স্টাফ রিপোর্টার ::
ছাতক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল অফিসার পদে কর্মরত এক ডাক্তার পুলিশের হাতে লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন চিকিৎসকগণ।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শহরের মেডিকেল রোডে পুলিশের হাতে লাঞ্ছনার শিকার হন ডা. তোফায়েল আহমেদ সনি। পরবর্তীতে পুলিশের পক্ষ থেকে ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করা হলেও অভিযুক্ত উপ-পরিদর্শকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ডাক্তারদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে চিকিৎসকদের সংগঠন বিএমএ, সুনামগঞ্জ জেলা শাখা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ছাতক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্ব পালন শেষে জরুরি কাজে বের হন মেডিকেল অফিসার ডা. তোফায়েল আহমেদ সনি। এ সময় ছাতক থানার উপ-পরিদর্শক মান্নানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টহল দল সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতের লক্ষ্যে সেখানে যায়। যাওয়ার পর পর উপস্থিত লোকদের লাঠিচার্জ শুরু করেন উপ-পরিদর্শক আব্দুল মান্নান। এ সময় ডা. সনিকেও লাঞ্ছিত করা হলে তিনি নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দেন। পরিচয় পাওয়ার পর তাকে কোন কিছু না বলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে পুলিশ। পরবর্তীতে ডাক্তারদের পক্ষ থেকে বিষয়টি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানো হয়। সন্ধ্যার পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় ব্যবসায়ী আসাদ জানান, সন্ধ্যায় পুলিশ এসে রাস্তায় যাকে পেয়েছে তাকেই লাঠিপেটা শুরু করে। এক পর্যায়ে ডাক্তারকেও লাঞ্ছিত করে তারা।
ছাতক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল অফিসার ডা. তোফায়েল আহমেদ সনি এই ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করার কথা জানিয়েছেন।
সুনামগঞ্জ বিএমএ’র সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. আব্দুল হাকিম বলেন, ছাতকে পুলিশের হাতে ডাক্তার লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা শুনেছি। পরবর্তীতে বিষয়টি মিটমাটও হয়ে গেছে। কিন্তু জড়িত পুলিশ কর্মকর্তার উচিত ছিল ডাক্তার পরিচয় পাওয়ার পর তার কাছে দুঃখ প্রকাশ করা। সেটা না করায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় আমরা মর্মাহত হয়েছি। আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে এই ঘটনার নিন্দা ও জড়িত ব্যক্তির শাস্তি দাবি করছি।
তিনি আরো বলেন, করোনা পরিস্থিতির মাঝে ডাক্তাররা জীবনের ঝুঁকি সাধারণ মানুষকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এক্ষেত্রে তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি পুলিশকেই সবার আগে নিশ্চিত করতে হবে।
সুনামগঞ্জ বিএমএ’র সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সৈকত দাস বলেন, করোনার এই সংকটময় সময়ে ডাক্তারদের পরিবহন ও চলাফেরার ক্ষেত্রে কিছু কিছু জায়গায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা অসহযোগিতার খবর পাচ্ছি। ছাতকে একজন উপ-পরিদর্শকের বিরুদ্ধে ডাক্তারকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উনি ডাক্তারকে চেনা সত্বেও ইচ্ছাকৃতভাবে রাস্তায় লাঞ্ছিত করেছেন। এই পুলিশ সদস্যের বিচার দাবি করছি।
তবে ‘এমন কোনো ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানেন না’ বলে জানান ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফা কামাল।
পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, ডাক্তারদের সাথে এমনটা হওয়ার কথা না। আমি বিষয়টি খোঁজ-খবর নিয়ে দেখছি।