স্টাফ রিপোর্টার ::
দোয়ারাবাজার উপজেলার দোহালিয়া ইউনিয়নের সিদ্দিকীয়া আকবর (রা.) লতিফিয়া দাখিল মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে চলতি বছরের দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি ১৫ জন কোমলমতি শিক্ষার্থী।
প্রয়োজনীয় ফি নেওয়ার পরও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ওই ১৫ জন দাখিল পরীক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন না করায় তাদের অনুকূলে প্রবেশপত্র দেয়নি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড। পরীক্ষার আগের দিন শিক্ষার্থীরা জানতে পারে তাদের প্রবেশপত্র আসেনি। পরিস্থিতি প্রতিকূল দেখে আত্মগোপনে চলে যান মাদ্রাসা সুপার মাওলানা আব্দুল মুকিত। এই ঘটনায় শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও পরিচালনা কমিটির চরম গাফিলতির দায়ভার এখন ভোগ করছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। মাদ্রাসায় তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে তারা। বিচারের জন্য প্রশাসনসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের দ্বারস্থ হচ্ছে।
জানা গেছে, ১৫ শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে না পারায় তোপের মুখ থেকে বাঁচতে ইতোমধ্যে চম্পট দিয়েছেন মাদ্রাসা সুপার মাওলানা আব্দুল মুকিত। এরপর থেকে তাকে আর খোঁজে পাচ্ছেন না ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির দায় নিচ্ছেন না মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার মিয়া আনু-সহ কমিটির অপরাপর সদস্যরা।
এদিকে, পরীক্ষার প্রবেশপত্র না পেয়ে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পরীক্ষা দিতে না পারা শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ করেছে।
জানা গেছে, ১৯৯৪ সালে দোহালিয়া ইউনিয়নে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় সিদ্দিকীয়া আকবর (রাঃ) লতিফিয়া দাখিল মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠিত হয়। চলতি বছর দাখিল পরীক্ষা অংশ নেওয়ার জন্য ১৫ জন রেজিস্ট্রেশন করে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে শিক্ষার্থীদের অনুকূলে প্রবেশপত্র বরাদ্দ দেয়নি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড। ফলে পরীক্ষায় অংশ নেয়া থেকে বঞ্চিত হয় শিক্ষার্থীরা। শিক্ষাজীবনের গুরুত্বপূর্ণ এই ধাপে এসে এমন হোঁচট খাওয়ায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে ওইসব শিক্ষার্থীরা। পরবর্তী বছরও তারা পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে কি না সে ব্যাপারে খোলাসা করে কিছুই বলছে না কর্তৃপক্ষ।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আমরা সময় মতো ফি পরিশোধ করে রেজিস্ট্রেশন করলেও মাদ্রাসা সুপার মাওলানা আব্দুল মুকিত ও কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে তাদের দাখিল পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। আমাদের শিক্ষাজীবন নষ্ট করে মাদ্রাসা সুপার এখন এলাকাছাড়া। মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটিও আমাদেরকে কোনরূপ সহযোগিতা করছেন না।
মাদ্রাসা সুপার মাওলানা আব্দুল মুকিতের বক্তব্য নিতে তার মোবাইল ফোনে বার বার যোগাযোগ করা হলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মেহের উল্লাহ বলেন, মাদ্রাসা সুপার দাখিল পরীক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন না করিয়ে তাদের আবার পরীক্ষার পূর্বে বিদায় সংবর্ধনাও দিয়েছেন, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা আমার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।