1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০২:১৬ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

বাবা-মায়ের পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ডা. মঈন

  • আপডেট সময় বুধবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২০

বিশেষ প্রতিনিধি ::
মা-বাবার কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক গরিবের ডাক্তার খ্যাত ডা. মঈন উদ্দিন (৪৭)।
বুধবার রাত ৮ টায় একটি অ্যাম্বুল্যান্সে করে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি ছাতক উপজেলার উত্তর খুরমা ইউনিয়নের নাদামপুর গ্রামে নিয়ে আসা হয় তার মরদেহ। লাশের সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী ডা. ইশরাত জাহান ও ভগ্নিপতি খসরুজ্জামান।
জনপ্রিয় এই ডাক্তারকে শেষ বিদায় জানাতে বাড়ির আশপাশে আত্মীয়-স্বজন, শুভাকাঙ্ক্ষিরা ভিড় করলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে বাড়ির আশপাশে না আসতে অনুরোধ করা হয়।
এদিকে, ডা. মঈনের মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসলে সেখানে সৃষ্টি হয় এক শোকাবহ পরিবেশের। স্বজনদের কান্নায় ভারি হয়ে ওঠে চারপাশ। স্বাস্থ্যগত বিধিনিষেধ ধাকায় প্রিয় মানুষটিকে শেষবারের মতো দেখতে পারেননি উপস্থিত স্বজনেরা।
সোয়া আটটায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্ধারিত করে দেওয়া ছয় ব্যক্তি পিপিই পরে অংশ নেন ডা. মঈনের জানাজা ও দাফনে। জানাজায় ইমামতি করেন তার আত্মীয় পোসমাস্টার ইস্রাইল আলী।
ছাতক উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. গোলাম কবির জানান, আমারা আশপাশের তিন গ্রামের মসজিদে মাইকিং করে জানিয়ে দিয়েছি মরদেহ বাড়িতে আসার পর কেউ যাতে ভিড় না করেন। সেইসাথে জানাজা ও দাফনের জন্য ছয়জন ব্যক্তিকে নির্ধারিত করে দিয়ে তাদেরকে পিপিই প্রদান করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মৃত্যুকালে ডা. মঈন চিকিৎসক স্ত্রী, দুই শিশুপুত্র, তিন বোন এবং আত্মীয়-স্বজন ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তিনি ছিলেন নাদামপুর গ্রামের মৃত মুন্সি সিদ্দেক আলীর দ্বিতীয় ছেলে। বাবা-মাসহ তিন ভাইয়ের সকলেই ইতোপূর্বে প্রয়াত হয়েছেন। প্রাথমিকের পড়াশোনা করেছেন গ্রামের স্কুলে। পাশের ধারন উচ্চ বিদ্যালয়ে মাধ্যমিক ও সিলেট এমসি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশের ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন তিনি।
স্থানীয়রা জানান, ডাক্তার মঈনের অকাল মৃত্যুতে ছাতক উপজেলাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সর্বত্রই আলোচিত হচ্ছে তার পরোপকারের নানা ঘটনা। ডাক্তারি পাস করার পর সরকারি চাকরি নিয়ে মেডিকেল অফিসার হিসেবে প্রথম যোগদান করেন ছাতক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেখানে চাকরিকালীন সময়ে টানা চার বছর বাড়ির পাশের গোবিন্দগঞ্জ পয়েন্টের একটি ফার্মেসিতে চেম্বার খুলে গরিব মানুষকে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন। ওষুধ কেনার সামর্থ নেই এমন রোগীদের পকেটের পয়সা খরচ করে ওষুধও কিনে দিতেন তিনি। সিলেট ওসমানী মেডিকেলে সহকারী অধ্যাপকের দায়িত্ব পাওয়র পর থেকে সুযোগ পেলেই গ্রামের বাড়িতে এসে বিনামূল্যে রোগী দেখতেন মঈন। তার এই মানবসেবামূলক কর্মকাণ্ডের কারণে এলাকায় পরিচিতি পান ‘গরিবের ডাক্তার’ হিসেবে।
উল্লেখ্য, গত ৫ এপ্রিল ডা. মঈন উদ্দিনের শরীরে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর থেকে তিনি নিজ বাসায় কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। ৭ এপ্রিল রাতে তার অস্বাভাবিক শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়ায় তাকে সিলেট সদর হাসপাতালের করোনা সেন্টারের আইসোলেশনে নেওয়া হয়। পরদিন আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যাওয়া হয় রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার ভোরে মারা যান তিনি।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com