ভোর থেকে পাখির ডাক। সুন্দর সকাল। বসন্তের সকাল, দুপুর, রাত খুব সুন্দর। আড্ডাপ্রিয় মানুষদের সড়ক ডাকে। রিকসায় ঘুরে বেড়াতে মন চায়। রাস্তার মোড়ে মোড়ে চায়ের আড্ডা টানে। কত সুন্দর সজীব প্রকৃতি। মায়াবী সুনামগঞ্জের প্রিয় সড়ক, বাজার, আর পয়েন্টের টান নিয়ে ঘরে বসে থাকা। এ যেন কঠিন যুদ্ধ সবার। মনের সাথে। প্রতিদিনের অভ্যাসের সাথে। প্রাণঘাতী করোনা দেখা যায় না। সজীব প্রকৃতির প্রিয় শহর দেখা যায়। পয়েন্ট ডাকে। চায়ের স্টল ডাকে। যেতে ইচ্ছে হবেই। প্রিয় স্বজন; যাবেন না। ঘরে থাকুন। রোববার সুনামগঞ্জ লকডাউন হয়েছে। সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন জেলার প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী। দোয়ারাবাজার উপজেলার এক মহিলা। উনার সুস্থতা কামনা করি। উনাকে সুস্থ করার জন্য যে ডাক্তার আর স্বাস্থ্যকর্মীরা কাজ করছেন তাদের জন্য শুভ কামনা। করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামা চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের অভিবাদন।
প্রিয় স্বজনেরা; সুন্দর প্রকৃতি দেখা যাচ্ছে। তার ফাঁকে লুকিয়ে থাকা প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসকে দেখছেন না। এটি দেখা যায় না। কে কখন আক্রান্ত হবেন জানি না। আমাদের সুন্দরকে বিষাক্ত করেছে করোনা। এই বিষাক্ত সুন্দরের কাছে যাওয়া যাবে না। ১৯৮৬ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের চেরনোবিল পারমাণবিক দুর্ঘটনার কথা নিশ্চয় মনে আছে। সেই দুর্ঘটনার তেজষ্ক্রিয়তা ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের জাপানে নিক্ষিপ্ত পারমাণবিক বোমার ৫০০টির সমান। সেই চেরনোবিলও সবুজ সুন্দর। সেখানে কাউকে যেতে দেয়া হয় না। কোথাও কেউ ¯পর্শ করতে পারে না। রয়ে যাওয়া তেজষ্ক্রিয়তাতে মৃত্যু হতে পারে বলে। করোনা এখন শুধু আক্রান্ত থেকেই আক্রান্ত হয় না। আক্রান্তের হাঁচি-কাশি থেকে ও ছড়ায়। কাজেই দয়া করে বাইরে যাবেন না। কষ্ট হলেও ঘরে থাকুন। নিজে নিরাপদ থাকুন, প্রিয় মানুষদের নিরাপদ রাখুন। দেশকে নিরাপদ রাখুন। আমাদের ঘনবসতির দেশে ব্যাপক সংক্রমণ হলে চিকিৎসাই অনিশ্চিত হয়ে যাবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। কোন খারাপ সময়ই স্থায়ী নয়।
“মানুষের ভেতর কতো যে দীর্ঘশ্বাস,
জমাট বেঁধে আছে
কতো যে ক্রন্দন, পাতা ঝরার শব্দ…”
দুঃসময় কেটে যাবে। তখন সবাই বেঁচে থাকার আনন্দ করব।
[অ্যাড. পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ, সংসদ সদস্য, সুনামগঞ্জ-৪]