স্টাফ রিপোর্টার ::
ভারি বর্ষণ, পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতিতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। জেলায় অন্তত ৩২টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৪৪ হাজার পরিবার। বন্যা কবলিত এলাকায় ৭৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রেখেছে প্রশাসন। ইতোমধ্যে ১৪৮টি পরিবারকে নেয়া হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রে।
এদিকে, উজান থেকে নেমে আসা পানি প্রবল তোড়ে সুনামগঞ্জ-জামালগঞ্জ সড়কের ঘাঘটিয়া এলাকায় এবং সুনামগঞ্জ-ছাতক সড়কের কাটাখালি এলাকায় রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় জেলা সদরের সাথে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। স্থানীয় অনেক সড়ক পানির নিচে তলিয়ে যাওয়া যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে।
এদিকে, সুনামগঞ্জ পৌরএলাকার বেশিরভাগ এলাকা ঢলের পানিতে প্লাবিত হওয়ায় তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট। বাসাবাড়ি ও দোকানপাটে ঢুকে পড়েছে বানের পানি। ভোগান্তিতে পড়েছেন মানুষ।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের হালুয়ারঘাট এলাকায় সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, জেলা সদরের সাথে তিনটি ইউনিয়নের যোগাযোগের একমাত্র সড়কটির উপর দিয়ে হাঁটু সমান পানি প্রাবাহিত হচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে আছেন হাজারো মানুষ। সড়কের দুইপাশের অনেক মৎস্য খামারের মাছ ভেসে গেছে বানের পানিতে। যারপরনাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন খামারিরা।
ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তার বলেন, আমার ইউনিয়নের ২৯টি গ্রামের সবগুলো বন্যা দুর্গত। সবার ঘরবাড়িতে পানি ঢুকেছে। মানুষ গত দুইদিন ধরে পানিবন্দি হয়ে আছেন। চুলা জ্বলছে না অনেকের ঘরে। এমন পরিস্থিতিতে তাদের জন্য ত্রাণ হিসেবে শুকনো খাবার বিতরণ করা জরুরি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, রোববার ভোর ৬টায় সুরমা নদীর ষোলঘর পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৭০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১৯০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ জানান, দুর্গত মানুষকে সহায়তার জন্য ৪১০ মেট্রিকটন চাল, ২৯ লাখ ৭০ হাজার নগদ টাকা ও ৫ হাজার পরিবারের জন্য শিশুখাদ্য বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেগুলো দুর্গত মানুষের মাঝে বিতরণ করা হবে।