স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জে বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন সম্মুখ সারির যোদ্ধা চিকিৎসক ও নার্সরা। কিন্তু বিগত কয়েকদিন ধরে সুনামগঞ্জে করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা। প্রতিদিন পুলিশ সদস্যদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে শহরের মানুষদের। দায়িত্ব পালনকালে কার মাধ্যমে সংক্রমিত হয়েছেন তারা নিজেরাই তা জানেন না। মানুষকে ঘরমুখী করতে গিয়ে তারা করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন জানিয়েছেন।
বুধবার (২৭ মে) রাতে সুনামগঞ্জের আরও পাঁচজন পুলিশ ও একজন চিকিৎসকসহ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ছয়জন। সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিসিআর ল্যাবে ৯৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে ছয়জনের পজেটিভ রিপোর্ট আসে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ১১৪ জন। এছাড়া এ নিয়ে জেলায় মোট পুলিশ সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন ১৩।
জানা যায়, জেলায় আক্রান্ত প্রত্যেক পুলিশ সদস্য সুনামগঞ্জ পুলিশ লাইন্সে থাকতেন এবং সেখান থেকেই জেলার বিভিন্ন জায়গায় দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে সুনামগঞ্জে করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের পুলিশ লাইন্স হাসপাতালের আইসোলেশনে ইউনিটে রাখা হয়েছে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তাদের সেবা দেয়া হচ্ছে।
করোনায় আক্রান্ত এক পুলিশ সদস্য বলেন, করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে আমাদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। চিকিৎসকরা আমাদের যেভাবে বলছেন আমরা সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছি। আমরা শারীরিকভাবে সুস্থ ও মানসিকভাবে শক্ত রয়েছি। এছাড়াও পুলিশ সুপার স্যার আমাদের নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন। আমাদের দায়িত্ব ছিল বাইরে। হয়তো কারও কাছ থেকে সংক্রমিত হয়েছি। সবাইকে বলতে চাই দয়া করে ঘরে থাকুন। কারণ আপনি যদি ঘরে থাকেন তাহলে সুস্থ থাকবে আপনার পরিবার।
এদিকে সুনামগঞ্জে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় জনসমাগম এড়িয়ে মাস্ক পরে চলার আহ্বান জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. শাসম উদ্দিন। তিনি বলেন, যেহেতু এটি সংক্রমিত রোগ তাই প্রত্যেককে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই চলাফেরা করা প্রয়োজন। সুনামগঞ্জে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও এখন পর্যন্ত কেউ মারা যাননি। এটি আমাদের জন্য প্লাস পয়েন্ট। এখন পর্যন্ত সুনামগঞ্জে ৬০ জন সুস্থ হয়েছেন, যেটি আমাদের জন্য ভালো খবর।
সিভিল সার্জন আরও জানান, বুধবার সুনামগঞ্জে আরও ছয়জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যাদের মধ্যে পাঁচজন পুলিশ ও একজন চিকিৎসক রয়েছেন। তাদের দ্রুতই আইসোলেশনে নিয়ে আসা হবে।
পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, করোনা পরিস্থিতির শুরুর দিক থেকেই পুলিশ সদস্যরা মাঠে ছিলেন, তারা নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। কাজেই বলা যায় আমাদের পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালনকালে কারও কাছ থেকে সংক্রমিত হয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের শারীরিক অবস্থা ভালো রয়েছে।