বিশেষ প্রতিনিধি ::
আওয়ামী লীগের সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন শফিক সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা জাতির সম্মুখে দিয়েছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে আজ যে আন্দোলন চলছে সেটা অন্য কারো বিরুদ্ধে না, সেটা আত্মশুদ্ধির আন্দোলন আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করা জন্য, শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য। অতএব, যারা দুর্নীতির সাথে জড়িত, ইতিমধ্যে যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলা চলমান, তাদেরকে আমি স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই, আগামীতে এই সুনামগঞ্জে কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে তারা আসীন হতে পারবেন না। তবে তারা দল করতে পারবেন, সদস্য থাকতে পারবেন। কিন্তু তাদেরকে আত্মশুদ্ধির মধ্যদিয়ে প্রমাণ করতে হবে যে, তাদের দলের প্রতি ও শেখ হাসিনার গভীর শ্রদ্ধা, ভালবাসা ও দায়বদ্ধতা রয়েছে। যারা মাদক ব্যবসা, সেবন, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, জমিদখলের সাথে জড়িত তাদের ব্যাপারে আমাদেরকে তথ্য দিবেন, আমরা অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
মঙ্গলবার বিকেলে সুনামগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি নূরুল হুদা মুকুটের সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আফতাব উদ্দিন, রেজাউল করিম শামীম, অ্যাডভোটে অবনী মোহন দাস, পৌর মেয়র নাদের বখত, সাধারণ সম্পাদক এনামুল কবীর ইমন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হায়দার চৌধুরী লিটন, সাংগঠনিক সম্পাদক জুনেদ আহমদ।
শাখাওয়াত হোসেন শফিক আরো বলেন, সিলেট বিভাগে তৃণমূল পর্যায়ের আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত রূপ দিতে জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। অতীতে কী হয়েছিল, না হয়েছিল সেদিকে না তাকিয়ে বর্তমান ও আগামীর কথা বিবেচনা করে সংশোধন, সংযোজন ও পরিবর্তনের মধ্যদিয়ে দলকে শক্তিশালী করতে হবে। আমি এখানে যা দেখেছি, সেই চিত্র নেত্রীর কাছে হুবহু তুলে ধরব।
তিনি বলেন, আপনারা জায়গা করে না দিলে বিএনপি-জামাত কী করে দলে ঢোকার সুযোগ পায়। জঙ্গি, মৌলবাদ, জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসীদের হাতে আমাদের বহু নেতাকর্মী জীবন দিয়েছেন। তারা আমাদের সাথে রাজনীতি করবে, মিছিল করবে, সেটা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। তাদেরকে যারা যারা সুযোগ করে দিয়েছেন তাদেরকে আপনারা কেন প্রতিহত করতে পারেন না। কেন আমাদেরকে সমালোচনার শিকার হতে হবে।
এর আগে প্রতিনিধি সভায় সাংগঠনিক অবস্থা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও আহ্বায়করা।
এদিকে, প্রধান অতিথির বক্তৃতার পূর্বে পৌর মেয়র নাদের বখত কথা বলার সুযোগ নিয়ে বলেন, দুই বছর হলো পৌর মেয়র নির্বাচিত হয়েছি, কিন্তু আমি কিংবা আমার পরিবারের কাউকে আওয়ামী লীগের কোন পদ দেওয়া হয়নি। জেলা আওয়ামী লীগে ভাই-ভাই, মামা-ভাগ্না পিতা পুত্র জায়গা পেয়েছেন। কিন্তু তিন সন্তান নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক আমার পিতার সন্তানরা বঞ্চিত হয়েছেন।
তার বক্তব্যের জবাবে সভাপতির বক্তৃতায় নূরুল হুদা মুকুট বলেন, মেয়র নাদের বখত ভুলে গেছেন যে, তিনি আওয়ামী লীগের নৌকা নিয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তাকে বিজয়ী করার জন্য গোটা দল খেটেছে। তার প্রয়াত ভাই আয়ূব বখত জগলুল ছিলেন আওয়ামী লীগে জাতীয় কমিটির সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি।