সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শহীদ নূর হোসেনকে নিয়ে জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা যে বক্তব্য দিয়েছেন, দলটির নেতারাও এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এটা তার ব্যক্তিগত বক্তব্য বলে দাবি করে এজন্য দুঃখও প্রকাশ করেছেন জাপা নেতারা। পাশাপাশি রাঙ্গাকে নাম-পরিচয়হীন অভিহিত করে তিনি কীভাবে এতদূর এলেন, এমনকি মন্ত্রীও হয়েছিলেন, এসব নিয়ে জাপা নেতারা প্রশ্নও তোলেন। এসময় রাঙ্গার বক্তব্যের দায়িত্ব পার্টি নেবে না বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দেন তারা।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে রাঙ্গার বক্তব্য নিয়ে প্রতিবাদ উঠলে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ ও মুজিবুল হক চুন্নু এ মন্তব্য করেন। এসময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন।
কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন, নুর হোসেনকে নিয়ে রাঙ্গা যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটা ভাইরাল হয়েছে। এটা আমাদের জাতীয় পার্টির বক্তব্য নয়। এটা তার ব্যক্তিগত বক্তব্য হতে পারে। তার এই বক্তব্যে জাতীয় পার্টি লজ্জিত, দুঃখিত। আমরা দুঃখিত। যে যুবক গণতন্ত্রের জন্য জীবন দিতে পারে, তিনি অবশ্যই সাহসী। তাকে কটাক্ষ করে বক্তব্য আমরা সমর্থন করতে পারি না।
তিনি বলেন, একটা কথা আছে, বানরকে লাই দিলে মাথায় ওঠে বসে। এই লাই আমরা দিইনি। লাই দিয়েছে সংসদ। একের পর এক প্রমোশন দেওয়া হয়েছে। কী করে কোনো পরিচয় নেই, নাম-ধাম নেই, তাকে মন্ত্রী বানানো হলো। একের পর এক প্রমোশন দেওয়া হলো। তিনি যুবদল করেছেন। কোনো আন্দোলন করেননি। বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে কটাক্ষ করার সাহস তিনি কোথায় পান। তিনি কাগজের মালা গলায় দিয়ে পরিবহন খাতে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে গাড়ি-বাড়ির মালিক হয়েছেন। তার জন্য আমাদের সংসদে জবাব দিতে হয়। এতে আমরা দুঃখিত, লজ্জিত। তার বক্তব্য আমরা গ্রহণ করি না। ঘৃণাভরে তার বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করছি। কোনো ব্যক্তির বক্তব্য আমার দল দায়িত্ব নেবে না।
তিনি আরও বলেন, যতদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাকবেন, ততদিন এদেশে গণতন্ত্র থাকবে। মানুষ শেখ হাসিনাকে চিরদিন মনে রাখবে। তাকে নিয়ে কটাক্ষ করা হয়েছে, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটাক্ষ করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু না হলে এদেশ স্বাধীন হত না। আওয়ামী লীগ যদি নির্বাচনে আমাদের সমর্থন না দিতো, তাহলে আমরা পাস করতাম কীভাবে। আওয়ামী লীগ না থাকলে উনি পাস করতেন না। কার কত ভোট আছে, এটা আমার জানা আছে।
জাতীয় পার্টির আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, রাঙ্গার এই বক্তব্য আসলে জাতীয় পার্টি দলীয়ভাবে সমর্থন করে না। একান্তই তার ব্যক্তিগত বক্তব্য। আশা করি তিনি সংসদে এসে এ ব্যাপারে কথা বলবেন। নূর হোসেনের ব্যাপারে জাতীয় পার্টির কী দৃষ্টিভঙ্গি সেটা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তার বাড়িতে গিয়ে দেখিয়েছিলেন। তার মা-বাবার কাছে এরশাদ সাহেব দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। অর্থনৈতিকভাবে সাহায্য করেছিলেন। এটাই জাতীয় পার্টির দৃষ্টিভঙ্গি। এর বাইরে কেউ কিছু বললে সেটা তার নিজের বক্তব্য।
এসময় মুজিবুল হক চুন্নু আওয়ামী লীগ নেতারা যে সমালোচনা করেছেন, সে প্রসঙ্গে বলেন, আমাদের দোষ-ত্রুটি আছে, সেটা বলতে চাই না। কিন্তু ৯০ এর পর থেকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা আপনাদের সহযোগিতা করে আসছি। বিগত ১৪ সালের নির্বাচনের আগে থেকে গুঞ্জন উঠেছিল অগণতান্ত্রিক সরকার আসবে। আমরা এটাকে সমর্থন করিনি। আমরা গণতন্ত্রের জন্য আওয়ামী লীগকে সহযোগিতা করেছি। নির্বাচনে সহযোগিতা করেছি। আজ গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা অব্যাহত আছে। এটা মনে রাখলে ভালো হয়। – বাংলা নিউজ