স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জে ঝরেপড়া শিক্ষার্থীদের পাঠদানে নিয়োজিত শিক্ষিকাদের নিয়ে ‘শিক্ষাসেবিকা সম্মেলন ও কর্মশালা’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকাল ১০টায় দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার শান্তিগঞ্জ এফআইভিডিবি সম্মেলন কক্ষে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আশা এ কর্মশালার আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ।
তিনি বলেন, হাওর অধ্যুষিত সুনামগঞ্জের দুর্গম ভৌগোলিক অবস্থার কারণে প্রাকৃতিক প্রতিবন্ধকতাকে মোকাবেলা করে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা করতে হয়। বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর বাবা-মায়ের আর্থিক অবস্থা ভাল না থাকার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনে। শিক্ষা উপকরণ থেকে শুরু করে ভাল পোশাক থেকে বঞ্চিত হয় তারা। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগও জরুরি। কারণ সারাদেশের মধ্যে এই জেলায় ঝরেপড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি। এ জন্য এখানে বিশেষ শিক্ষা কার্যক্রম গ্রহণ করাও দরকার।
সংস্থার ডিরেক্টর হামিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও এডিশনাল ডিভিশনাল ম্যানেজার মো. কামরুল হাসানের সঞ্চালনায় কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেবুন নাহার শাম্মী, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জিল্লুর রহমান, আশা’র অ্যাসিসটেন্ট ডিরেক্টর মো. নজরুল ইসলাম।
সম্মেলনে জানানো হয়, আশা ২০১১ সাল থেকে সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচির অংশ হিসেবে দেশের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সহায়তা ও ঝরেপড়া রোধে ‘প্রাথমিক শিক্ষা শক্তিশালীকরণ কর্মসূচি’র আওতায় সারাদেশে ১৮৯৫০টি শিক্ষাকেন্দ্রের মাধ্যমে দরিদ্র পরিবারের পাঁচ লাখের বেশি শিশুকে প্রাক-প্রাথমিক, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের পাঠদান ও শিক্ষা সহায়তা প্রদান করছে। সুনামগঞ্জের পাঁচটি উপজেলায়ও ঝরেপড়া ৫ হাজার ২৮১ জন শিক্ষার্থীকে ২১০টি কেন্দ্রের মাধ্যমে পাঠদানের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। চলতি বছর ১৫টি শিক্ষাকেন্দ্র পঞ্চম শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়েছে। প্রতিটি শিক্ষাকেন্দ্রে একজন শিক্ষাসেবিকা দায়িত্ব পালন করছেন। শিক্ষার্থী ঝরেপড়া হ্রাস, নি¤œ ও নি¤œ মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের পাঠ আয়ত্ব করতে সহায়তা, শিক্ষার মানোন্নয়নে সহায়তা, প্রাক প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্তরে পরিচর্যার মাধ্যমে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করা হচ্ছে এই কর্মসূচির লক্ষ্য।
সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন আশা’র সিলেট ডিভিশনাল ম্যানেজার ইসকান্দর মীর্জা, এডিশনাল ডিভিশনাল ম্যানেজার আবু তাহের চৌধুরী, সাংবাদিক আবেদ মাহমুদ চৌধুরী, জেলা ম্যানেজার পূর্ণেন্দু গোস্বামী, সিনিয়র শিক্ষা অফিসার মো. শহিদুল ইসলাম, আরএম মো. আমিনুল ইসলাম, হরেন্দ্র চন্দ্র পাল, ক্ষিতিশ চন্দ্র দাশ, মো. নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
উল্লেখ্য, দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত সম্মেলনে জেলার ১২০টি শিক্ষাকেন্দ্রে কর্মরত শিক্ষাসেবিকাসহ আশা’র ব্রাঞ্চ ম্যানেজার, শিক্ষা কর্মকর্তা ও সুপারভাইজারগণ অংশ নেন।