মো. আতিক ফারুকী ::
ধর্মপাশা উপজেলার মধ্যনগরে হঠাৎ করে ডিজেল সংকট দেখা দিয়েছে। সুযোগ বুঝে অসাধু ব্যবসায়ীরা দাম বৃদ্ধি করে মুনাফা লুটে নিচ্ছে। এতে বিপাকে পড়েছেন হাওরে ফসলরক্ষা বাঁধের কাজে খননযন্ত্র ব্যবহারকারী ও স্থানীয় কৃষকেরা। ডিজেল সংকটের কারণে জমিতে পানি সেচ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে কৃষকেরা বেশি দামে ডিজেল ক্রয় করতে বাধ্য হচ্ছেন।
জানা যায়, গত কয়েকদিন আগেও মধ্যনগর বাজারসহ আশপাশের বাজারে প্রতি লিটার ডিজেলের দাম ছিল ৬৫ টাকা থেকে ৬৬ টাকা। কিন্তু হাওরে ফসলরক্ষা বাঁধের কাজে খননযন্ত্র ব্যবহারের কারণে মধ্যনগর ও আশপাশের বাজারে ডিজেলের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এই সুযোগে স্থানীয় অসাধু ব্যবসায়ীরা প্রতি লিটার ডিজেলে ৫ টাকা থেকে ১০টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে। ডিজেলের সরবরাহ নেই এমন অজুহাতে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
বুধবার বিকেলে সরেজমিনে মধ্যনগর বাজারের ডিজেল বিক্রেতা শিবচান কানুর দোকানের সামনে গিয়ে দেখা যায় একটি ডিজেলের ড্রাম খালি হয়ে পড়ে আছে। শিবচান কানু জানান, সরবরাহ না থাকায় তার দোকানে ডিজেল নেই। তিনি অতিরিক্ত দামে কখনও ডিজেল বিক্রি করেননি বলে দাবি করেন।
একই বাজারের জয় স্টোরের সামনেও অর্ধখালি ডিজেলের দুটি ড্রাম পড়ে থাকতে দেখা যায়। অভিযোগ রয়েছে এ দোকান থেকেও বেশি দামে ডিজেল বিক্রি করা হচ্ছে। দোকানের মালিক নুরুজ্জামান জানান, তার দোকানে ডিজেল সংকট রয়েছে। সরবরাহ না থাকায় এ সংকট তৈরি হয়েছে।
এছাড়াও মধ্যনগর থানার বংশীকুন্ডা বাজার, হামিদপুর চৌরাস্তা বাজার, সাতুর বাজার, টুকের বাজার, বলরামপুর ঢংয়ের বাজার, জনতার বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে প্রতি লিটার ৭০ থেকে ৭৫ টাকা দরে ডিজেল বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি তৈরি করা হয়েছে কৃত্রিম সংকট।
মধ্যনগর বাজারের আবীর এন্টারপ্রাইজের পরিচালক শামীম আহমেদ বলেন, সাচনা বাজার তেলের ডিপোতে ডিজেল না থাকায় এ সংকট তৈরি হয়েছে। তবে দাম বৃদ্ধি পায়নি।
উপজেলা কাবিটা বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটির কৃষক প্রতিনিধি মোবারক হোসেন বলেন, অতিরিক্ত দামে ডিজেল বিক্রি করা হচ্ছে বলে স্থানীয় কৃষকেরা আমাকে জানিয়েছেন। বিষয়টি সত্যি হয়ে থাকলে দ্রুত দাম নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। তা না হলে হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ ও চাষাবাদ বিঘিœত হবে।
মধ্যনগর থানার ওসি সেলিম নেওয়াজ বলেন, এ ব্যাপারে কোনো অভিযোগ পাইনি। খোঁজ নিয়ে সত্যতা পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আবু তালেব বলেন, এ ব্যাপারে সরেজমিনে তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।