়রা। সরজমিনে ঘুরে দেখাগেছে, বিজয় দিবসের মতো তাৎপর্যপূর্ণ দিনেও অগোছালো ও অবহেলিত ছিল শহীদ মিনারগুলো।
উপজেলা সদরের মডেল উচ্চ বিদ্যালয় শহীদ মিনারটিকে উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার বলা হয়ে থাকে। এই শহীদ মিনারটিতে শ্রদ্ধা জানাতে আসে উপজেলার বিভিন্ন প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ মানুষ। বিজয় দিবসেও সংস্কারহীন ছিল এই শহীদ মিনারটি। বিজয় দিবসে শ্রদ্ধা জানাতে এসে এই শহীদ মিনারের বেহাল দশা দেখে তাৎক্ষণিকভাবে ওইদিন রাতেই শহীদ মিনার পরিষ্কার করে চুনকাম করে দিয়েছেন নৈনগাঁও গণহত্যায় শহীদ হওয়া শহীদ পরিবারের স্বজনেরা। শহীদ পরিবারের স্বজন ও দোয়ারাবাজার সরকারি ডিগ্রী কলেজ ছাত্রলীগের আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন জানান, শহীদ মিনারের সাথে আমাদের দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধসহ বাঙালি জাতির ত্যাগ ও তিতিক্ষার ইতিহাস ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মহান ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অম্লান স্মৃতির ধারক ও বাহক এই শহীদ মিনার। সংস্কারের অভাবে অবহেলায় পড়ে থাকা শহীদ মিনারের এই দৃশ্য আমাদেরকে ব্যথিত করেছে। তাই আমরা নিজেরাই নিজেদের সাধ্যমত শহীদ মিনার সংস্কার করে দিয়েছি।’
শুধু উপজেলা সদরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারই নয়, উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটিও অবহেলিত অবস্থায় ছিল। বাংলাবাজার ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ও ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয় লাগোয়া অবহেলিত এই শহীদ মিনারটি বিজয় দিবসের রাতেই স্বেচ্ছায় পরিষ্কার করে চুনকাম করে দেয় স্থানীয় কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী। এছাড়া মান্নারগাঁও ইউনিয়নের আমবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারটিও অবহেলায় পড়ে আছে। ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় এই শহীদ মিনারটি নির্মাণের প্রায় এক বছরেরও অধিক সময় পেরিয়ে গেলেও এখনোব্দি রঙ কিংবা চুনকাম করানো হয়নি এটিতে।
উপজেলা সদর, বাংলাবাজার এবং আমবাড়ি ছাড়াও উপজেলার বেশ কয়েকটি শহীদ মিনার বিজয় দিবসেও রঙ ও সংস্কার করা হয়নি। ১৬ ডিসেম্বর শহিদ মিনারে জমায়েত হওয়া জনতা এ নিয়ে ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। জনসাধারণ এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের উদাসীনতায় চরম হতাশা ব্যক্ত করেছেন।