দেশে একটি শুদ্ধি অভিযান চলছে। এই শুদ্ধি অভিযান নিয়ে বিস্তর তর্কবিতর্কের অবকাশ অবশ্যই আছে। সে বিতর্কে আলোচনা বিস্তৃত করার বাসনা আপাতত নেই। কিন্তু এই অভিযানের একটি আশাব্যঞ্জক লক্ষণ পরিলক্ষিত হচ্ছে এবং যে-লক্ষণটিকে বিদগ্ধজনের কারও কারও কর্তৃক, ইতোমধ্যে বিশেষ করে, দেশের রাজনীতিকে শুদ্ধ ধারায় প্রত্যাবর্তন করানোর একটি মহৎ প্রয়াস হিসেবে বর্ণিত হচ্ছে এবং দেশের আমজনতাও সে ব্যাপারে প্রত্যাশী হয়ে উঠেছেন। কারণ প্রসঙ্গটির বিস্তৃতি দলীয় রাজনীতির শুদ্ধধারার প্রত্যাবর্তনের সমান্তরালে দেশের সামগ্রিক অবস্থাকে পরিশুদ্ধকরণের কর্মসূচিতে পরিবর্তিত হচ্ছে বলে প্রতিপন্ন হচ্ছে। যে-কারণে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, মাদক ইত্যাদির বিরুদ্ধে শূন্যসহনশীলতা প্রদর্শনের প্রত্যয় ঘোষণা করা হয়েছে সরকারের সর্বোচ্চমহল থেকে, এমনকি শেষ পর্যন্ত সাধারণ মানুষের চিন্তায় বিষয়টি ‘প্রশাসন-রাজনীতি থেকে রাজাকার বিদায় করা’ পর্যন্ত ব্যাপৃত হয়ে পড়েছে।
গতকালের দৈনিক সুনামকণ্ঠে একটি উদ্ধৃত সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘প্রশাসন ও রাজনীতি থেকে রাজাকার, দুর্নীতিবাজ, লুটেরা, মস্তান, সন্ত্রাসীদের বিদায় করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সাধারণ সম্পাদক এবং সংসদ সদস্য শিরীন আখতার।’ এই বক্তব্যটি কোনও সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত বক্তব্য নয়, বরং এই বক্তব্যটি দেশের সকল সাধারণ মানুষজনের বক্তব্যের প্রতিধ্বনি মাত্র।
বক্তব্যের আর বিস্তার না ঘটিয়ে কেবল বলি : শুদ্ধি অভিযানকে অবশ্যই প্রতিটি রাজনীতিক দলের ভেতরে কার্যকর করে তোলে প্রশাসনসহ দেশের ভেতরে শুদ্ধি সার্বিক করে তোলতে হবে। অন্যথায় দুর্নীতিনির্ভর মুক্তবাজার অর্থনীতির নেতিবাচকতা থেকে দেশ, সমাজ, রাষ্ট্র, রাজনীতি ও অর্থনীতেকে রক্ষা করা যাবে না। দেশের উন্নয়ন দুয়েকজন মানুষের উন্নয়নের তলে চাপা পড়ে থাকবে এবং দুর্নীতি, সন্ত্রাস, অত্যাচারের যাঁতাকলে সাধারণ মানুষ বরাবরের মতো পিষ্ট হতেই থাকবে এবং জনগণের ক্ষতায়নের বুলি অন্তঃসারশূন্যতায় পর্যবশিত হবে।