জয়ন্ত সেন ::
শাল্লা ও দিরাই উপজেলার অন্তর্গত বরাম হাওরের ফসলরক্ষায় বেশক’টি বাঁধে প্রায় দেড় কোটি টাকার প্রকল্প নিয়ে হবিবপুর-নওয়াগাঁও বাসিন্দাদের মাঝে চাপা ক্ষোভ দেখা গেছে। সংশ্লিষ্ট প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) লোকজনই বলছেন কর্মকর্তা যখন জরিপ করেন তখন তারা এলাকাবাসীর মতামত না নিয়ে মনগড়াভাবে প্রকল্প তৈরি করেন। ফলে সরকারের প্রায় দেড় কোটি টাকা অপচয় হবে।
এলাকাবাসী বলছেন, স্থানীয় মানুষের মতামত নিয়ে পিআইসি গঠন করলে সরকারের এতো বিপুল পরিমাণ অর্থের অপব্যয় হতো না। নওয়াগাঁও গ্রাম সংলগ্ন দাড়াইন নদীর উত্তর দিকের মরা শাখাটি বন্ধ করলেই সরকারের কোটি কোটি টাকা রক্ষা হতো। ওই শাখাটি নৌপথের যাতায়াতেও কোনো কাজে আসেনি বলে জানালেন এলাকাবাসী। তারা বলছেন, এখানে একটি পিআইসি দিলেই আর ১০টি পিআইসির প্রয়োজন পড়েনা।
নওয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা শৈলেন দাস বলেন, নদীর এই মুখটি বন্ধ করলেই আর দিরাই-শাল্লার ৮/১০টি পিআইসি লাগে না। একই গ্রামের বাসিন্দা সজল দাস বলেন, ২ কোটি টাকার মাটি এখানে ফালাইলে ৫শ হাত ফাস (প্রস্থ) কইরা বান দেওন যাইবো। এতে অন্তত ২শ পরিবার বসতবাড়ি বানাতে পারতো।
১৪ নং প্রকল্পের সভাপতি প্রাণেশ দাস বলেন, নদীর গা ঘেঁষে বাঁধ না দিয়ে পূর্বদিকে ৫০ হাত এগোলেই আমার বাঁধটি আর ঝুঁকির মুখে পড়তো না। তিনি বলেন, নদীর ওই মরা শাখাটির মুখ বন্ধ করলে সবার সুবিধা হতো।
অধ্যাপক তরুণ কান্তি দাস বলেন, সরেজমিনে দেখে মনে হলো গ্রামবাসীদের প্রস্তাবটিই উত্তম। প্রাক্কলনে যে ত্রুটি রয়েছে তা দেখেই বুঝা যায়। তিনি আরো বলেন, এখানে এতগুলো পিআইসির প্রয়োজন ছিল না। এই মরা শাখাটির উপরে একটি বাঁধ দিলে গ্রামবাসী অনেক সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারতো। নদীর পাড়ে গ্রামের অবস্থান হওয়ায় গ্রামটি ভেঙে বসতবাড়ির ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়া নদীটিতে এমনিতেই অর্ধেকের বেশি জায়গায় চর পড়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে এই শাখাটি ভরাট হলে নতুন বসতি গড়ে উঠতো। পাশাপাশি সরকার নদীর ওই উন্মুক্ত শাখাটি লিজ দিয়ে রাজস্ব বাড়াতে পারতো। অন্যদিকে ১০টি পিআইসি দিয়ে সরকারের কোটি কোটি টাকার অপচয় হতো না।
এ বিষয়ে পাউবো’র উপ-প্রকৌশলী আব্দুল কাইয়ুম বলেন, আপনি অফিসে আসুন, কথা বলবো সাক্ষাতে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মুক্তাদির হোসেন বলেন, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে।